হুদায়বিয়ার সন্ধির পর যখন পারস্পরিক যোগাযোগের রাস্তা নিরাপদ হয়ে গেলো, তখন ইসলামের প্রচার ও প্রসার ব্যাপকভাবে সংঘটিত হওয়ার সুযোগ লাভ করে। কিন্তু ওই সন্ধির পরও কারও কারও ভেতর যা কিছু বাধো বাধো ব্যাপার ছিলো, মক্কা বিজয়ের পর তাও দূর হয়ে যায়। পবিত্র কুরআন এখন সমগ্র আরবের ঘরে ঘরে তার অনন্য সাধারণ প্রয়োগ ক্ষমতার মাধ্যমে সবার হৃদয়ে প্রভাব বিস্তার করলো। ফল দাঁড়ালো এই, যে লোকগুলো ইসলামও মুসলমানদের চেহারা দর্শন করা পর্যন্ত পছন্দ করতো না, তারাও দলে দলে দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে প্রতিনিধিদলের আকারে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে উপস্থিতহতে লাগলো এবং স্বেচ্ছায় ইসলামে দীক্ষিত হয়ে ইসলামের জন্য নিজেদের জান-মাল উৎসর্গ করতে প্রস্তুত হয়ে গেলো। আর এই প্রতিনিধি দলসমূহের অধিকাংশই নবম হিজরিতে নবীজির খেদমতে উপস্থিত হয়।
বনি সাকিফ, বনি ফাযারা, বনি তামিমে, বনি সাদ ইবনে বকর, কিন্দা, বনি আবদুল কায়েস, বনি হানিফা, বনি কাহতানের প্রতিনিধিদল, অনুরূপভাবে বনি আসাদ, বনি মুহারিব, হামাদান, গাসসান প্রভৃতি গোত্রের প্রতিনিধিদলের কেউ কেউ উপস্থিতির পূর্বে, আবার কেউ কেউ উপস্থিতির পরে মুসলমান হয়ে যান; হিমইয়ার গোত্রের বিভিন্ন সর্দার, যারা নিজ নিজ গোত্রের বাদশা বলে গণ্য হতেন, তাদের পক্ষে দূতগণ সংবাদ নিয়ে আসেন যে, তারা সকলেই স্বেচ্ছায় সাগ্রহে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। এভাবে পদাতিক ও অশ্বারোহী প্রতিনিধিদল সমূহও উপস্থিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করতে থাকলেন। প্রতিনিধিদলগুলোর এই আগমনের ফলে দশম হিজরিতে বিদায় হজের সময় নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে এক লক্ষেরও অধিক মুসলমান শরিক হন, আর যারা এ হজে উপস্থিত হতে পারেননি, তাদের সংখ্যা ছিলো এর চেয়েও কয়েক গুণ বেশি।
তথ্যসূত্র :সিরাতে খাতামুল আম্বিয়া, মুফতি শফি।