মাওদুদ বিন তুনিতকিন।
ইতিহাসের এক বিস্মৃত বীর। ক্রুসেডের ইতিহাস আলোচনা করতে গেলে যার নাম বলতেই হয়।
মাওদুদ বিন তুনিতকিনের আবির্ভাব ঘোর অমানিষার কালে। মুসলিম বিশ্বে তখন হিংস্র থাবা বসিয়েছে ক্রুসেডাররা।
১৫ জুলাই ১০৯৯ খ্রিস্টাব্দে ক্রুসেডারদের হাতে বাইতুল মাকদিসের পতন ঘটে। নির্মমভাবে হত্যা করা হয় শহরের বাসিন্দাদের। মাসজিদুল আকসাতে বসানো হয় মদের আসর। উমর মসজিদের বারান্দা ডুবে যায় নিহত মুসলমানদের রক্তে। শহরের প্রাচীর থেকে ছুড়ে ফেলে হত্যা করা হয় মুসলিম শিশুদের। গডফ্রে জেরুজালেমের রাজা হল। এরপর ত্রিপোলি ও টায়ার আক্রমন করে দখল করা হলো। সেখানেও চললো একই নির্মমতা। ফিলিস্তিন ও সিরিয়ার এক বিশাল অংশ ক্রুসেডারদের দখলে চলে গেল। ঐতিহাসিক স্ট্যানলি লেনপুল লিখেছেন, ক্রুসেডাররা এসব অঞ্চলে এমনভাবে প্রবেশ করছিল যেভাবে পুরনো কাঠে খুব সহজেই পেরেক ঢুকানো হয়। সিরিয়া ও ফিলিস্তিনে চারটি খ্রিস্টান রাজ্য গড়ে উঠে। কুদস, এন্টিয়ক, ত্রিপোলি ও ইয়াফা। খ্রিস্টানদের সাহস এতটাই বেড়ে যায় যে কির্ক এর শাসনকর্তা রেজিনাল্ড মক্কা আক্রমনের হুমকি দেয়। সেসময়ের খ্রিস্টানদের শক্তিমত্তা সম্পর্কে ইবনুল আসির লিখেছেন, তাদের সেনাসংখ্যা ছিল অসংখ্য। তাদের অত্যচারের মাত্রা প্রতিদিনই বাড়ছিল। তাদের কোনো শাস্তির ভয় ছিল না। তারা হয়ে উঠে বেপরোয়া। এমন কোনো অপরাধ ছিল না যা তারা করছিল না।
আগেই বলা হয়েছে, খ্রিস্টানদের বাধা দেয়ার কেউ ছিল না। তারা ছিল নির্ভয়। মুসলিম জনপদগুলো তাদের হাতে লুন্ঠিত হচ্ছিল, নারীরা হারাচ্ছিল সম্ভ্রম। বাহ্যত মনে হচ্ছিল মুসলমানদের কোনো আশাই নেই। কেউই এগিয়ে আসবে না উম্মাহর এই দুসময়ে। খ্রিস্টানরা একের পর এক শহর জয় করছে, মুসলমানদের প্রথম কিবলা তাদের হাতে। জেরুজালেম পতনের পর মিসরের ফাতেমী উযির আল আফদাল ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেন, যার বেশকটিতেই তিনি পরাজিত হন।
ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে প্রথম যিনি জিহাদের পতাকা উত্তোলন করেন তিনি মোসুলের আতাবেক মাওদুদ বিন তুনিতকিন। তিনি শারাফুদ্দৌলা নামেই অধিক প্রসিদ্ধ। তার পূর্বে ক্রুসেডারদের সাথে অন্য মুসলিম শাসকদের যে লড়াই হচ্ছিল তা ছিল অনেকাংশেই নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার লড়াই। এমনকি তারা নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে কখনো কখনো ক্রুসেডারদের বশ্যতাও স্বীকার করে নিচ্ছিল। তারা ক্রুসেডারদের কর দিচ্ছিল। ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই ছিল নিজের পিঠ বাচানোর লড়াই। যখনই তারা ক্রুসেডারদের থেকে নিজেদের নিরাপদ মনে করতো, তখুনি তারা নীরব হয়ে যেত। বাইতুল মাকদিস মুক্ত করার কোনো চিন্তা তাদের আলোড়িত করতো না। নির্যাতিত মুসলিমদের আর্তনাদ তাদের ভাবাতো না।
মাওদুদ বিন তুনিতকিন ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে তরবারী কোষমুক্ত করেন কেবলই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর সওয়াব অর্জন ব্যতিত তার আর কোনো চাহিদা ছিল না।
মাওদুদ বিন তুনিতকিন ছিলেন মসুলের শাসক। প্রজাবান্ধব শাসক হওয়ার কারনে জনগনের মাঝে তিনি ছিলেন জনপ্রিয়। মুসলিম বিশ্বে ক্রুসেডারদের হামলার ঘটনা মাওদুদকে পীড়া দিচ্ছিল। তিনি ভাবছিলেন, নির্যাতিত মুসলমানদের কথা। তিনি সিদ্ধান্ত নেন ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবেন।
১১১০ খ্রিস্টাব্দে মাওদুদ বিন তুনিতকিন ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেন। ৫০৩ হিজরীর শাওয়াল মাসে (এপ্রিল ১১১০ খ্রিস্টাব্দ) তিনি এডেসা অবরোধ করেন। সে সময় এডেসা ছিল ক্রুসেডারদের একটি মজবুত ঘাটি। মাওদুদের এই অভিযানের ফলে ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নতুন দিগন্তের সূচনা হয়। এই অভিযানে মাওদুদের সাথে ছিলেন ৩০ বছর বয়সী এক যুবক, মাওদুদ যার সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তায় মুগ্ধ হয়ে তাকে নিজের সাথে রেখেছিলেন। এই যুবকের নাম ইমাদুদ্দিন, পরবর্তী বছরগুলোতে বিশ্ব যাকে চিনেছিল ইমাদুদ্দিন যিংকি নামে।
মাওদুদ টানা দুই মাস শহরটি অবরোধ করে রাখেন। থেমে থেমে সংঘর্ষ হতে থাকে কিন্তু শহরের মজবুত কেল্লা দখল করা সম্ভব হয়নি। ইতিমধ্যে বৈরুত থেকে প্রথম বল্ডউইন একটি শক্তিশালী বাহিনী নিয়ে মাওদুদের মোকাবেলা করার জন্য এগিয়ে আসে। তার সাথে যোগ দেয় তরাবলিসের আমির। বাধ্য হয়ে মাওদুদ অবরোধ তুলে নেন। মোসুলে ফিরে তিনি আবার যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকেন। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুজাহিদরা এসে মাওদুদের বাহিনীতে যোগ দেয়।
এ সময় যুবকদের মধ্যে জাগরণের সূচনা হয়। মাওদুদ বিন তুনিতকিনের আবেগ তাদের মধ্যেও সঞ্চার হয়। যুবকরা দেখছিল, মাওদুদ একাকী জিহাদের ময়দানে নেমে পড়েছেন। তার পাশে শক্তিশালী কেউ নেই। কোথায় বাগদাদের খলিফা? উম্মাহর এই ক্রান্তিকালে তিনি কী ভূমিকা রাখছেন?
এসব প্রশ্নের উত্তর যুবকদের ভাবাচ্ছিল। আলেপ্পোর যুবকরা উঠে দাঁড়ায়। তারা বাগদাদ অভিমুখে রওনা হয়। তারা খলিফা মুস্তাযহির বিল্লাহর সাথে দেখা করে তাকে আহবান জানায় শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন করে ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে জিহাদে প্রেরণ করতে। হায়, যুবকরা খলিফাকে বলছে ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে বাহিনী প্রেরণ করতে ! অথচ খলিফার দায়িত্ব ছিল নির্যাতিত মুসলিমদের সাহায্যে এগিয়ে যাওয়া।
খলিফা যুবকদের কথা শুনেন। তিনি তাদেরকে আশ্বস্ত করে বলেন, তিনি অবশ্যই মুনাজাতে দোয়া করবেন, যেন আল্লাহ মুসলমানদের থেকে এ বিপদ দূর করে দেন !
হায়, জিহাদ ত্যাগ করে নির্জনে বসে মাজলুমের জন্য দোয়া করার এ সিলসিলা নতুন নয়।
যুবকরা যা বুঝার বুঝে নিলো। তারা এবার শহরবাসীর দিকে মনোযোগ দিল। তারা শহরবাসীকে জানালো বাইতুল মাকদিসের দুর্দশার কথা, জানালো ক্রুসেডাররা কী নির্মম নির্যাতন চালাচ্ছে মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে। তারা বাগদাদের বাসিন্দাদের জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে থাকে। যুবকদের আলোচনার ফলে বাগদাদের বাসিন্দাদের মনে জিহাদের স্পৃহা জেগে উঠে। তাদের ঘুমন্ত চেতনা নাড়িয়ে দেয়ার জন্য একটা ঝাঁকুনি দরকার ছিল, আর যুবকরা সফলভাবেই সেই ঝাঁকুনি দিতে পেরেছিল।
বাগদাদের লোকেরাও আলেপ্পোর যুবকদের সাথে সুর মিলিয়ে খলিফার কাছে সেনাবাহিনী গঠনের আহবান জানায়। এমনকি এক শুক্রবারে জুমার নামাজের আগে তারা জামে মসজিদে একত্রিত হয়। এসময় তারা বারবার ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে বাহিনী গঠনের আবেদন জানায়। ভীড় বাড়তে থাকে, সাথে হট্টগোল। জনতা ছিল ক্রোধান্বিত। খলিফা সংবাদ শুনে জনতাকে শান্ত করার জন্য ওয়াদা করলেন শীঘ্রই সেনাবাহিনী গঠন করা হবে। জনতা ঘরে ফিরে গেল।
এক সপ্তাহ পার হলেও খলিফার ওয়াদা বাস্তবায়নের কোনো আলামত দেখা গেল না। পরের শুক্রবার জনতা এগিয়ে গেল খলিফার প্রাসাদের দিকে। এবার তারা আগের চেয়েও ক্রোধান্বিত। প্রাসাদের প্রহরীরা তাদেরকে প্রাসাদে প্রবেশ করতে বাধা দিল। জনতা প্রাসাদের জানালা ভেংগে ফেলে। এরপর তারা শাহী মসজিদে খলিফা যে আসনে বসতেন তাও ভেংগে ফেলে। এই উদ্ভুত পরিস্থিতির কারনে মসজিদে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছিল। স্পষ্টতই বুঝা যাচ্ছিল, ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী গঠন ব্যতিত জনতাকে শান্ত করা যাবে না। যুবকরা তাদের লক্ষ্য বাস্তবায়নে অটল ছিল। শেষে খলিফা সেনাবাহিনী গঠনের ঘোষণা দিলেন। মাসউদকে সেনাপতি নিযুক্ত করা হল।
সুবহানাল্লাহ, এ ছিল অল্প কজন যুবকের পরিশ্রমের ফসল। এই যুবকরা বিখ্যাত কেউ ছিল না, আজ আমরা তাদের নামও জানি না, ইবনুল আসিরও তাদের নাম বলতে পারেননি, শুধু লিখেছেন ‘যুবকরা’। এই যুবকরা যমিনে অখ্যাত, কিন্তু আল্লাহর দরবারে তারা নিজ নিজ ইখলাস ও নিয়ত অনুসারে অবশ্যই প্রতিদান পাবেন। আল্লাহ এই যুবকদের অন্তরে জিহাদের তামান্না ঢেলে দিয়েছিলেন, পরে যুবকরা তা সঞ্চার করেছিল বাগদাদবাসীর মনে।
কেন উম্মাহর যুবকরা জাগ্রত হয়? কেন আলেপ্পোর যুবকরা উঠে দাড়িয়েছিল? কেন দামেশক , হামা, বা হিমসের যুবকরা মাথা তুলে দাঁড়ায়নি? এই প্রশ্নের জবাব ইবনুল আসিরের লেখাতেই পাওয়া যায়। ইবনুল আসির স্পষ্ট লিখেছেন, এই যুবকদের সাথে আলেমদের একটি বড় জামাত ছিল। আলেমরা এই যুবকদের সাথে যোগাযোগ রাখছিলেন।
হ্যা, আলেমরাই এই উম্মাহর নেতৃত্ব দিবেন। তারা উম্মাহকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিবেন। তারা যখন উম্মাহকে সঠিক নির্দেশনা দিতে ভুলে যান, তখন উম্মাহ পথ হারাতে বাধ্য।
এটি ছিল ৫০৪ হিজরীর ঘটনা।
৫০৫ হিজরীতে (১১১১ খ্রিস্টাব্দ) মাওদুদ তার বাহিনী নিয়ে ফোরাত নদী অতিক্রম করে সিরিয়ার তাল বাশির অবরোধ করেন। তিনি এ শহর চল্লিশ দিন অবরোধ করে রাখেন। কোনো সাফল্য না আসায় তিনি অবরোধ তুলে হিমস এবং হামা শহরের মাঝামাঝি মাআররাতুন নুমান শহরে আক্রমন করেন। শহরের ফরাসীরা পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে গোপনে দামেশকের আমির তুগতিকিনের সাথে সন্ধি করে ফেলে। দামেশকের আমির রাজি হলেন মাওদুদের বিরুদ্ধে ফরাসিদের সাহায্য করতে। আমির ভয় পাচ্ছিলেন, মাওদুদ শক্তিশালী হয়ে গেলে তিনি দামেশকের ক্ষমতা কেড়ে নিবেন। মাওদুদ যখন দেখলেন দামেশকের আমির এগিয়ে আসছে ফরাসিদের সাহায্যে তখন পিছু হটা ছাড়া তার আর কোনো উপায় ছিল না।
মাওদুদ বিন তুনিতকিন তার বাহিনীসহ একা হয়ে গেলেন। তিনি নিজের রাজ্য উত্তর ইরাক থেকে বহুদূরে অবস্থান করছিলেন। আশপাশে ক্রুসেডারদের এলাকা, এর মধ্যে দামেশকের আমিরও চলে গেছে তার বিপক্ষে। মাওদুদ ফিরে গেলেন, কিন্তু মনে মনে প্রতিজ্ঞা করছিলেন শীঘ্রই তিনি ফিরে আসবেন।
৫০৬ হিজরীর মহররম মাসে মাওদুদ বিন তুনিতকিন আবার এডেসা অবরোধ করেন। কিন্তু এবার তাল বাশির থেকে জোসেলিনের বাহিনী এগিয়ে আসে এডেসার সাহায্যে। মাওদুদের এই অভিযানও সফল হয়নি।
৫০৭ হিজরীতে (১১১৩ খ্রিস্টাব্দ) মাওদুদ জর্দানের সানবারা এলাকায় ক্রুসেডারদের ঘাটিতে হামলা চালান। এই যুদ্ধে প্রায় এক হাজার ক্রুসেডার নিহত হয়। মাওদুদ বিন তুনিতকিন ১৬ দিন শহরটি অবরোধ করে রাখেন কিন্তু ইতিমধ্যে ইউরোপ থেকে ক্রুসেডারদের ১৬ হাজার সৈন্য এসে পৌছে। মাওদুদ বিন তুনিতকিন আবারো অসম যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লেন। তাকে তার সেনাবাহিনীর নিরাপত্তার কথা ভাবতে হচ্ছিল। অবরোধ তুলে ফিরে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না।
তিনি দামেশকে ফিরে এলেন নতুন করে জিহাদের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য। একদিন দামেশকের জামে মসজিদে নামাজ শেষে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলেন এসময় একজন বাতেনী গুপ্তঘাতক তাকে হত্যা করে। ইমাম যাহাবীর ভাষ্যমতে মাওদুদ সেদিন রোজা রেখেছিলেন। সময়টি ছিল সেপ্টেম্বর ১১১৩ খ্রিস্টাব্দ।
মাওদুদ বিন তুনিতকিন ছিলেন একাকী এক সমরনায়ক। কখনো তিনি মনোবল হারাননি। আল্লাহর উপর ভরসা করে একের পর এক জিহাদে অংশগ্রহণ করেছেন। কেউ তার পাশে ছিল না, তবু তিনি হতাশ হননি। মূলত বান্দার কাজই হচ্ছে চেষ্টা করে যাওয়া।
মাওদুদ বিন তুনিতকিন বারবার এডেসায় হামলা করেছিলেন। কিন্তু আল্লাহ এডেসা জয়ের জন্য মনোনিত করেছিলেন মাওদুদের সংগী সেই যুবককে, ইমাদুদ্দিন যার নাম। প্রায় ত্রিশ বছর পরে, ১১৪৪ খ্রিস্টাব্দে ইমাদুদ্দিন যিংকি এডেসা জয় করেন।
বাহ্যিক চোখে মাওদুদ বিন তুনিতকিন খুব বেশি যুদ্ধে জয়লাভ করেননি, তার সাফল্যের খাতাটাও তাই শূন্য মনে হতে পারে। কিন্তু ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে জিহাদের যে ধারা তিনি শুরু করেছিলেন তা ধরেই পরে এগিয়ে গেছেন ইমাদুদ্দিন যিংকি, নুরুদ্দিন যিংকি ও সালাহুদ্দিন আইয়ুবীর মত মহানায়করা। সহীহ মুসলিমের একটি হাদিসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ইসলামে ভালো কোন রীতি-রেওয়াজ চালু করবে, সে তার নিজের এবং তার (মৃত্যুর) পর সেই রীতিনির্ভর আমলকারী প্রত্যেকের আমলের (সমপরিমান) সওয়াব পাবে; আমলকারীদের সওয়াব বিন্দু পরিমাণও কম করা ছাড়াই
মাওদুদ ক্রুসেডারদের জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে উঠছিলেন, কিন্তু গুপ্তঘাতকের ছুরী তার প্রাণ কেড়ে নেয়। তার মৃত্যুতে মুসলমানরা মুষড়ে পড়ে। তাদের আশার প্রদীপ নিভে যায়। আর এই সময়ে দৃশ্যপটে আবির্ভুত হলেন সুলতান ইমাদুদ্দিন যিংকি। পরবর্তী বছরগুলোতে যিনি একাই হয়ে উঠেছিলেন ক্রুসেডারদের ত্রাস।
সূত্র–
১। আত তারিখুল বাহির ফিদ দাওলাতিল আতাবিকিয়্যাহ– ইবনুল আসির।
২। আল কামিল ফিত তারিখ– ইবনুল আসির।
৩। কিসসাতুল হুরুবিস সলিবিয়্যা– ড. রাগেব সিরজানি
৪। তারিখুল ইসলাম ওয়া ওফায়াতুল মাশাহিরি ওয়াল আলাম– হাফেজ শামসুদ্দিন যাহাবী।