৪৪তম পর্ব – একটি সুন্নাহকে বাঁচাবো বলে – ঘুমের আগে ‘হামদ’ – শায়খ আতিক উল্লাহ


ঘুমের আগে ‘হামদ’

আমাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার কতো নেয়ামত! রাশি রাশি নেয়ামত আর অনুগ্রহের মাঝে আমরা ডুবে আছি। এর বিনিময়ে প্রথমত আমাদের কর্তব্য কী?
-আল্লাহর শোকরগুজার হওয়া। আল্লাহর হামদা-সানা পড়া।
কিন্তু আমাদের তা মনেই থাকে না। আমরা বেশির ভাগ সময়ই, আমাদের কী কী নেই তার ফিরিস্তি খুলে বসি। কতো কিছু যে আমাদের আছে, সেটার কথা বেমালুম ভুলে বসে থাকি:
وَإِنَّ رَبَّكَ لَذُو فَضْلٍ عَلَى النَّاسِ وَلَكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لا يَشْكُرُونَ
নিশ্চয়ই আপনর রব মানুষের প্রতি অনুগ্রহের অধিকারী, তাদের কিন্তু অধিকাংশই শুকরিয়া আদায় করে না (নামল: ৭৩)।

আমরা তো পারি মাঝেমধ্যে চুপচাপ থেকে, আল্লাহর অসংখ্য নেয়ামতের কথা চিন্তা করতে। শুকরিয়া আদায় করতে:
وَقَلِيلٌ مِنْ عِبَادِيَ الشَّكُورُ
আমার বান্দাদের মধ্যে শোকরগুজার বান্দা খুবই কম (সাবা:১৩)।

এই আয়াতে এক ধরনের প্রচ্ছন্ন আক্ষেপ আছে! ভর্ৎসনা আছে। ধিক্কার আছে। আমরা নিয়মিত আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে, আয়াতের আওয়াত থেকে বের হতে পারি। হতে পারি আল্লাহর প্রিয় শোকারগুজার বান্দাদের অন্তুর্ভুক্ত। হতে পারি অল্পসংখ্যক ‘বিশেষ’ বান্দা!

সারাদিনে আর যাই হোক, আমরা ঘুমের সময়, আল্লাহর শোকরগুজার বান্দা কি হতে পারি না? আমাদের পেয়ারা নবীজি সা.-এর আদর্শও তাই! তিনি ‘হামদ’ পড়ে ঘুমুতেন। হাবীব সা.-এর দিনটা শেষ হতো ‘হামদ’-এর মাধ্যমে!
আমরাও পারি দিনের পাটটা আল্লাহর ‘হামদ’ দিয়ে চুকোতে পারি! নবীজির সার্বক্ষণিক খাদেম আনাস রা. বলেছেন:
নবীজি বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে বলতেন:
الْحَمْدُ للهِ الَّذِي أَطْعَمَنَا وَسَقَانَا، وَكَفَانَا وَآوَانَا
আলহামদুলিল্লাহিল্লাযি আতা‘আমানা ওয়া সাকা-না ওয়া কাফা-না ওয়া আ-ওয়ানা!
এরপর নবীজি বলেছেন:
-কতোজন আছে, যাদের দেখাশোনার কেউ নেই, আশ্রয়দাতা নেই! (মুসলিম)।

মাত্র সাতটা তো শব্দ! দু’তিন সেকেন্ডেরই তো ব্যাপার! অথচ এর মাধ্যমে হাদীসের ওপর আমল হয়ে যাবে, কুরআন কারীমের আয়াত অনুযায়ী শোকরগুজারদের ‘বিরলতম’ তালিকায় নাম উৎকীর্ণ হবে! তাহলে শুরু করা যাক! আলহামদুলিল্লাহ!