মুতাওয়াক্কিলের ভাই আল মুসতায়িন বিল্লাহ আবুল আব্বাস আহমাদ বিন মুতাসিম বিন রশীদ ২২১ হিজরীতে মুখারিক নামক বাঁদির গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন।
তার লাবণ্যময় চেহারায় বসন্তের দাগ ছিল। তিনি ছিলেন তোতলা।
মুনতাসিরের ইন্তেকালের পর সাম্রাজ্যের কর্মকর্তাবৃন্দ পরামর্শক্রমে মুসতায়িনকে খলীফা মনোনীত করেন। তিনি ২৮ বছর বয়সে খিলাফতের তখতে আরোহণ করেন আর ২৫১ হিজরী পর্যন্ত তার খিলাফত ছিল।
ওসীফ আর বাগা নামক দুই তুর্কী, যারা মুতাওয়াক্কিলের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল, তিনি তাদেরকে পৃথক করে দিলে তুকীরা ভয়ে সামরাহ থেকে বাগদাদে চলে যায়। এরপর তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে মুসতায়িনের কাছে দূত পাঠিয়ে সামরাহতে ফিরে আসার অনুমতি চায়। তিনি তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তুর্কীদের বন্দী করার ইচ্ছা করলে তারা মুতায বিল্লাহর কাছে বাইয়াত দেয়। মুতায বিশাল বাহিনী নিয়ে মুসতায়িনের উপর হামলা করেন। মুসতায়িন নিহত হওয়ায় বাগদাদবাসী উত্তেজিত হয়ে পড়ে। উভয় বাহিনীর মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হয়। এ লড়াই কয়েক মাস ধরে চলতে থাকে,হতাহত হয় অসংখ্য জনতা,যুদ্ধের দীর্ঘতার কারণে মানুষের জীবন অচল হয়ে পড়ে। অবশেষে মুসতায়িনের বাহিনী সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। তিনি সন্ধি স্থাপনের মাধ্যমে ২৫২ হিজরীতে খিলাফত থেকে সরে দাড়ান। এ সন্ধিতে কাযি ইসমাঈল মুসতায়িনের প্রতি কঠোর শর্তাবলী আরোপ করে। অন্যান্য কাযীগণ আরোপিত কঠোর শর্তাবলীকেই সন্ধির শর্তসমূহ হিসেবে চুক্তিপত্রে মোহর এঁটে দেয়।
মুসতায়িন ওয়াসেত শহরে চলে যান। তিনি সেখানে নয় মাস যাবত এক আমীরের নযরবন্দী হিসেবে অবস্থান করেন। এরপর সেই আমীর তাকে সামারাহতে পাঠিয়ে দেয়। মুতায আহমদ বিন তুলুনকে এক লিখিত ফরমানের মাধ্যমে মুসতায়িনকে হত্যা করার নির্দেশ দেন। প্রতিউত্তরে আহমাদ জানায় – খলীফার বংশধর আমি কখনোই হত্যা করবো না। এরপর এ কাজের জন্য সাইদ হাজেবকে নিয়োগ করা হয়। ২৫২ হিজরীর শাওয়াল মাসের ৩ তারিখে যখন তার বয়স ৩১ বছর, সে তাকে হত্যা করে।
মুসতায়িন সৎ,জ্ঞানী,সাহিত্যিক আর বাগ্মী ছিলেন। তিনিই সর্বপ্রথম তিন সেলাইবিশিষ্ট জামা ও লম্বা টুপি পড়েন।
তার খিলাফতকালে যে সকল ওলামায়ে কেরাম ইন্তিকাল করেন তারা হলেন – আবদ বিন হামিদ,আবু তাহের বিন আল সরাহ হারেস বিন মিসকীন,আবু হাতিম,জাখাত প্রমুখ।