আল মুসতাকফী বিল্লাহ আবদুল কাসিম আবদুল্লাহ বিন মুকতাফী বিন মুতাযদ ‘ইমলাহুননাস’ নামক বাঁদির গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন।
মুত্তাকী অপসারিত হওয়ার পর ৩৩৩ হিজরির সফর মাসে ৪১ বছর বয়সে তিনি খিলাফত লাভ করেন। এ বছরেই তাওযুন ইন্তেকাল করলে তারই সহচর আবু জাফর বিন শিরযাদের মধ্যে সাম্রাজ্য দখলের লোভ সৃষ্টি হয়। এ লক্ষ্যে সে ফৌজদের প্রতিশ্রুতিও গ্রহণ করে। খলীফা তাকে খিলআত প্রদান করেন। এরপর আহমাদ বিন বূয়া বাগদাদে এলে ইবনে শিরযাদ আত্মগোপন করে। ইবনে বূয়া বিনা বাধায় দারুল খুলাফায় প্রবেশ করে খলীফার সামনে গিয়ে বসে পড়ে। খলীফা তাকে মাযাদ্দৌলা লকবসহ খিলআত প্রদান করেন। এরপর তিনি তার দ্বিতীয় ভাই আলীকে ইমাদুদ্দৌলা আর তৃতীয় ভাই হাসানকে রুকনদ্দৌলা উপাধি দেন, আর তিনি ইমামুল হক লকব ধারণ করে ফরমান জারি করেন।
কিছুদিন পর প্রশাসন মাযাদ্দৌলার হাতে জিম্মি হয়ে পড়লে সে খলীফার দৈনিক খরচের জন্য পাঁচ হাজার দিরহাম ভাতা নির্ধারণ করে দেয়। মাযাদ্দৌলা দায়লামীদের মধ্যে সাম্রাজ্যের প্রথম নায়েব। সে-ই সর্বপ্রথম খারাজ আদায়ের জন্য লোক নিয়োগ করে। সে লোকদের মাঝে সন্তরণ বিদ্যার খাহেশ পয়দা করে। সে নৌকা চালনা প্রতিযোগীতার প্রবর্তন করে।
কিছুদিন পর খলীফা সম্পকে মাযাদ্দৌলার খারাপ ধারণা জন্ম নেয়। ৩৩৪ হিজরির জামাদিউল আখির মাসের কোন একদিন দরবার বসলো, সভাসদবর্গ নিজ নিজ আসলে উপবেশনরত। তখত অলংকৃত করে বসে আছেন খলীফা মুসতাকফী। দায়লামী সম্প্রদায়ের দুইজন লোক তখতের দিকে এগিয়ে গেলো। হাতে চুমু দিবে ভেবে খলীফা তাদের দিকে হাত প্রসারিত করলে হাত ধরে টেনে তারা খলিফাকে নিচে ফেলে দিলো। এরপর তারা তার পাগড়ী দিয়ে খলিফাকে বেঁধে রেখে অন্দর মহল অবাধে লুণ্ঠন করে।
ওদিকে মাযাদ্দৌলা স্বীয় আলয়ে অবস্থান করে। তারা মুসতাকফীকে পায়ে হেঁটে আপন কক্ষে নিয়ে যায়। এরপর তাকে খিলাফত থেকে সরে দাঁড়াতে বলে আর তার চোখ দুটো খুলে নেয়। সে সময় তার খিলাফতের বয়স হয়েছিলো এক বছর চার মাস।
এরপর লোকেরা ফজল বিন মুকতাদরের কাছে বাইয়াত করলে অপারগ হয়ে তিনি তার উপর খিলাফত সোপর্দ করেন। এরপর মুসতাকফীকে বন্দী করা হয়। ৩৩৮ হিজরিতে তিনি জেলখানায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মুসতাকফীর ব্যাপারে এ কথা প্রসিদ্ধ যে, তিনি ছিলেন শিয়া।