﷽
চেটেপুটে সুন্নাত
আমাদের প্রিয় নবীজির সবকিছুই সুন্দর! তিনি নিজে সুন্দর! তার কথা সুন্দর! তার কাজ সুন্দর! তার মন সুন্দর! নবীজি সা.-এর খাওয়াও সুন্দর! কী নিপুণভাবেই না তিনি খাবার গ্রহণ করতেন।
আধুনিক মানুষেরা যেটাকে রুচিবোধ বলে বা শৈল্পিক ব্যঞ্জনা বলে, ঠিক সেটাই আমাদের ধর্মীয় ঘরানায় ‘সুন্নাত’ হিশেবে পরিগনিত। আবার তাদের শিল্প-রুচি আর আমাদের ‘সুন্নাত’ এক নয়। দুয়ের ধরন ও প্রকরণে বহুত ফারাক!
নবীজীবনের প্রতিটি পলেই আমাদের জন্যে শিক্ষা! আমাদের জন্যে আদর্শ।
আজ আমরা পুরো খাবার নয়, শুধু খাবার শেষ করার নববী ভঙ্গিটার সাথে পরিচিত হবো! পেয়ারা নবী হাত দিয়ে খাবার খেতেন। খাবারশেষে ‘আঙুল’ চেটে খেতেন। তিনি বলেও গেছেন:
إِذَا أَكَلَ أَحَدُكُمْ مِنَ الطَّعَامِ فَلا يَمْسَحْ يَدَهُ حَتَّى يَلْعَقَهَا”، أَوْ “يُلْعِقَهَا
তোমরা যখন খাবার গ্রহন করবে, চেটে খাওয়ার আগে হাত ধোবে না! অথবা অন্যকে হাতটা চেটে খেতে দিবে! (মুসলিম)।
অন্যকে চেটে খেতে দেয়ার বিষয়টা শুনে কারো মনে আপত্তি উঠতে পারে, ব্যাপারটা বাচ্চাদের হাত চেটে খাওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারি! স্বামী ও স্ত্রীর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারি! যাদের সাথে হৃদ্যতা গভীর! যাদের সাথে আপন রুচির গভীর মিল আছে, তাদের ক্ষেত্রে! মূল বিষয় হলো ‘খাবারশেষে’ নিজের আঙুল চেটে খাওয়া!
কেন চেটে খাবো? নবীজিই উত্তর দিয়েছেন:
وَلَا يَمْسَحْ يَدَهُ بِالْمِنْدِيلِ حَتَّى يَلْعَقَ أَصَابِعَهُ، فَإِنَّهُ لا يَدْرِي فِي أَيِّ طَعَامِهِ الْبَرَكَةُ
আঙুল চেটে না খেয়ে, হাত রুমালে মুছবে না। কারণ জানা নেই খাবারের কোন অংশটাতে ‘বারাকাহ’ আছে! (মুসলিম)।
পেয়ারা নবী এও বলে গেছেন:
فَإِنَّ آخِرَ الطَّعَامِ فِيهِ بَرَكَةٌ
কারণ খাবারের শেষাংশেই ‘বারাকাহ’ আছে! (নাসায়ী)।
এজন্যই নিয়ম হলো প্লেটে অল্প অল্প খাবার নেয়া। ওগুলো শেষ করে আবার নেয়া। তীব্র ক্ষুধার কারণে একসাথে প্লেটভর্তি করে ভাত নিলাম, পরে কোনও কারণে খাবারটা মুখে না রুচলে ফেলে দিতে হয়। এটা অপচয়! বুদ্ধিমানের কাজ হলো, শুরুতে সতর্ক থাকা! ভাল লাগলে আস্তে আস্তে পরিমাণ বাড়ানো! এ-নিয়মে ভাত বা খাবার নিলে, নষ্ট হওয়ার আশংকা থাকে না। সর্বোপরি খাবারশেষের বরকত লাভেরও সৌভাগ্য নসীব হবে!