হযরত ইউসুফ (আঃ) – ০৫

নবীগণ নিষ্পাপ মানুষ ছিলেন :

ইউসুফের প্রার্থনায় ‘আমি তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব’ কথার মধ্যে এ সত্য ফুটে উঠেছে যে, নবীগণ মানুষ ছিলেন এবং মনুষ্যসুলভ স্বাভাবিক প্রবণতা তাদের মধ্যেও ছিল। তবে আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ ও ব্যবস্থাধীনে তাঁরা যাবতীয় কবীরা গোনাহ হ’তে মুক্ত থাকেন এবং নিষ্পাপ থাকেন। বেগানা নারী ও পুরুষের মাঝে চৌম্বিক আকর্ষণ এটা আল্লাহ সৃষ্ট প্রবণতা, যা অপরিহার্য। ফেরেশতাদের মধ্যে আল্লাহ এই প্রবণতা ও ক্ষমতা সৃষ্টি করেননি। তাই তারা এসব থেকে স্বাভাবিকভাবেই মুক্ত।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হাদীছে কুদসীতে বলেন, আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় ফেরেশতামন্ডলীকে বলেন, আমার বান্দা যখন কোন সৎকর্মের আকাংখা করে, তখন তার ইচ্ছার কারণে তার আমলনামায় একটা নেকী লিখে দাও। যদি সে সৎকাজটি সম্পন্ন করে, তবে দশটি নেকী লিপিবদ্ধ কর। পক্ষান্তরে যদি কোন পাপকাজের ইচ্ছা করে, অতঃপর আল্লাহর ভয়ে তা পরিত্যাগ করে, তখন পাপের পরিবর্তে তার আমলনামায় একটি নেকী লিখে দাও। আর যদি পাপকাজটি সে করেই ফেলে, তবে একটির বদলে একটি গোনাহ লিপিবদ্ধ কর’।[19]

অতএব ইউসুফ-এর অন্তরে অনিচ্ছাকৃত অপরাধ প্রবণতা সৃষ্টির আশংকাটি কেবল ধারণার পর্যায়ে ছিল। সেটা ছগীরা বা কবীরা কোনরূপ গোনাহের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। নিঃসন্দেহে ইউসুফ ছিলেন নির্দোষ ও নিষ্পাপ এবং পূত চরিত্রের যুবক।

ইউসুফের সাক্ষী কে ছিলেন?

উপরের আলোচনায় ২৬নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, وَشَهِدَ شَاهِدٌ مِّنْ أَهْلِهَا ‘ঐ মহিলার পরিবারের জনৈক ব্যক্তি সাক্ষ্য দিল’- কিন্তু কে সেই ব্যক্তি, সে বিষয়ে কুরআনে কিছু বলা হয়নি। তবে ইবনু জারীর, আহমাদ, ত্বাবারাণী, হাকেম প্রমুখ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে একটি হাদীছ বর্ণনা করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে যে, চারটি শিশু দোলনায় থাকতে কথা বলেছিল। তন্মধ্যে ‘ইউসুফের সাক্ষী’ (شاهد يوسف) হিসাবে একটি শিশুর কথা এসেছে। শায়খ আলবানী বলেন, হাদীছটি যঈফ।[20] কুরতুবী বলেন, উক্ত ব্যক্তি ছিলেন, গৃহস্বামী ‘আযীযে মিছরের’ সাথী তাঁর একান্ত পরামর্শদাতা দূরদর্শী জ্ঞানী ব্যক্তি। যিনি যুলায়খার চাচাতো ভাই ছিলেন। তিনি ইউসুফের জামা সম্মুখ থেকে বা পিছন থেকে ছেঁড়া কি-না প্রমাণ হিসাবে পেশ করার কথা বলেন (ইউসুফ ১২/২৬-২৮)। যদি দোলনার শিশু সাক্ষ্য দিত, তাহ’লে সেটা অলৌকিক ঘটনা হ’ত এবং সেটাই যথেষ্ট হ’ত। অন্য কোন প্রমাণের দরকার হতো না’।[21]

ইউসুফ জেলে গেলেন :

শহরের বিশিষ্ট মহিলাদের সমাবেশে যুলায়খা নির্লজ্জভাবে বলেছিল, ইউসুফ হয় আমার ইচ্ছা পূরণ করবে, নয় জেলে যাবে’। অন্য মহিলারাও যুলায়খাকে সমর্থন করেছিল। এতে বুঝা যায় যে, সে যুগে নারী স্বাধীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতা চরমে উঠেছিল। তাদের চক্রান্তের কাছে পুরুষেরা অসহায় ছিল। নইলে স্ত্রীর দোষ প্রমাণিত হওয়ার পরেও মন্ত্রী তার স্ত্রীকে শাস্তি দেওয়ার সাহস না করে নির্দোষ ইউসুফকে জেলে পাঠালেন কেন? অবশ্য লোকজনের মুখ বন্ধ করার জন্য ও নিজের ঘর রক্ষার জন্যও এটা হ’তে পারে।

ইউসুফ যখন বুঝলেন যে, এই মহিলাদের চক্রান্ত থেকে উদ্ধার পাওয়ার কোন উপায় নেই, তখন তিনি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করে বললেন, আল্লাহ এরা আমাকে যে কাজে আহবান করছে, তার চেয়ে কারাগারই আমার জন্য শ্রেয়:। আল্লাহ তার দো‘আ কবুল করলেন এবং তাদের চক্রান্তকে হটিয়ে দিলেন (ইউসুফ ১২/২৩-২৪)। এতে বুঝা যায় যে, চক্রান্তটা একপক্ষীয় ছিল এবং তাতে ইউসুফের লেশমাত্র সম্পৃক্ততা ছিল না। দ্বিতীয়তঃ ইউসুফ যদি জেলখানাকে ‘অধিকতর পসন্দনীয়’ না বলতেন এবং শুধুমাত্র আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতেন, তাহ’লে হয়তবা আল্লাহ তার জন্য নিরাপত্তার অন্য কোন ব্যবস্থা করতেন।

যাইহোক আযীযে মিছরের গৃহে বাস করে চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষা করা অসম্ভব বিবেচনা করে ইউসুফ যুলায়খার হুমকি মতে জেলখানাকেই অধিকতর শ্রেয়: বলেন। ফলে কারাগারই তার জন্য নির্ধারিত হয়ে যায়।

আল্লাহ তা‘আলা মহিলাদের চক্রান্তজাল থেকে ইউসুফকে বাঁচানোর জন্য কৌশল করলেন। ‘আযীযে মিছর’ ও তার সভাসদগণের মধ্যে ইউসুফের সততা ও সচ্চরিত্রতা সম্পর্কে নিশ্চিত ধারণা জন্মেছিল। তথাপি লোকজনের কানা-ঘুষা বন্ধ করার জন্য এবং সর্বোপরি নিজের ঘর রক্ষা করার জন্য ইউসুফকে কিছুদিনের জন্য কারাগারে আবদ্ধ রাখাকেই তারা সমীচীন মনে করলেন এবং সেমতে ইউসুফ জেলে প্রেরিত হলেন। যেমন আল্লাহ বলেন, ثُمَّ بَدَا لَهُم مِّن بَعْدِ مَا رَأَوُا الآيَاتِ لَيَسْجُنُنَّهُ حَتَّى حِيْنٍ- ‘অতঃপর এসব (সততার) নিদর্শন দেখার পর তারা (আযীয়ে মিছর ও তার সাথীরা) তাকে (ইউসুফকে) কিছুদিন কারাগারে রাখা সমীচীন মনে করল’ (ইউসুফ ১২/৩৫)

কারাগারের জীবন :

বালাখানা থেকে জেলখানায় নিক্ষিপ্ত হওয়ার পর এক করুণ অভিজ্ঞতা শুরু হ’ল ইউসুফের জীবনে। মনোকষ্ট ও দৈহিক কষ্ট, সাথে সাথে স্নেহান্ধ ফুফু ও সন্তানহারা পাগলপরা বৃদ্ধ পিতাকে কেন‘আনে ফেলে আসার মানসিক কষ্ট সব মিলিয়ে ইউসুফের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। কেন‘আনে ভাইয়েরা শত্রু, মিসরে যুলায়খা শত্রু। নিরাপদ আশ্রয় কোথাও নেই। অতএব জেলখানাকেই আপাতত: জীবনসাথী করে নিলেন এবং নিজেকে আল্লাহর আশ্রয়ে সমর্পণ করে কয়েদী সাথীদের মধ্যে দ্বীনের দাওয়াতে মনোনিবেশ করলেন। ইতিপূর্বেই বলা হয়েছে যে, ইউসুফকে আল্লাহ স্বপ্ন ব্যাখ্যা দানের বিশেষ জ্ঞান দান করেছিলেন (ইউসুফ ১২/৬)। দ্বীনের দাওয়াতের ক্ষেত্রে এ বিষয়টিও তাঁর জন্য সহায়ক প্রমাণিত হয়।

জেলখানার সাথীদের নিকটে ইউসুফের দাওয়াত :

ইউসুফ কারাগারে পৌঁছলে সাথে আরও দু’জন অভিযুক্ত যুবক কারাগারে প্রবেশ করে। তাদের একজন বাদশাহকে মদ্য পান করাতো এবং অপরজন বাদশাহর বাবুর্চি ছিল। ইবনু কাছীর তাফসীরবিদগণের বরাত দিয়ে লেখেন যে, তারা উভয়েই বাদশাহর খাদ্যে বিষ মিশানোর দায়ে অভিযুক্ত হয়ে জেলে আসে। তখনও মামলার তদন্ত চলছিল এবং চূড়ান্ত রায় বাকী ছিল। তারা জেলে এসে ইউসুফের সততা, বিশ্বস্ততা, ইবাদতগুযারী ও স্বপ্ন ব্যাখ্যা দানের ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে পারে। তখন তারা তাঁর নৈকট্য লাভে সচেষ্ট হয় এবং তাঁর ঘনিষ্ট বন্ধুতে পরিণত হয়।

বন্ধুত্বের এই সুযোগকে ইউসুফ তাওহীদের দাওয়াতে কাজে লাগান। তাতে প্রতীতি জন্মে যে, সম্ভবতঃ কারাগারেই ই্উসুফকে ‘নবুঅত’ দান করা হয়। ইউসুফের কারা সঙ্গীদ্বয় এবং তাদের নিকটে প্রদত্ত দাওয়াতের বিবরণ আল্লাহ দিয়েছেন নিম্নোক্তভাবে:

وَدَخَلَ مَعَهُ السِّجْنَ فَتَيَانَ قَالَ أَحَدُهُمَا إِنِّي أَرَانِي أَعْصِرُ خَمْراً وَقَالَ الآخَرُ إِنِّي أَرَانِي أَحْمِلُ فَوْقَ رَأْسِيْ خُبْزاً تَأْكُلُ الطَّيْرُ مِنْهُ نَبِّئْنَا بِتَأْوْيلِهِ إِنَّا نَرَاكَ مِنَ الْمُحْسِنِيْنَ- قَالَ لاَ يَأْتِيكُمَا طَعَامٌ تُرْزَقَانِهِ إِلاَّ نَبَّأْتُكُمَا بِتَأْوِيلِهِ قَبْلَ أَن يَأْتِيكُمَا ذَلِكُمَا مِمَّا عَلَّمَنِي رَبِّي إِنِّي تَرَكْتُ مِلَّةَ قَوْمٍ لاَّ يُؤْمِنُونَ بِاللهِ وَهُم بِالآخِرَةِ هُمْ كَافِرُونَ- وَاتَّبَعْتُ مِلَّةَ آبَآئِـي إِبْرَاهِيمَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ مَا كَانَ لَنَا أَن نُّشْرِكَ بِاللهِ مِن شَيْءٍ ذَلِكَ مِن فَضْلِ اللهِ عَلَيْنَا وَعَلَى النَّاسِ وَلَـكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لاَ يَشْكُرُونَ- (يوسف ৩৬-৩৮)-

‘ইউসুফের সাথে কারাগারে দু’জন যুবক প্রবেশ করল। তাদের একজন বলল, আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি মদ নিঙড়াচ্ছি। অপরজন বলল, আমি দেখলাম যে, আমি মাথায় করে রুটি বহন করছি। আর তা থেকে পাখি খেয়ে নিচ্ছে। আমাদেরকে এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলে দিন। কেননা আমরা আপনাকে সৎকর্মশীলগণের অন্তর্ভুক্ত দেখতে পাচ্ছি’ (৩৬)। ‘ইউসুফ বলল, তোমাদেরকে প্রত্যহ যে খাদ্য দান করা হয়, তা তোমাদের কাছে আসার আগেই আমি তার ব্যাখ্যা বলে দিতে পারি। এ জ্ঞান আমার পালনকর্তা আমাকে দান করেছেন। আমি ঐসব লোকদের ধর্ম ত্যাগ করেছি, যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস পোষণ করে না এবং আখেরাতকে অস্বীকার করে’(৩৭)। ‘আমি আমার পিতৃপুরুষ ইবরাহীম, ইসহাক্ব ও ইয়াকূবের ধর্ম অনুসরণ করি। আমাদের জন্য শোভা পায় না যে, কোন বস্ত্তকে আল্লাহর অংশীদার করি। এটা আমাদের প্রতি এবং অন্য সব লোকদের প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। কিন্তু অধিকাংশ লোক কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না’ (ইউসুফ ১২/৩৬-৩৮)

অতঃপর তিনি সাথীদের প্রতি তাওহীদের দাওয়াত দিয়ে বলেন,

يَا صَاحِبَيِ السِّجْنِ أَأَرْبَابٌ مُّتَفَرِّقُوْنَ خَيْرٌ أَمِ اللهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ- مَا تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِهِ إِلاَّ أَسْمَاءٌ سَمَّيْتُمُوْهَا أَنتُمْ وَآبَآؤُكُمْ مَّا أَنزَلَ الله ُبِهَا مِنْ سُلْطَانٍ، إِنِ الْحُكْمُ إِلاَّ ِللهِ أَمَرَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ ذَلِكَ الدِّيْنُ الْقَيِّمُ وَلَـكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لاَ يَعْلَمُوْنَ- (يوسف ৩৯-৪০)-

‘হে কারাগারের সাথীদ্বয়! পৃথক পৃথক অনেক উপাস্য ভাল, না পরাক্রমশালী এক আল্লাহ’? ‘তোমরা আল্লাহ্কে ছেড়ে নিছক কতগুলো নামের পূজা করে থাক। যেগুলো তোমরা এবং তোমাদের বাপ-দাদারা সাব্যস্ত করে নিয়েছ। এদের পক্ষে আল্লাহ কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি। আল্লাহ ব্যতীত কারু বিধান দেবার ক্ষমতা নেই। তিনি আদেশ দিয়েছেন যে, তাঁকে ব্যতীত তোমরা অন্য কারু ইবাদত করো না। এটাই সরল পথ। কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না’ (ইউসুফ ১২/৩৯-৪০)। এভাবে তাওহীদের দাওয়াত দেওয়ার পর তিনি স্বীয় কারা সাথীদ্বয়ের প্রশ্নের জওয়াব দিতে শুরু করলেন।-

يَا صَاحِبَيِ السِّجْنِ أَمَّا أَحَدُكُمَا فَيَسْقِي رَبَّهُ خَمْراً وَأَمَّا الآخَرُ فَيُصْلَبُ فَتَأْكُلُ الطَّيْرُ مِن رَّأْسِهِ قُضِيَ الأَمْرُ الَّذِي فِيهِ تَسْتَفْتِيَانِ- وَقَالَ لِلَّذِي ظَنَّ أَنَّهُ نَاجٍ مِّنْهُمَا اذْكُرْنِي عِندَ رَبِّكَ فَأَنسَاهُ الشَّيْطَانُ ذِكْرَ رَبِّهِ فَلَبِثَ فِي السِّجْنِ بِضْعَ سِنِينَ- (يوسف ৪১-৪২)-

‘হে কারাগারের সাথীদ্বয়! তোমাদের একজন তার মনিবকে মদ্যপান করাবে এবং দ্বিতীয়জন, তাকে শূলে চড়ানো হবে। অতঃপর তার মস্তক থেকে পাখি (ঘিলু) খেয়ে নিবে। তোমরা যে বিষয়ে জানতে আগ্রহী, তার সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে’। ‘অতঃপর যে ব্যক্তি সম্পর্কে (স্বপ্নের ব্যাখ্যা অনুযায়ী) ধারণা ছিল যে, সে মুক্তি পাবে, তাকে ইউসুফ বলে দিল যে, তুমি তোমার মনিবের কাছে (অর্থাৎ বাদশাহর কাছে) আমার বিষয়ে আলোচনা করবে (যাতে আমাকে মুক্তি দেয়)। কিন্তু শয়তান তাকে তার মনিবের কাছে বলার বিষয়টি ভুলিয়ে দেয়। ফলে তাকে কয়েক বছর কারাগারে থাকতে হ’ল’ (ইউসুফ ১২/৪১-৪২)


[19]. বুখারী হা/৬১২৬ ‘রিক্বাক্ব’ অধ্যায় ৩১ অনুচ্ছেদ; মুসলিম হা/১৩১ ‘ঈমান’ অধ্যায় ৬১ অনুচ্ছেদ; মুসলিম, মিশকাত হা/৫৮৬৩ ‘মি‘রাজ’ অনুচ্ছেদ।
[20]. যঈফুল জামে‘ হা/৪৭৬২, ৪৭৭৫।
[21]. তাফসীর কুরতুবী, ইউসুফ ২৬-২৮।