বিলাল (রাঃ)

বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’কে ইমাম আবু নুয়াইম ইস্পাহানী সুফফাহ’র ছাত্রদের (আসহাবে সুফফার) মধ্যে গণনা করেছেন। (১)
সমস্ত মুয়াযযিনদের সর্দার আর আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু’র আযাদকৃত গোলাম ও অন্তরঙ্গ বন্ধু বেলাল হাবশী রাদিয়াল্লাহু আনহু ইসলামের সূচনাতেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নববী দরবারে উপস্থিত হোন, আর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যু পর্যন্ত স্বস্থানে ও ভ্রমণে তার (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাদেম, মুয়াযযিন ও ঘরোয়া মালামালের চাবিরক্ষক বা দারোয়ান ছিলেন। বদর, উহুদসহ সমস্ত যুদ্ধে তিনি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে শরীক ছিলেন। (২) এমনকি বদর যুদ্ধে বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’ই কাফিরদের দলপতি অহংকারী ও গর্বকারী উমাইয়া বিন খালফকে হত্যা করেন। (৩)

বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’র সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য এটি ছিলো যে, তিনিই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খাবারের ব্যবস্থাপনা করতেন। আবদুল্লাহ হাওযানী বলেন, হালব নামক স্থানে বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’র সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “হে বিলাল, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবিকার খরচ কোত্থেকে জোগাড় করেন?” বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু উত্তর দিলেন, “নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কিছুই ছিলো না। তার (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নবুওয়াতপ্রাপ্তির পর থেকে নিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত আমিই তার আহারের বন্দোবস্ত করতাম।” (৪)

বংশ পরিচিতি
তার নাম – বিলাল।
তার উপনাম – আবু আবদুল্লাহ, অথবা আবু আমর, অথবা আবদুল কারীম।
পিতার নামে – রবাহ, মাতার নাম – হামামাহ। (৫)
বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু জন্মগতভাবেই কুচকুচে কালো কৃষ্ণাঙ্গ ছিলেন। (৬) তবে পরবর্তীতে গেরুয়া বর্ণের হয়ে গিয়েছিলেন, যেমনটি তবাকাতে ইবনে সাআদের এক বর্ণনাতে আল মুস্তাদরাকের সূত্রে উল্লেখ আছে। (৭) বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু আর তার মা হামামাহ উভয়েই ইসলাম গ্রহণে ধন্য হয়েছেন। (৮)

ইসলাম গ্রহণ ও পাহাড়সম বিপদ
আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু’র পর গোলামদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবী হলেন বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু। ইসলামের সূচনা যুগে আমর বিন আবাসা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে কিছু প্রশ্ন করেছিলেন। তার মধ্যে একটি প্রশ্ন এটিও ছিলো যে, “আপনার এই দ্বীন অনুসরণ করা ক্ষেত্রে আপনার সাথে আর কে কে আছে?” তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “গোলাম ও আযাদ সব ধরণের লোকজন আছে।” সেই দিনগুলোতেই আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ও বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু তার (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপর ঈমান এনেছিলেন। (৯)

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু’র বর্ণনাঃ সর্বপ্রথম নিজের ইসলাম গ্রহণের স্পষ্ট ঘোষণাদানকারী হলেন সাতজন –
(১) নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,
(২) আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু,
(৩) আম্মার রাদিয়াল্লাহু আনহু,
(৪) তার মা সুমাইয়্যা রাদিয়াল্লাহু আনহা,
(৫) বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু,
(৬) সুহাইব রাদিয়াল্লাহু আনহু,
(৭) মিকদাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু।
এ সকল সাহাবায়ে কিরাম মক্কার কাফিরদের পশুসুলভ আর ধ্বংসাত্মক আচরণ সহ্য করেছেন। কিন্তু নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’কে আল্লাহ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চাচা আবু তালিবের মাধ্যমে হেফাযতে রেখেছেন। এ রকমই আবু বকরকে তার বংশ আর কুরাইশদের সাথে আত্মীয়তার বন্ধনের কারণে সেই অত্যাচারীদের অত্যাচার থেকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। কিন্তু মুশরিকদের বিষাক্ত ছোবলের ধ্বংসাত্মক আচরণ থেকে অবশিষ্ট পাঁচজন বাঁচতে পারেননি, তাদেরকে মক্কার কাফিররা লৌহ বর্ম পরিধান করিয়ে মক্কার দগ্ধকারী ও কাঠ ফাটা রোদে ক্ষুধার্তাবস্থায় দাঁড় করিয়ে উত্ত্যক্ত করতো আর যুলুম-নিপীড়নের লক্ষ্যস্থল বানিয়ে রাখতো।

বিশেষ করে বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’কে এই দ্বীন ইসলামের জন্য অত্যন্ত কষ্ট দেওয়া হয়েছে। মক্কার কাফিররা তাকে দুষ্ট ছেলেদের হাতে ন্যস্ত করে দিতো। তারা তাকে মক্কার অলিতে-গলিতে টেনে হিঁচড়ে বেড়াতো। কিন্তু সেই অবস্থাতেও বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু “আহাদ, আহাদ” (এক আল্লাহ, এক আল্লাহ) বলে যেতে থাকতেন। (১০)

কখনো আবু জাহিল, কখনো দুষ্ট প্রকৃতির বাচ্চারা তাকে সচেতনতা হরণকারী সাজা দেওয়ার জন্য তাদের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে দিতো। এই রক্তক্ষয়ী অবস্থার কারণে তার প্রতি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দয়া-মায়া উপচে পড়তে শুরু করলো। তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু’র সাথে দেখা করলেন আর বললেন – হায়! যদি আমার কাছে এ পরিমাণ সম্পদ থাকতো, তাহলে আমি বিলালকে কিনে নিতাম। এ কথা শুনে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু’র (যিনি সে সময় পর্যন্ত ইসলাম গ্রহণ করেননি) মাধ্যমে বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’কে পাঁচ উকিয়া – দুইশত দিরহাম দিয়ে কিনে আযাদ করে দিলেন। (১১)
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু আর আবু উবাইদাহ ইবনে জাররাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু’র মাঝে ভাতৃত্ব বন্ধন প্রতিষ্ঠা করে দেন। (১২)

বিলালী আযান ও এর প্রভাব
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আর সাহাবায়ে কিরাম হিজরত করে মদিনা মুনাওওয়ারায় এসে পড়লেন। এখানে আল্লাহ’র ইবাদাত করার ক্ষেত্রে কোন ধরণের বাঁধা ছিলো না, প্রকাশ্যভাবে এক উপাস্যের ইবাদাত করা যেতো। যার কারণে সক সাহাবী এক সাথে জামাআতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। তবে এমন কোন পদ্ধতি সামনে আসছিলো না, যার মাধ্যমে সকল সাহাবীদেরকে এক সাথে এক সময়ে একত্রিত করা যেতে পারে। প্রত্যেকেরই বিভিন্ন মতামত ছিলো। আবদুল্লাহ বিন যায়েদ বিন আব্দে রাব্বিহী রাদিয়াল্লাহু আনহু’র এ বিষয়ে খুব ফিকির ছিলো। তিনি ঘরে আসলেন আর রাতে ঘুমিয়ে পড়লেন। সেই ঘুমের ঘোরে স্বপ্নে এক অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি আযানের শব্দগুলো শিখে নেন। ভোর বেলা নববী দরবারে উপস্থিত হয়ে রাতে স্বপ্নে দেখা পুরো বিষয়টি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে শুনালেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই স্বপ্নের সত্যতার স্বীকৃতি দিয়ে বললেন – তুমি বিলালকে আযানের শব্দগুলো শিখাও আর তাকে আযান দিতে বলো। কেননা, বিলালের আওয়াজ তোমাদের আওয়াজের চেয়ে বড়। এ কারণেই বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু ইসলামে সর্বপ্রথম আযান দেওয়ার গৌরব অর্জন করতে পেরেছিলেন। (১৩)

বনু নাজ্জারের এক মহিলা সাহাবীর বর্ণনাঃ আমার আবাসস্থল মসজিদের কাছেই ছিলো, আর সেই আবাসস্থলের ভবনটি উঁচু ছিলো। রাতের শেষভাগে বিলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ভবনের ছাদটিতে বসে পূব আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতেন। যখন সুবহে সাদিকের আভা পূব আকাশ ছেদ করে বের হতো, তখন বিলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) আড়মোড়া দিয়ে এ দুয়াটি পাঠ করতেন – اللهم اني احمدك استعينك على قريش ان يقيموا دينك
এরপর আযান দেওয়া শুরু করে দিতেন। (১৪)

কিছুকাল পর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’কে সুবহে সাদিক উদিত হওয়ার কিছু পূর্বে রাতের শেষ ভাগে আযান দেওয়ার জন্য নিযুক্ত করে লোকদেরকে সম্বোধন করে বললেন – তোমাদের কাউকে যেন বিলালের আযান সাহরী খাওয়া থেকে বিরত না রাখে। বরং তোমরা খাওয়া চালিয়ে যেতে থাকবে আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কর্তৃক ফজরের আযান দেওয়া পর্যন্ত। কেননা, বিলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর আযান ঘুমন্ত ব্যক্তিদেরকে উদাসীনতার নিদ্রা থেকে জাগ্রত আর ইবাদাতে মগ্ন লোকদেরকে নিজ নিজ ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য দেওয়া হতো। যাতে তারা তাড়াতাড়ি সাহরী থেকে অবসর হয়ে যেতে পারে। (১৫)

সাধারণ নামাযে বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’র এটিই আমল ছিলো যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য তিনি অপেক্ষমাণ থাকতেন। যখন তাকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদের দিকে আসতে দেখতেন, তখন তৎক্ষণাৎ তাকবীর ও ইকামাত দিতে শুরু করে দিতেন। (১৬)

সফরেও বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’ই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুয়াযযিন হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। আবু যার গিফারী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ আমরা এক সফরে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ছিলাম। তখন বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু যোহরের আযান দেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করলেন। সে সময় নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “এখন থামো, আবহাওয়া সামান্য ঠাণ্ডা হলে তারপর আযান দিবে।” (১৭)

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাইবার যুদ্ধ থেকে ফেরতকালে রাতের এক অংশে সফর করছিলেন, তখন সাহাবায়ে কিরামের শরীরে তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব এসে পড়লো। সে সময় নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক জায়গায় তাবু গেঁড়ে অবস্থান করতে বললেন, আর বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’কে বললেন, তুমি আজ আমাদের দেখাশুনা করবে আর ফজরের নামাযের জন্য জাগিয়ে দিবে। ঘটনা এমন ঘটলো যে, বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু নিজ বাহনজন্তুর সাথে হেলান দিয়ে বসে পড়লেন, আর এরই মাঝে তিনি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লেন। তখন সূর্য উদিত হলো আর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চেহারা মুবারাকের উপর সূর্যের আলো এসে পড়তে লাগলো, তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিচলিত অবস্থায় জাগ্রত হলেন আর বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’কে তালাশ করতে লাগলেন। বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু নববী দরবারে হাজির হলেন আর ক্ষমা প্রার্থনা করে বললেন, “ইয়া রাসুলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আপনার উপর আমার মা-বাবা উৎসর্গ হোক, যে মহান সত্তা আপনাকে নিদ্রাকোলে ঠেলে দিয়েছেন, সেই মহান সত্তা আমাকেও কুদরতি হাত বুলিয়ে শুইয়ে দিয়েছেন।” নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার বিষয়টিকে ক্ষমা করে ইসলামী সৈন্যদলকে এ জায়গা থেকে চলে যাওয়ার আদেশ দিলেন। তারপর কিছুদূর গিয়ে অবস্থান করলেন আর বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’কে আযান ও ইকামাতের আদেশ দিলেন। (১৮)

মক্কা বিজয়ের দিন বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’ই কাবা শরীফের ছাদে উঠে তাওহীদ ও রিসালাতের আওয়াজ উঁচু করে ঘোষণা করার গৌরব অর্জন করেছিলেন। (১৯)
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়ে যাওয়ার পর থেকে বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু কখনোই কারো নির্দেশে আযান প্রদান করেননি। (২০)

বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু শাম দেশে থাকা অবস্থায় খলীফাতুল মুসলিমীন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু জাবিয়া নামক এলাকায় তাশরীফ আনেন। সেখানে বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’র সাথে সাক্ষাৎ হয়ে গেলো। তখন সেখানকার মুসলমানগণ আমীরুল মুমিনীন উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু’র কাছে আবদার রাখলেন যে, আমাদের দীর্ঘদিনের কামনা ও আশা যে, আমরা বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে একটু আযান শুনবো। তার কাছে আপনি একটু নিবেদন করুন, যাতে তিনি আমাদেরকে একটু আযান শুনান। উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু’র অনুরোধে একদিন তিনি আযান প্রদান করলেন, যার প্রভাব এতোটা হলো যে, সমস্ত লোকজন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বরকতপূর্ণ যুগ ও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্মৃতিচারণ করে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে দিলো। আর এতো পরিমাণ কাঁদলো যে, ইতোপূর্বে শামবাসী এতো কাঁদা কখনোই কাঁদেনি। (২১)

বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু একবার স্বপ্নযোগে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাক্ষাৎ লাভ করলেন। তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এটি কি রকম যুলুম ও রুক্ষতা যে, তুমি আমার কাছে আসছো না? চোখ খোলা মাত্রই তিনি সফরের পাথেয় নিয়ে মদিনা মুনাওওয়ারাতে রওয়ানা হলেন আর সোজা রওজা মুবারাকে উপস্থিত হয়ে গেলেন আর কাঁদতে শুরু করলেন। হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহু ও হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু’কে দেখামাত্রই সিনায় জড়িয়ে ধরলেন আর চুমো খেলেন। তখন হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহু ও হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু উভয়ে বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’কে আযান দেওয়ার অনুরোধ জানালেন। আর এ অনুরোধ ছিলো এমন যে, তা প্রত্যাখ্যান করার কোন সুযোগই ছিলো না। ফলে তিনি উঁচু একটি স্থানে আরোহণ করে আযান দিতে শুরু করলেন। এদিকে মদিনা মুনাওওয়ারাতে নববী যুগের আযান কানে পড়া মাত্রই এক বিশাল হৈ চৈ পড়ে গেলো। ফলে পর্দানশীন নারীরাও কাঁদতে কাঁদতে ঘর থেকে বের হয়ে পড়লো। আর সকল লোকজন এ কথা বলতে লাগলো যে, মনে হয় নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’কে দ্বিতীয়বার এই দুনিয়াতে পাঠানো হয়েছে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তিকালের পর মদিনাবাসীকে এ দিন থেকে বেশী কাঁদতে কেউ কখনোই দেখেনি। (২২)

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দৃষ্টিতে বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজরের নামাযের পর বললেন, “হে বিলাল, তুমি আমাকে সেই আমলটি বলো, যেটি তুমি ইসলাম গ্রহণের পর করেছো। যার ফলস্বরূপ তোমার প্রতিদান পাওয়ার অধিক আশা রয়েছে। কেননা, আমি আজ রাতে জান্নাতে প্রবেশকালীন সময়ে তোমার জুতার আওয়াজ শুনেছি।” বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, “আমি ইসলামে প্রবেশের পর থেকে আজ পর্যন্ত এ আমলটির চেয়ে অধিক কোন আমল করিনি, আর তা হলো – রাত বা দিন যখনই আমি ওযু করতাম তখনই ঐ ওযু দিয়ে আমি আল্লাহ’র তাওফিকে নামায আদায় করতাম।” (২৩)

এক বর্ণনায় এরকম আছে যেঃ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’কে ফজরের সময় বলেছিলেন, “হে বিলাল, কোন আমলের বদৌলতে তুমি আমার চেয়েও আগে জান্নাতে প্রবেশ করেছিলে? কেননা, গত রাতে আমি যখন জান্নাতে প্রবেশ করলাম, তখন প্রথমেই তোমার জুতার আওয়াজ শুনতে পেলাম।” সে সময় বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু তার সেই প্রিয় আমলটির কথা বললেন। (২৪)

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “ইসলাম গ্রহণ করে সবচেয়ে অগ্রগামীতা লাভকারী ব্যক্তি হলেন চারজন –
(১) আমি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – যিনি আরবদের মাঝে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী,
(২) সালমান – যিনি পারস্যবাসীদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী,
(৩) বিলাল – যিনি আবিসিনিয়ার মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী,
(৪) সুহাইব – যিনি রোমদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী।” (২৫)

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন, “বিলাল কতোই না ভালো। সে কিয়ামতের দিন সমস্ত মুয়াযযিনদের সর্দার হবে।” (২৬)
অপর একটি হাদিসে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “সুদানবাসীদের সর্দার লোকমান, নাজাশী, বিলাল ও মিহজা।” (২৭)

আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ও উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু’র দৃষ্টিতে বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু
বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু যেভাবে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু’র আযাদকৃত গোলাম ছিলেন, তেমনিভাবে তার অন্তরঙ্গ আর গভীর বন্ধুও ছিলেন। (২৮)
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই দুনিয়া থেকে পরকালে যাওয়ার পর বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু জিহাদ করার জন্য শাম দেশে যাওয়ার ইচ্ছা করলেন। এদিকে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তার সান্নিধ্য ছাড়তে পছন্দ করতেন না। ফলে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে জিহাদে যেতে বারণ করেন (আর্টিকেল বহির্ভূত নোটঃ তখন জিহাদ ফরজে কিফায়া থাকার কারণে)। তখন বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, “আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’কে বলতে শুনেছি যে, মুমিনের সর্বশ্রেষ্ঠ আমল হলো আল্লাহ’র রাস্তায় জিহাদ করা।” এ কথা শুনে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, “হে বিলাল, আপনি কি চান?” বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু উত্তরে বললেন, “আমি আল্লাহ’র পথে জিহাদ করতে করতে শহীদ হয়ে যেতে চাই, আর এতোটুকুই আমার আশা।” আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, “হে বিলাল, আমি আপনাকে আল্লাহ’র দোহাই দিচ্ছি, আমার ইযযতের কসম, আমার হকের কসম, আমি বৃদ্ধ ও দুর্বল হয়ে গিয়েছি, আর আমার মৃত্যুর সময়ও অতি নিকটবর্তী। দয়া করে পানি আমার কাছেই থেকে যান।” এ কথা শুনে বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু’র কাছেই থেকে গেলেন। (২৯)

কিন্তু হিলয়াতুল আউলিয়া ও ইবনে হিব্বানের বর্ণনাতে আছে যে, বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু’কে এই উত্তর দিয়েছিলেন – “যদি আপনি আমাকে কাফিরদের থেকে কিনে আমাকে আযাদ করে দিয়ে থাকেন, তাহলে আমাকে ছেড়ে দিন। আমার তো নিজ বিষয়ে অধিকার আছে। আর যদি আমাকে কাফিরদের থেকে কিনে নিজ কর্মচারী বানানোর ইচ্ছা থেকে থাকে তাহলে আমাকে আটকে রাখুন। এ ক্ষেত্রে তো আমার নিজের ব্যাপারে নিজের কোনই অধিকার নেই।” এ কথা শুনে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়লেন আর বললেন, “ঠিক আছে, আপনি যান, আপনার অধিকার আছে। আমি আপনাকে আল্লাহ’র সন্তুষ্টির জন্য আযাদ করেছিলাম।” এ কথা শোনামাত্রই বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু শামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যান, আর সেখানেই তার মৃত্যু হয়ে যায়। (৩০)

উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’কে নিজের নেতা মনে করে বলতেন, আমাদের এই সর্দার বিলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) তো আবু বকরের (রাদিয়াল্লাহু আনহু) নেকীসমূহের অন্যতম একটি নেকী। একবার বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু জানতে পারলেন যে, লোকেরা তাকে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু’র উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিচ্ছে। তখন তিনি বলতে লাগলেন, এ সকল লোকেরা আবু বকরের উপর আমাকে কিভাবে শ্রেষ্ঠত্ব দিচ্ছে? অথচ আমি তার নেকীসমূহের একটি নেকী মাত্র। (৩১) তা এভাবে যে, আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’কে কাফিরদের কাছ থেকে কিনে আযাদ করেছিলেন।

বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’র বর্ণিত হাদিস ও তার শিষ্যবৃন্দ
বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ইসলামের সূচনালগ্ন থেকেই তার বাড়িতে ও বাইরের সফরে লেগে থাকতেন। আর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মহান বাণীসমূহ দিয়ে উপকৃত হতে থাকতেন। তা সত্ত্বেও হাদিস বর্ণনা করার ক্ষেত্রে এ পরিমাণ সাবধানতা অবলম্বন করেছেন যে, যার সীমা আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু’কে পর্যন্ত অতিক্রম করেছে। কেননা, তার সহমর্মী বন্ধুর সাবধানতার কারণে বর্ণিত হাদিসের সংখ্যা ছিলো মাত্র একশত বিয়াল্লিশটি। আর বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’র বর্ণনাকৃত হাদিসের সংখ্যা সর্বমোট চুয়াল্লিশটি। বুখারী ও মুসলিমে আছে শুধু চারটি। শুধু বুখারীতে দুটি আর শুধু মুসলিমে একটি হাদিস আছে। অবশিষ্ট হাদিসগুলো হাদিসের অন্যান্য কিতাবে আছে। (৩২)

বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে শিক্ষা-দীক্ষা প্রাপ্তদের সংখ্যা হলো পনেরো জন, যাদের মধ্যে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু, উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু, উসামা বিন যায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহু আর বারা ইবনে আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু’র মতো বড় বড় সাহাবায়ে কিরামগণও রয়েছেন। (৩৩)

মৃত্যুবরণ
বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু নিজ মৃত্যুর একদিন পূর্বে বলেছিলেন, “আমি আগামীকাল নিজের পরম প্রিয় বন্ধু মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আর তার (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবায়ে কিরামের সাক্ষাতে যাবো।” এ কথা শুনে তার সহধর্মিণী বলে উঠলেন, “হায়রে আমার আফসোস আর আক্ষেপ আর ধ্বংস!” তখন বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, “বাহ, কি আনন্দ! এটি কতোই না খুশীর খবর যে, কাল আমার প্রিয়ের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে আমার সাক্ষাৎ হবে।”

অধিকাংশ মুহাদ্দিসীনের মতামত এটিই যে, বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’র মৃত্যু উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু’র শাসনামলে বিশ হিজরিতে দামেশকে হয়েছে। আর সে সময় তার বয়স ষাট বছর অতিক্রম করেছিলো। তার কবরস্থানের ব্যাপারে অনেক মতানৈক্য রয়েছে। হয়তো বাবুস সাগীর বা বাবে কাসান বা দামেশকে বা হলবে তাকে কবরস্থ করা হয়েছে। ইবনে মানদার বর্ণনা, হলবেই তাকে কবরস্থ করা হয়েছে। অথচ ওয়াকেদীর বর্ণনাতে আছে যে, তাকে বাবুস সাগীরে কবরস্থ করা হয়েছে। (৩৪)

দৈহিক গঠন
শাম দেশের ইমামুল মুহাদ্দিসীন মাকহুল শামী বলেন, যে ব্যক্তি বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু’র সাথে সাক্ষাৎ করেছিলো, তিনি আমাকে তার দৈহিক গঠনের বৃত্তান্ত এভাবে দিয়েছেন যে, বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু অত্যন্ত বেশী গৌর বর্ণের ছিলেন। হালকা গড়ন, লম্বা দেহবিশিষ্ট ছিলেন। আর সামান্য একটু সামনে ঝুঁকা ছিলেন। তার চুল অনেক ছিলো। ছিলো হালকা দাঁড়ি, আর তা ছিলো কালো, তবে সাদার দিকে ধাবমান। (৩৫)

উৎসঃ আসহাবুস সুফফাদের জীবন ও খেদমত – মাওলানা আশরাফ আলী আশেকে ইলাহী কাসেমী


টিকাঃ
(১) আল হিলয়াহ – ১/৩৪৯(২) আল ইস্তিআব – ১/১৪৫, হিলয়াতুল আউলিয়া – ১/১৪৭(৩) বুখারী – ২/৫৬৬(৪) আবু দাউদ – ২/৪৩৩(৫) কিতাবুস সিকাত : ১৪৪(৬) আল মুস্তাদরাক – ৩/২৮৩(৭) তবাকাত – ৭/৩৮৬, আল মুস্তাদরাক – ৩/২৮৩(৮) আল মুস্তাদরাক – ৩/২৮৩(৯) মুসলিম – ১/২৭৬(১০) হিলয়াতুল আউলিয়া – ১/১৪৮, আল ইসাবাহ – ১৬৯(১১) তবাকাতে ইবনে সাআদ – ৩/৩৮৫, আল ইস্তিআব – ১/১৪৮(১২) আল ইসাবাহ – ১/১৬৯(১৩) আবু দাউদ – ১/৭২, তবাকাতে ইবনে সাআদ – ২/১২২(১৪) আবু দাউদ – ১/৭৭(১৫) বুখারী – ১/৮৭(১৬) আবু দাউদ – ১/৭৯(১৭) তিরমিযি – ১/৪১, বুখারী – ১/৭৭(১৮) আবু দাউদ – ১/৬২-৬৩(১৯) সিয়ারু আলামিন নুবালা – ১/৩৫৬(২০) তবাকাতে ইবনে সাআদ – ৩/১৬৯(২১) সিয়ারু আলামিন নুবালা – ১/৩৫৭(২২) সিয়ারু আলামিন নুবালা – ১/৩৫৮(২৩) বুখারী – ১/১৫৪, মুসলিম – ২/২৯২(২৪) তিরমিযি – ২/৯০২, মুসনাদে আহমাদ – ৫/৩৫৪(২৫) আল মুস্তাদরাক – ৩/২৮৫, আল হিলয়াহ – ১/১৮৫(২৬) আল মুস্তাদরাক – ৩/২৮৫, আল হিলয়াহ – ১/১৪৭(২৭) আল মুস্তাদরাক – ৩/২৮৪, সিয়ারু আলামিন নুবালা – ১/২৫৫(২৮) তবাকাতে ইবনে সাআদ – ৭/৩৮৬(২৯) তবাকাতে ইবনে সাআদ – ৭/৩৮৬, সিয়ারু আলামিন নুবালা – ১/৩৫০(৩০) আল ইসাবাহ – ১/১৫০-১৫১, কিতাবুস সিকাত ১৪৪ পৃষ্ঠা(৩১) সিয়ারু আলামিন নুবালা – ১/৩৫৯(৩২) সিয়ারু আলামিন নুবালা – ১/৩৬০(৩৩) আল ইস্তিআব – ১/১৪৭(৩৪) তবাকাতে ইবনে সাআদ – ৭/৩৮৬, আল ইসাবাহ – ১/২৬৯, সিয়ারু আলামিন নুবালা – ১/৩৫৯(৩৫) তবাকাতে ইবনে সাআদ – ৭/৩৮৬, আল ইস্তিআব – ১/২৪৭, সিয়ারু আলামিন নুবালা – ৩/২৮৩