আর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বাধীন ব্যক্তি, গোলাম, ধনী ও দরিদ্র সকলের দা‘ওয়াত গ্রহণ করতেন(৩৪); আর তিনি মদীনার প্রান্তে গিয়ে রোগীর সেবা করতেন(৩৫); তিনি ওযর পেশকারী ব্যক্তির ওযর গ্রহণ করতেন; আর তিনি জনগণকে নিয়ে সালাত আদায় করা অবস্থায় যখন শিশুর কান্না শুনতেন, তখন তিনি তার মায়ের ফিতনায় পড়ার আশঙ্কায় সালাত দ্রুত শেষ করতেন(৩৬)।
আর আবূ কাতাদা রা. বর্ণিত হাদিসের মধ্যে আছে:
« كَانَ يُصَلِّى وَهُوَ حَامِلٌ أُمَامَةَ بِنْتَ زَيْنَبَ بِنْتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلأَبِى الْعَاصِ بْنِ الرَّبِيعِ , فَإِذَا قَامَ حَمَلَهَا وَإِذَا سَجَدَ وَضَعَهَا» . (رواه مسلم ) .
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কন্যা যয়নাবের কন্যা উমামাকে (আবূল ‘আস ইবন রাবী‘র ঔরসজাত) স্বীয় কাঁধে উঠিয়ে সালাত আদায় করতেন। যখন তিনি দাঁড়াতেন, তখন তাকে উঠিয়ে নিতেন; আর যখন তিনি সিজদা করতেন, তখন তাকে নামিয়ে রাখতেন।”(৩৭)
আবূ বুরায়দা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন:
« كان رسول الله صلى الله عليه و سلم يخطبنا إذ جاء الحسن و الحسين عليهما السلام عليهما قميصان أحمران يمشيان ويعثران , فنزل رسول الله صلى الله عليه و سلم من المنبر فحملهما ووضعهما بين يديه , ثم قال : صدق الله ﴿ أَنَّمَآ أَمۡوَٰلُكُمۡ وَأَوۡلَٰدُكُمۡ فِتۡنَةٞ ﴾ [الانفال: ٢٨] فنظرت إلى هذين الصبيين يميشيان ويعثران فلم أصبر حتى قطعت حديثي ورفعتهما » . (رواه الترمذي ) .
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভাষণ দিচ্ছিলেন এমন সময় হাসান ও হুসাইন রা. আসলেন; তাঁদের গায়ে ছিল লাল জামা; তাঁরা হাঁটছিলেন আবার পড়ে যাচ্ছিলেন; অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বর থেকে নেমে এলেন এবং তাঁদের দু’জনকে উঠিয়ে নিয়ে সামনে বসালেন; তারপর বললেন: আল্লাহ তা‘আলা সত্যই বলেছেন: ﴿ أَنَّمَآ أَمۡوَٰلُكُمۡ وَأَوۡلَٰدُكُمۡ فِتۡنَةٞ ﴾ [তোমাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি তো তোমাদের জন্য ফিতনা (পরীক্ষা) স্বরূপ। – সূরা আল-আনফাল: ২৮]; এই শিশু দু’টি হেঁটে আসছিল আর পড়ে যাচ্ছিল দেখে আমি আর স্থির থাকতে পারলাম না, এমনকি কথা বন্ধ করে দিলাম এবং এদেরকে উঠিয়ে নিলাম।”(৩৮)
হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন: আমি আমার পিতাকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথীদের মধ্যে তাঁর আচার-ব্যবহারের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলাম, জবাবে তিনি বললেন:
« كان رسول الله صلى الله عليه و سلم دائم البشر , سهل الخلق , لين الجانب , ليس بفظ و لا غليظ و لا صخاب , و لا فحاش , و لا عياب , و لا مشاح , يتغافل عما لا يشتهي , و لا يويس منه و لا يجيب فيه , قد ترك نفسه من ثلاث : المراء والإكثار ومما لا يعنيه , و ترك الناس من ثلاث : كان لا يذم أحدا و لا يعيره , و لا يطلب عورته , و لا يتكلم إلا بما رجا ثوابه , و إذا تكلم أطرق جلساؤه كأنما على رؤوسهم الطير , فإذا سكت تكلموا , و لا يتنازعوا عنده الحديث , و من تكلم عنده أنصتوا له حتى يفرغ , حديثهم حديث أولهم , يضحك مما يضحكون منه , و يتعجب مما يتعجبون منه , و يصبر للغريب على الجفوة في منطقه و مسألته حتى إذا كان أصحابه ليستجلبونهم , و يقول : إذا رأيتم طالب الحاجة يطلبها فارفدوه , و لا يقبل الثناء من مكافئ , و لا يقطع على أحد حديثه حتى يجوز , فيقطعه بنهي أو قيام » . ( رواه الترمذي ) .
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সদাহাসিমুখ ও বিনম্র স্বভাবের অধিকারী; তিনি রূঢ়ভাষী বা কঠিন হৃদয়ের অধিকারী ছিলেন না; তিনি উচ্চস্বরে কথা বলতেন না, অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করতেন না, অপরের দোষ খুঁজে বেড়াতেন না এবং বখীল ছিলেন না। যা চাইতেন না তা থেকে নির্লিপ্ত থাকতেন; কোনো আশাকারীকে নিরাশ করতেন না, তেমনি কাউকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতিও দিতেন না। তিনটি বিষয় থেকে তিনি দূরে থাকতেন: প্রদর্শনেচ্ছা, বেশী কথা ও অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলা। আর তিনটি কাজ থেকে তিনি মানুষকে মুক্ত রাখতেন: তিনি কাউকে নিন্দা করতেন না, কাউকে অপবাদ দিতেন না এবং কারও দোষ-ত্রুটি অনুসন্ধান করতেন না। আর যে কথায় সাওয়াব হয়, এমন কথা ছাড়া অন্য কোন কথা বলতেন না। তিনি যখন কথা বলতেন, তখন উপস্থিত শ্রোতাদের মনোযোগ এমনভাবে আকর্ষণ করতেন যে, তাদের মাথায় যেন পাখি বসে আছে। যখন তিনি কথা বলা শেষ করে নিরব হতেন, তখন অন্যরা কথা বলত এবং তাঁর নিকট তারা কেউ বাদানুবাদ করত না। আর তাঁর নিকট কেউ কথা বলা শুরু করলে তার কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্যদেরকে চুপ থাকতে বলতেন। কোনো কথায় তারা হাসলে তিনিও হাসতেন এবং তারা বিস্ময় প্রকাশ করলে তিনিও বিস্ময় প্রকাশ করতেন। অপরিচিত লোকের রূঢ় আচরণ কিংবা কঠোর উক্তি তিনি ধৈর্যের সাথে সহ্য করতেন, এমনকি সাহাবীগণকে এমন লোকদের (অপরিচিত লোকদেরকে) নিয়ে আসতে বলতেন। আরও বলতেন: যখন তোমরা কোনো প্রয়োজন দেখা দেওয়া লোক দেখবে তখন তা সমাধা করতে তার সাহায্য করবে। শুধু ভালোর বিনিময়ে প্রশংসা ব্যতীত অন্য কোনো প্রকার প্রশংসা তিনি গ্রহণ করতেন না। কেউ কথা বলতে থাকলে তাকে থামিয়ে দিয়ে তিনি নিজে কথা বলা আরম্ভ করতেন না; অবশ্য কেউ সীমা লঙ্ঘন করলে তাকে থামিয়ে দিতেন অথবা মজলিস থেকে উঠে যেতেন (যাতে বক্তা নিজেই চুপ হয়ে যায়)।”(৩৯)
আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাদাসিদে ও অনাড়াম্বর জীবনযাপনে চরম ধৈর্যশীল মানুষ ছিলেন; তাঁর বালিশ ছিল যার অভ্যন্তরে ছিল খেজুরের ছোবড়া। আনাস ইবন মালেক রা. কর্তৃক বর্ণিত হাদিসের মধ্যে আছে, তিনি বলেন:
«دخلت على رسول الله صلى الله عليه و سلم وهو على سرير مضطجع مرمل بشريط وتحت رأسه وسادة من آدم حشوها ليف , فدخل عليه نفر من أصحابه ودخل عمر , فانحرف رسول الله صلى الله عليه و سلم انحرافة , فلم ير عمر بين جنبه وبين الشريط ثوبا , وقد أثر الشريط بجنب رسول الله صلى الله عليه و سلم , فبكى عمر , فقال له النبي صلى الله عليه و سلم : ما يبكيك يا عمر ؟ قال : والله الا أن أكون أعلم انك أكرم على الله عز و جل من كسرى وقيصر , وهما يعبثان في الدنيا فيما يعبثان فيه , وأنت يا رسول الله بالمكان الذي أرى ! فقال النبي صلى الله عليه و سلم : أما ترضى ان تكون لهم الدنيا ولنا الآخرة ؟ قال عمر : بلى , قال : فإنه كذاك » . ( رواه أحمد ) .
“আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট গিয়ে হাযির হলাম এমতাবস্থায় যে, তিনি শুয়ে আছেন এমন এক খাটে, যা খেজুরের রশি দ্বারা তৈরি করা এবং তাঁর মাথার নীচে ছিল তাম্রবর্ণের বালিশ, যা খেজুর পাতার দ্বারা ভর্তি; অতঃপর তাঁর নিকট হাযির হলে এক দল সাহাবী এবং সাথে ওমর রা. উপস্থিত হলেন; অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার মোড় নিলেন, তাতে ওমর রা. তাঁর পার্শ্বদেশ ও খেজুরের রশির মাঝখানে (বিছানো) কোন কাপড় দেখতে পেলেন না, আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পার্শ্বদেশে খেজুরের রশির চিহ্ন লেগে ছিল; তা দেখে ওমর রা. কেঁদে পেললেন; অতঃপর তাঁকে লক্ষ্য করে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: হে ওমর! তুমি কাঁদছ কেন? জবাবে ওমর রা. বললেন: আল্লাহর কসম! আমি জানি যে, আপনি আল্লাহ তা‘আলার নিকট কিসরা ও কায়সার থেকে অনেক বেশি সম্মানিত ও প্রিয়; অথচ তারা দুনিয়ার মধ্যে আমোদ-প্রমোদ করে যাচ্ছে; আর হে আল্লাহর রাসূল! আপনার অবস্থান তো আমি দেখতেই পাচ্ছি! তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তুমি কি পছন্দ কর না যে, তাদের জন্য (সমৃদ্ধ) হউক দুনিয়া, আর আমাদের জন্য (সমৃদ্ধ) হউক আখিরাত? জবাবে ওমর রা. বললেন: হ্যাঁ, অবশ্যই; তিনি বললেন: সুতরাং (প্রকৃত) বিষয়টি অনুরূপই।”(৪০)
এই হল নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের চরিত্রের উজ্জ্বল কিছু মণি-মুক্তা; সুতরাং আপনারা তাকে আপনাদের জন্য অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় মশাল বা পাঞ্জেরী হিসেবে গ্রহণ করুন, তার প্রতি আস্থা রাখুন, তাকে গ্রহণ করুন, তার উপর পথ চলুন এবং সঠিক পথের অনুসারী হউন; আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে উত্তম চরিত্র দান করেছেন এবং আমাদেরকে তাঁর অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন; আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
﴿ فََٔامِنُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِ ٱلنَّبِيِّ ٱلۡأُمِّيِّ ٱلَّذِي يُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَكَلِمَٰتِهِۦ وَٱتَّبِعُوهُ لَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ ١٥٨ ﴾ [الاعراف: ١٥٨]
“কাজেই তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি ও তাঁর রাসূল উম্মী নবীর প্রতি, যিনি আল্লাহ ও তাঁর বাণীসমূহে ঈমান রাখেন। আর তোমরা তার অনুসরণ কর, যাতে তোমরা হিদায়াতপ্রাপ্ত হও।” – [সূরা আল-আ‘রাফ: ১৫৮]।
আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে এবং আপনাদেরকে এই নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মহব্বত করার সুযোগ দান করুন এবং আমাদেরকে আজীবন তাঁর সুন্নাহ ও হিদায়েতের অনুসরণ করার তাওফীক দান করুন। *
টিকাঃ
(৩৪) আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
« رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَرْكَبُ الْحِمَارَ الْعُرْيَ ، وَيُجِيبُ دَعْوَةَ الْمَمْلُوكِ، وَيَنَامُ عَلَى الأَرْضِ ، وَيَجْلِسُ عَلَى الأَرْضِ ، وَيَأْكُلُ عَلَى الأَرْضِ ، وَيَقُولُ : لَوْ دُعِيتُ إِلَى كُرَاعٍ جِئْتُ ، وَلَوْ أُهْدِيَ إِلَيَّ ذِرَاعٌ لَقَبِلْتُ » . ( رواه البغوي ) .
“আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গদীবিহীন গাধার উপর আরোহন করতে দেখেছি; দেখেছি ক্রীতদাসের আহ্বানে সাড়া দিতে; আরও দেখেছি মাটিতে ঘুমাতে, মাটির উপর বসতে এবং মাটিতে বসে খাওয়া-দাওয়া করতে; আর তিনি বলতেন: যদি আমাকে গরু-ছাগলের খুর আহারের জন্য দাওয়াত দেয়া হয়, তাহলেও আমি আসব; আর যদি (গরু-ছাগলের) একটি বাহু আমার নিকট উপহার (হাদিয়া) হিসেবে পাঠানো হয়, তাহলে আমি তা গ্রহণ করব।” – [বাগবী, শরহুস সুন্নাহ ( شرح السنة ): ফাদায়েল / নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নম্রতা (تواضعه صلى الله عليه وسلم ), হাদিস নং- ৩৬৭৪, ১৩ / ২৪২.]।
(৩৫) আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
« كان رسول الله صلى الله عليه و سلم يعود المريض , ويشهد الجنازة , ويركب الحمار , ويجيب دعوة العبد » . ( رواه الترمذي ) .
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোগীর সেবা করতেন, জানাযার নামাযে শরীক হতেন, গাধায় আরোহন করতেন এবং গোলামের দাওয়াত গ্রহণ করতেন।” – [তিরমিযী, আস-সুনান: জানায়েয / ৩২, হাদিস নং- ১০১৭, ৩ / ৩২৮; আর তিনি বলেন: এই হাদিসটি আনাস রা. থেকে মুসলিম— এই সনদে ব্যতীত অন্য কোন সনদে বর্ণিত হয়েছে বলে আমরা জানি না; আর কানা মুসলিম, সে হল মুসলিম ইবন কাইসান, যার ব্যাপারে কথা রয়েছে]।
(৩৬) আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
« ما صليت وراء إمام قط أخف صلاة , ولا أتم من النبي صلى الله عليه و سلم وإن كان ليسمع بكاء الصبي فيخفف مخافة أن تفتن أمه » . ( رواه البخاري ) .
“আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে সংক্ষিপ্ত এবং পূর্ণাঙ্গ সালাত আর কোনো ইমামের পিছনে কখনও পড়ি নি; আর তা এ জন্য যে, তিনি শিশুর কান্না শুনতে পেতেন এবং তার মায়ের ফিতনায় পড়ার আশঙ্কায় সংক্ষেপ করতেন।” – [বুখারী, আস-সহীহ: আযান / ৬৫, ১ / ১৭৩]।
(৩৭) মুসলিম, আস-সহীহ: মাসাজিদ / ৯, হাদিস নং- ৫৪৩, ১ / ৩৮৫
(৩৮) তিরমিযী, আস-সুনান: মানাকিব / ৩১, হাদিস নং- ৩৭৭৪, ৫ / ৬৫৮; আর তিনি বলেছেন: এই হাদিসটি হাসান, গরীব।
(৩৯) তিরমিযী, আস-সুনান: শামাইলে মুহাম্মদ, পরিচ্ছেদ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের চরিত্র মাধুর্যের বিবরণ, হাদিস নং- ৩২৪, পৃ. ১৯৮ – ২০০; বাগবী, শরহুস সুন্নাহ: ফাদায়েল / পরিচ্ছেদ: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমগ্রীক গুণাবলী ( باب جامع صفاته صلى الله عليه و سلم), হাদিস নং- ৩৭০৪, ১৩ / ৩৭০ – ৩৭৫, ইমাম তিরমিযীর সনদ অনুযায়ী; বায়হাকী, আদ-দালায়েল ( الدلائل ): পৃ. ২৮৫ – ২৮৯; এই হাদিসটি একটি দীর্ঘ হাদিসের অংশবিশেষ, হিন্দ ইবন আবি হালা রা. হাসান রা. কে জিজ্ঞাসা করেন, আর তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের গুণ ও চরিত্রের বর্ণনাকারী, এই হাদিসটি দুর্বল, কেননা তার সনদে সুফিয়ান ইবন ওকী‘ নামে একজন দুর্বল বর্ণনাকারী রয়েছে, অনুরূপভাবে তাতে জামী’ ইবন ‘উমায়ের নামে একজন দুর্বল বর্ণনাকারী আছে, আর তাতে বনী তামীম গোত্রের একজন অপরিচিত ব্যক্তি রয়েছে; তবে মতন তথা মূল বক্তব্যের সমর্থনে সহীহ বর্ণনা রয়েছে।
(৪০) ইমাম আহমদ, মুসনাদ: ৩ / ১৩৯ – ১৪০
গ্রন্থপঞ্জি
১. ‘দালায়েলুন নবুয়াত ওয়া মা‘রেফাতু আহওয়ালি সাহেবিশ্ শরী‘য়াত’ ( دلائل النبوة و معرفة أحوال صاحب الشريعة), আহমদ ইবন হুসাইন আল-বায়হাকী; ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন: আবদুল মু‘তী কাল‘আজী, বৈরুত: দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়া, ১৪০৫ হি.
২. ‘আল-জামে‘উস সহীহ: সুনানুত তিরমিযী’ ( الجامع الصحيح : سنن الترمذي ), মুহাম্মদ ইবন ঈসা ইবন সূরা আত-তিরমিযী, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন: আহমদ শাকের ও অন্যান্যগণ, তৃতীয় সংস্করণ, কায়রো: মুস্তফা আল-বাবী আল-হালবী এবং তার সন্তানগণ, ১৩৯৮ হি.
৩. সুনানুন নাসায়ী বিশরহিল হাফেজ জালাল উদ্দিন আস-সূয়ুতী ওয়া হাশিয়াতুল ইমাম আস-সিন্দী (سنن النسائي بشرح جلال الدين السيوطي و حاشية الإمام السندي ); পরিমার্জন, নম্বর বিন্যাস ও সূচীপত্র প্রণয়ন: আবদুল ফাত্তাহ আবূ গুদ্দা, দ্বিতীয় সংস্করণ, হালব: মাকতাবাতুল মাতবু‘আতিল ইসলামিয়া, ১৪০৯ হি.
৪. শরহুস সুন্নাহ ( شرح السنة ), হুসাইন ইবন মাস‘উদ আল-ফারা আল-বাগবী, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন: যুহাইর শাবীশ ও শু‘য়াইব আল-আরনাউত, বৈরুত: আল-মাকতাবুল ইসলামী, ১৩৯৯ হি.
৫. আশ-শামায়েলুল মুহাম্মাদিয়া ( الشمائل المحمدية ),মুহাম্মদ ইবন ঈসা ইবন সূরা আত-তিরমিযী, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ: মুহাম্মদ ‘আফীফ আয-যা‘বী, তৃতীয় সংস্করণ, জেদ্দা: দারুল মাতবু‘আতিল হাদিসা, ১৪০৯ হি.
৬. সহীহুল বুখারী ( صحيح البخاري ), মুহাম্মদ ইবন ইসমাঈল ইবন ইবরাহীম আল-বুখারী, ইস্তাম্বুল: আল-মাকতাবুল ইসলামী।
৭. সহীহ মুসলিম ( صحيح مسلم ), মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল-কুশায়রী আন-নিসাবুরী, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ: মুহাম্মদ ফুয়াদ আবদুল বাকী, রিয়াদ: রিয়াসাতু ইদারাতিল বাহুসিল ‘ইলমিয়া ওয়াল ইফতা ওয়াদ দা‘ওয়া ওয়াল ইরশাদ ( رئاسة إدارات البحوث العلمية و الإفتاء و الدعوة و الإرشاد ), ১৪০০ হি.
৮. নববীর ব্যখ্যাসহ সহীহ মুসলিম ( صحيح مسلم بشرح النووي ), রিয়াদ: রিয়াসাতু ইদারাতিল বাহুসিল ‘ইলমিয়া ওয়াল ইফতা ওয়াদ দা‘ওয়া ওয়াল ইরশাদ ( رئاسة إدارات البحوث العلمية و الإفتاء و الدعوة و الإرشاد ), ১৪০১ হি.
৯. আত-ত্ববাকাতুল কুবরা ( الطبقات الكبرى ), ইবনু সা‘দ, বৈরুত: দারু সাদির, তারিখ বিহীন।
১০. ফাতহুল বারী শরহু সহীহিল ইমাম আবি আবদিল্লাহ মুহাম্মদ ইবন ইসমাঈল আল-বুখারী (فتح الباري شرح صحيح الإمام أبي عبد الله محمد بن إسماعيل البخاري), আহমদ ইবন আলী ইবন হাজার আল-‘আসকালানী, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ: আবদুল আযীয ইবন আবদিল্লাহ ইবন বায; অধ্যায়, পরিচ্ছেদ ও হাদিসের ক্রমিক নম্বর বিন্যাস: মুহাম্মদ ফুয়াদ আবদুল বাকী, রিয়াদ: রিয়াসাতু ইদারাতিল বাহুসিল ‘ইলমিয়া ওয়াল ইফতা ওয়াদ দা‘ওয়া ওয়াল ইরশাদ ( رئاسة إدارات البحوث العلمية و الإفتاء و الدعوة و الإرشاد )।
১১. আল-কামুস আল-মুহীত ( القاموس المحيط ), মুহাম্মদ ইবন ইয়াকুব আল-ফিরোযাবাদী, দ্বিতীয় সংস্করণ, বৈরুত: মুয়াস্সাসাতুর রিসালা ( مؤسسة الرسالة ), ১৪০৭ হি.
১২. আল-মুসতাদরাকু ‘আলা আস-সহীহাইন ( المستدرك على الصحيحين ), হাকেম নিসাবুরী; তত্ত্ববধানে: ইউসূফ আবদুর রহমান আল-মার‘আশালী, হাদিসসমূহের বর্ধিত সূচীপত্রসহ, বৈরুত: দারুল মা‘আরেফত।
১৩. মুসনাদুল ইমাম আহমাদ ( مسند الإمام أحمد ), বৈরুত: দারু সাদির।
তাখরীজ ও বর্ধিত কলেবর করেছেন, ড. আহমাদ মু‘আয হাক্কী
অনুবাদ : মোঃ আমিনুল ইসলাম
সম্পাদনা : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া