﷽
ওসিয়তনামা
পেয়ারা নবী সা. চাইতেন, তার উম্মত সর্বদা মৃত্যুর কথা স্মরণ করুক। পরকালের কথা স্মরণে রাখুক। তাহলে তার আমলের উন্নতি হবে। আখেরাতের প্রস্তুতিও ভাল হবে। গুনাহমুক্ত জীবন গঠনে সহায়ক হবে। বান্দা তাওবামুখী হবে। নিজের আমল সংশোধনে ব্রতী হবে। অন্যের হক যথাযথ আদায়ে তৎপর হবে। অন্যের হক আত্মসাৎ করতে ভয় পাবে। তিনি বলে গেছেন:
أَكْثِرُوا ذِكْرَ هَاذِمِ اللَّذَّاتِ
তোমরা বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করো (তিরমিযী)।
মৃত্যুকে স্মরণ করার অন্যতম একটি প্রকাশ-মাধ্যম হলো: ওসীয়তনামা লিখে রাখা। বিশেষ করে তার ধন-সম্পদ থাকলে, ওসীয়ত করা জরুরী। ঋণ থাকরে তো কথাই নেই। আর যদি সে যৌথ-কারবারে থাকে, নিয়মিত লেনদেন, দেনা-পাওয়ার হিশেব নিকেশ পরিষ্কার করে রাখা জরুরী। ওয়ারিশদের জন্যে সুষ্পষ্ট বাগ-বাঁটোয়ারা করে রাখা আবশ্যক। এতেকরে ‘হক’ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে। আমানতদারিতা রক্ষা পায়। নবীজি সা. বলে গেছেন:
مَا حَقُّ امْرِئٍ مُسْلِمٍ لَهُ شَيْءٌ يُوصِي فِيهِ، يَبِيتُ لَيْلَتَيْنِ إِلاَّ وَوَصِيَّتُهُ مَكْتُوبَةٌ عِنْدَهُ
কোনও মুসলমানের কাছে, ওসীয়ত করার মতো কিছু থাকলে, তাহলে তা লিখে না রেখে দু’রাত কাটানোও সমীচিন নয় (বুখারী)
ইবনে উমার রা. বলেছেন:
আমি এই হাদীস শোনার পর, একরাতও ওসীয়ত না লিখে ঘুমুইনি। প্রতি রাতেই আমার সাথে ওসীয়তনামা ছিল।
অথচ আমাদের মধ্যে একটা ধারনা প্রবলভাবে বিদ্যমান: ওসীয়ন বুঝি মরণকালের ব্যাপার-স্যাপার! অথচ হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী সামান্য সম্পদ থাকলেই, নিয়মিত ওসীয়ত লিখে রাখতে হবে। ছেলে হোক আর বুড়োই হোক! এটা আসলে মওতেরই প্রস্তুতি! আমি কখন চলে যাই, তার কোন ঠিক ঠিকানা আছে! সবকিছু গুছিয়ে রাখাই ভালো নয়কি? নবীজি আমাদেরকে এভাবে গড়ে তুলতে চেয়েছেন!