মুসলমানের দিন-রাত – হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী (রহঃ)

১- প্রয়োজন মোতাবিক ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করবে। কিতাবাদী অধ্যয়ন করে অথবা উলামায়ে কেরামের নিকট জিজ্ঞাসা করে। [হক্কানী উলামায়ে কেরাম রচিত ধর্মীয় পুস্তক পাঠ করে এবং উলামা ও হক্কানী পীর মাশায়েখের সাথে সম্পর্ক রেখে]

২- সকল ধরণের গোনাহ থেকে বিরত থাকবে।

৩- কোন গোনাহ হয়ে গেলে সাথে সাথে তাওবা করে নিবে।

৪- অন্যের হক নষ্ট করবে না। কাউকে হাতে বা কথায় কষ্ট দিবে না। কারো দোষ চর্চা করবে না।

৫- ধন সম্পদের মোহাব্বত এবং জাগতিক মোহ থেকে মুক্ত থাকবে। ভোজন বিলাস ও পোশাক পরিচ্ছেদে আভিজাত্যের ফিকিরে থাকবে না।

৬- কেউ যদি দোষ শুধরিয়ে দেয় তাহলে নিঃসংকোচে তা মেনে নিবে এবং তাওবা করবে।

৭- একান্ত প্রয়োজন ছাড়া সফরে যাবে না। সফরে অপ্রয়োজনীয় অনেক কথা হয়ে যায়। অনেক নেক কাজ ছুটে যায়। জিকির-আযকার ও অজিফা বাদ পড়ে যায়। সময়মত কাজ হয় না।

৮- বেশি হাসবে না। বেশি কথা বলবে না। বিশেষ করে গায়রে মাহরামের সাথে অপ্রয়োজনীয় কথা বলবে না।

৯- কারো সাথে ঝগড়া ফাসাদ করবে না।

১০- সর্ববস্থায় শরীয়তের অনুসরণ হবে।

১১- ইবাদতে অবহেলা করবে না।

১২- একাকী থাকার চেষ্টা করবে।

১৩- কারো সাথে দেখা সাক্ষাতের প্রয়োজন হলে নম্র আচরণ করবে এবং নিজের বড়ত্ব প্রকাশ করবে না।

১৪- আমীর, সরকার ও ক্ষমতাধর লোকদের সাথে চলা-ফেরা কম করবে।

১৫- বদদ্বীন লোকদের সাথে চলাফেলা অনেক কম করবে।

১৬- অন্যের দোষ তালাশ করবে না। অন্য সম্পর্কে খারাপ ধারণা করবে না। নিজের দোষ তালাশ করে তা সংশোধনের যত্নবান ও আন্তরিক থাকবে।

১৭- সময়মত গুরুত্বসহ সুন্দরভাবে নামায আদায় করার চেষ্টা করবে।

১৮- অন্তরে অথবা মুখে সর্বদা আল্লাহর স্মরণ করবে। একটি মুহুর্তও গাফলতির মধ্যে কাটাবে না।

১৯- আল্লাহর যিকির করতে যদি ভাল লাগে, অন্তর খুশি হয় তাহলে শুকরিয়া আদায় করবে।

২০- নরম ভাষায় কথা বলবে।

২১- সর্ব কাজের জন্য সময় নির্ধারণ করবে এবং সে সময়ই সে কাজ পুরণ করবে।

২২- কখনো দুঃখ কষ্ট পেরেশানী আসলে মনে করবে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে। অস্থির হবে না। ধারণা করবে করবে যে এর বিনিময়ে কোন কল্যাণ রয়েছে।

২৩- দুনিয়ার হিসাব নিকাশে সারাক্ষণ লেগে থাকবে না। বরং আল্লাহর কথা খেয়ালে রাখা চেষ্টা করবে।

২৪- যথা সম্ভব অন্যের উপকার করবে। দুনিয়ার ক্ষেত্রে হোক বা আখেরাতের ক্ষেত্রে হোক।

২৫- এত কম পরিমাণে খাবে না যে, শরীর দুর্বল হয়ে যায়। বা অসুস্থ হয়ে যায়। আবার এত বেশি পরিমাণেও খাবে না যে, ইবাদতে অলসতা চলে আসে।

২৬- আল্লাহ তাআলা ব্যতিত কারো থেকে কিছু পাওয়ার আশা করবে না। অমুক জায়গা থেকে আমার এই ফায়দা অর্জিত হবে এমন খেয়াল করবে না।

২৭- আল্লাহকে পাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে যাও।

২৮- নেয়ামত কম হোক বা বেশি এতে আল্লাহর শুকর আদায় করবে। অস্বচ্ছলতা ও দারিদ্রতার দ্বারা সংকীর্ণ হবে না।

২৯- নিজ অধীনস্ত লোকদের দোষ অন্যায়কে ক্ষমা করে দেওয়ার মানসিকতা পোষণ করবে।

৩০- কারো দোষ জেনে ফেললে তা গোপন করবে। তবে কেউ যদি অন্য কাউকে ক্ষতি করতে চায় আর তুমি তা জানতে পারো তাহলে তাকে বলে দিবে।

৩১- মেহমান, মুসাফির, গরীব দুঃখী, উলামায়ে কেরাম এবং দরবেশদের খেদমত করবে।

৩২- সৎ লোকের সংস্পর্শে যাবে।

৩৩- সর্বদা আল্লাহকে ভয় করবে।

৩৪- মৃত্যুর কথা স্মরণে রাখবে।

৩৫- যে কোন সময় বসে নিজের দৈনিক কৃতকর্মের চিন্তা করবে। ভাল কিছু হয়ে থাকলে তার জন্য শুকর আর মন্দের জন্য তওবা করবে।

৩৬- কখনো মিথ্যা কথা বলবে না।

৩৭- শরীয়ত বিরোধী মজলিসে যাবে না।

৩৮- লজ্জা-শরম এবং ভদ্রতা বজায় চলবে।

৩৯- নিজের ভাল কাজের উপর গর্ব করবে না।

৪০- আল্লাহ তাআলা নিকট দুআ করবে যেন, তিনি সঠিক পথে অবিচল রাখেন।


অনুবাদ- মুফতী হাফীজুদ্দীন

{বেহেস্তি জেওর-৭ম খন্ড}