ইবরাহীম বিন ওলীদ বিন আব্দুল মালিক আবু ইসহাক নিজ ভাই ইয়াযিদের মৃত্যুর পর খিলাফতে তখতে আরোহণ করেন। তিনি উত্তরাধিকার মনোনীত হওয়ার ক্ষেত্রে মতভেদ রয়েছে।
বুরদা বিন সিনান বলেছেনঃ মৃত্যুর প্রাক্কালে আমি ইয়াযিদের কাছে গেলাম। কিছুক্ষণ পর প্রখ্যাত আলেম কাতান এসে ইয়াযিদকে বললেন,“আপনার প্রাসাদ তোরণে অনেক লোক দাঁড়িয়ে আছে। আমি তাদের দূত হিসেবে আপনার কাছে এসেছি। আমি আল্লাহর ওয়াস্তে আপনাকে জিজ্ঞেস করতে চাই যে,আপনি নিজ ভাই ইবরাহীমকে কেন উত্তরাধিকার মনোনীত করছেন না ?” এ কথা শুনে ইয়াযিদ রেগে গিয়ে বললেন,“আমি ইবরাহীমকে উত্তরাধিকার মনোনীত করবো ? হে আবুল উলামা, আপনিই বলুন আমি কাকে উত্তরাধিকার মনোনীত করতে পারি ? আমি এ বিষয়ে কাউকে ইশারাও করবো না।” পরবর্তীতে কাতান বলেন,এরপর খলীফা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লেন। আমি খলীফার ইন্তেকাল হয়েছে ভেবে তার কাছে বসে পড়লাম আর তার বক্তব্যের বিষয়বস্তু লিপিবদ্ধ করে এর উপর সাক্ষ্যপ্ৰদান সাপেক্ষে লোকদের বাইআত নিলাম। বর্ণনাকারী (বুরদা বিন সিনান) বলেন,“আল্লাহর কসম,খলীফা ইয়াযিদ কাউকে উত্তরাধিকার মনোনীত করেননি।”
ইবরাহীম সত্তর দিন খিলাফতেরা তখতে আসীন ছিলেন। এরপর মারওয়ান বিন মুহাম্মাদের আক্রমণের ফলে ইবরাহীম পালিয়ে যায় আর মারওয়ান বিন মুহাম্মাদ লোকদের কাছ থেকে বাইআত গ্রহণ করেন। কিছুদিন পর ইবরাহীম ফিরে এসে তার বাইআত প্রত্যাহার করে রাষ্ট্রের সকল দায়িত্ব মারওয়ান বিন মুহাম্মাদের উপর অর্পণ করত তিনি নিজেও তাকে বাইয়াত দেন।
ইবরাহীম এ ঘটনার পর ১৩২ হিজরী পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। উমাইয়্যা বংশের পতনের সময় সিফ্ফাহ এর গোলযোগে তাকে হত্যা করা হয়।
তারীখে ইবনে আসাকির গ্রন্থে রয়েছে,ইবরাহীম যুহরীর নিকট থেকে হাদীস শুনেছেন,তার চাচা হিশামের কাছে তা বর্ণনা করেছেন আর পুত্র ইয়াকুব তার কাছ থেকে রেওয়ায়েত (বর্ণনা) করেছেন।
এক দাসী তার জননী। তিনি ১২৭ হিজরীর সফর মাসের ২৪ তারিখ সোমবারে বাইআত প্রত্যাহার করেন ।
মাদায়েনী বলেছেন,“আশ্চর্যের বিষয় হলো, অনেকেই উত্তরাধিকারের মনোনয়ন নিয়ে খলীফা ভেবে ইবরাহীমকে সালাম দিতো। অনেকই আবার উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত আমীর ভেবে তাকে শ্ৰদ্ধা করতো,আবার কেউ তার ব্যাপারে উভয় বিষয় প্রত্যাখ্যান করতো।”
এক কবি বলেছেন, “আমরা প্রত্যেক জুমআয় ইবরাহীমের জন্য বাইআত করতাম। কিন্তু তিনি এমন এক নেতা, যিনি ধ্বংস হয়েছেন।”
কথিত আছে যে, ইবরাহীমের আংটিতে খোদাই করে লিখা ছিল- يثق با الله