আল মুতাযদ বিল্লাহ আবুল ফাতাহ দাউদ বিন আল মুতাওয়াক্কিল কাজল নামের এক তুর্কি বাঁদির গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন।
নিজের ভাইয়ের অপসারণের পর ৮১৫ হিজরিতে তিনি খিলাফতে আরোহণ করেন। সে সময় সালতানাত সুলতান মুঈদের দখলে ছিল।
৮২৪ হিজরিতে সুলতানের তিরোধানে তার ছেলে আহমাদ মুযাফফর উপাধি নিয়ে তখত দখল করে। ততর তার সহকারী নিযুক্ত হয়। শাবান মাসে ততর তাকে বন্দী করলে খলীফা তাকে যাহির উপাধিসহ সালতানাত প্রদান করেন। ততর জিলহাজ্জ মাসে মৃত্যুবরণ করলে তার ছেলে মুহাম্মদ সালিহ উপাধি নিয়ে সুলতান নিয়োগ হয়। বরসিয়ায়ী আক্রমণ চালিয়ে সালিহকে তখত থেকে নামিয়ে দেয়। খলীফা ৮২৫ হিজরির রবিউল আখির মাসে বরসিয়ায়ীকে সুলতান বানিয়ে দেন। সুলতান থাকাকালীন ৮৪১ হিজরির যিলহাজ্জ মাসে তার মৃত্যু হলে তার স্থানে তার ছেলে আল আযীয উপাধী নিয়ে বাদশাহ মনোনীত হয়। হিকমাক তার সহযোগী নিযুক্ত হয়। ৮৪২ হিজরিতে হিকমাক আযীযের কাছ থেকে সালতানাত কেড়ে নিলে খলীফা যাহির উপাধি দিয়ে তাকে সুলতান বানিয়ে দেয়। খলীফা এ সুলতানের যুগেই ইন্তেকাল করেন।
খলীফা মুতাযদ হলেন বুজুর্গ খলীফাদের নেতা, মেধাবী, সচেতন ওলামাদের সহচারয গ্রহণকারী ও দানশীল। সৃজনশীলতায় তার অবদান অপার। ৮৪৫ হিজরির রবিউল আউয়াল মাসের চার তারিখে রবিবারে ৭০ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন। এটা ইবনে হাজার আসকালানির গবেষণা। কিন্তু আমার (গ্রন্থকারের) কাছে খলীফার ভাতিজা বলেছেন, তিনি ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
৮১৬ হিজরিতে সদরুদ্দীন বিন আদমীকে বিচার আর হিসাব সংরক্ষণ উভয় দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি একত্রে দুই দায়িত্ব পালন করেন।
৮১৯ হিজরিতে মুতাকাল্লীবাগার উপর তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। সে-ই প্রথম তুর্কি ব্যক্তি, যার উপর রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। এ বছর এক লোক আকাশে গিয়ে আল্লাহ’র সাথে দেখা করার দাবী করে। লোকটি ছিল পাগল। অনেক আম জনসাধারণ তার কথা বিশ্বাস করেছিলো। তাকে বন্দী করা হয়।
৮২১ হিজরিতে দুটো গর্দান আর ছয় পা বিশিষ্ট একটি মহিষের জন্ম হয়। এটা ছিল মহান আল্লাহ’র এক অপূর্ব নিদর্শন।
৮২২ হিজরির ভূমিকম্পে অধিকাংশ লোক নিহত হয়। এ বছর মাদরাসাতুল মুঈদাহ প্রতিষ্ঠিত হয়। শায়খ শামস বিন মুদিরীকে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। সুলতানের উপস্থিতিতে ক্লাস শুরু হয়েছিলো। সুলতানের ছেলে ইব্রাহীম শিক্ষকের জায়নামায নিয়মিত বিছিয়ে দিতেন।
৮২৩ হিজরিতে গাজা শহরের একটি উট যবেহ করা হলে তার গোশত প্রদীপের মতো আলো ছড়াতে থাকে।
৮২৪ হিজরিতে নীল নদের পানিতে পার্শ্ববর্তী জনপদ প্লাবিত হয়।
৮২৫ হিজরিতে ফাতিমা বিনতে কাযী জালালুদ্দীন বালকীনী একটি বাচ্চা প্রসব করে যার পুরুষ লিঙ্গ স্ত্রীলিঙ্গ উভয়ই ছিল। মাথায় গরুর মতো দুটো শিং ফুঁড়ে উঠে, সে সাথে সাথে মারা যায়। এ বছর কায়রো শহরে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয় আর নীল নদের পানি ব্যাপক বৃদ্ধি পায়।
তার শাসনামলে যেসব ওলামায়ে কেরামগণ ইন্তেকাল করেন তারা হলেন – শাফী মাযহাবের মুফতী শিহাব বিন হুজ্জাহ, আদীব বুরহান বিন রিফা, মদিনা শরীফের মুফতি ও মুহাদ্দিস আবু বকর আল মুরাগী, মক্কা শরীফের হাফেজ জামাল বিন যহির, কামুসের লেখক মুজাদ সিরাজী, শামস বিন কাবানী হানাফী, আবু হুরায়রা বিন নিকাশ, দানুয়ী, উস্তাদ অযুদ্দিন বিন জামাত বিন হিশাম আজমী, জালাল বালকীতী , বুরহান বিজুরী, ইরাক শাসনকর্তা শামস বিন মুদিরী, আলা বিন মুয়ালা, বদর বিন দাযামেনী, তাকিউল হাসিনী, শারেহ ইবনে শুজা, হারবী, ইবনে জারজী, কবি তকী বিন হুজ্জা, মক্কার নাহুবিদ জালাল মুরশিদি, মুহাদ্দিস শিহাব বিন মুহমাররাহ, আলা আল বুখারি, শামস আল বাসাতী, জামাল বিন খাইয়াত, তয়্যিব বাগদাদী প্রমুখ।