মাওলানা আব্দুল মালেক
এই উম্মত যদি ইসলামকে ধারণ করে থাকে, ঈমান ও তার দাবিসমূহের উপর অটল-অবিচল থাকে, ঈমানের গুণে গুণান্বিত হয়, বিশেষ করে ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ গুণ-সত্যবাদিতা ও আমানতদারি অর্জন করে এবং কুফরি বৈশিষ্ট্যসমূহ থেকে বেঁচে থাকে, বিশেষত কুফরির ভয়াবহ অনুষঙ্গ-গুনাহ ও খেয়ানত পরিহার করে তাহলে নিঃসন্দেহে এ জাতিই সফল ও বিজয়ী। যদিও সে শত্রুর যাতাকলে পিষ্ট হোক। কারণ পিষ্ট হওয়া আর পিছিয়ে পড়া এক বিষয় নয়। পিছিয়ে পড়া তো মূলত নিজের আদর্শকে ত্যাগ করার নাম। যে নিজের আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে সে সব অবস্থাতেই সফল এবং মনযিলে মকসূদের দিকে অগ্রসরমান। وَلَا تَهِنُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَنْتُمُ الْأَعْلَوْنَ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ (তরজমা) তোমরা হীনবল হয়ো না এবং দুঃখিতও হয়ো না; তোমরাই বিজয়ী যদি তোমরা মুমিন হও। [সূরা আলে ইমরান (৩) : ১৩৯]
ঈমান সবার আগে
সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হল ঈমান। ঈমানের বিপরীত কুফর। ঈমান সত্য, কুফর মিথ্যা। ঈমান আলো, কুফার অন্ধকার। ঈমান জীবন, কুফর মৃত্যু। ঈমান পূর্ণ কল্যাণ আর কুফর পূর্ণ অকল্যাণ। ঈমান সরল পথ, আর কুফার ভ্ৰষ্টতার রাস্তা । ঈমান মুসলমানের কাছে প্ৰাণের চেয়েও প্রিয়। ঈমানদার সকল কষ্ট সহ্য করতে পারে, মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে পারে, কিন্তু ঈমান ছাড়তে পারে না। ঈমােনই তার কাছে সবকিছু থেকে বড়। ঈমান শুধু মুখে কালেমা পড়ার নাম নয়, ইসলামকে তার সকল অপরিহার্য অনুষঙ্গসহ মনেপ্ৰাণে কাবুল করার নাম। আর একারণে মুমিনকে হতে হবে সুদৃঢ়, সত্যবাদী ও সত্যনিষ্ঠ। মুমিন কখনো শৈথিল্যবাদী হতে পারে না। কুফরির সাথে যেমন তার সন্ধি হতে পারে না তেমনি মুরতাদ ও অমুসলিমের সাথেও বন্ধুত্ব হতে পারে না। ইসলামের পূর্ণ পরিচয় কী এবং তার অপরিহার্য দাবি ও অনুষঙ্গগুলোই বা কী? সে সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করাই এ প্রবন্ধের উদ্দেশ্য। দ্বীন ও ঈমান সম্পর্কে বেপরোয়া লোকদের যেহেতু এইসব বিষয়ের জ্ঞান নেই, কিংবা জ্ঞান থাকলেও পরোয়া নেই। তাই তাদের মতে ঈমানকুফরের সন্ধিও অসম্ভব কিছু নয়। (লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আমীম) কাকে বলে ঈমান আর তার অপরিহার্য অনুষঙ্গ কী-এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী নিয়েই।
উম্মাহর ঐক্য পথ ও পন্থা
আমাদের সমাজ সুন্নাহ অনুসরণের মর্ম ও তার সুন্নাহ সম্মত পন্থা এবং সুন্নাহর প্রতি আহবানের সুন্নাহ সম্মত উপায় সম্পর্কে দুঃখজনকভাবে উদাসীন। তদ্রূপ মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সংহতির সঠিক উপলব্ধি এবং ঐক্য বিনাশী বিষয়গুলো চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে ভ্রান্তি ও বিভ্রান্তির শিকার।
মুসলিম উম্মাহ পরস্পর ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং নিজেদের একতা ও সংহতি রক্ষা করা ইসলামের একটি মৌলিক ফরয। তেমনি সুন্নাহর অনুসরণ তথা আল্লাহর রাসূলের শরীয়ত এবং তাঁর উসওয়াহ ও আদর্শকে সমর্পিত চিত্তে স্বীকার করা এবং বাস্তব জীবনে চর্চা করা তাওহীদ ও ঈমান বিল্লাহর পর ইসলামের সবচেয়ে বড় ফরয।
প্রচলিত ভুল
আমাদের সমাজে অসংখ্য ভিত্তিহীন কথা প্রচলিত রয়েছে। এগুলো এক বছর বা এক যুগ ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বরং যুগে যুগে মানুষের অশিক্ষা, কুশিক্ষা, বা খন্ডিত শিক্ষার কারনে সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে। কখনো অনিচ্ছাকৃত উচ্চারন বিভ্রাটের কারনেও ছড়িয়েছে। কেউ কেউ আবার তৎকালীন রাজা বাদশাদের খুশি করতে ছড়িছে এসব মিথ্যা বানোয়াট কথা। যা এখন মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত, কাজ কর্মে প্রকাশ ঘটাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই সকল প্রচলিত ভুল নিয়েই রচিত হয়েছে বইটি। আলোচনা করা হয়েছে আমাদের সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন ভুল বিশ্বাস, ভুল ঘটনা, ভুল প্রচলন, বিদআত, ভুল মাসায়েল, হাদীস নয় এমন প্রচলিত কথা, ভুল তথ্য, ইতিহাসের ভুলসহ সমাজে দ্বীনের কথা মনে করে যেসব ভুল মানুষ প্রতিনিয়ত করে।
শেয়ার করুনঃ
- Click to share on Twitter (Opens in new window)
- Click to share on Facebook (Opens in new window)
- Click to share on WhatsApp (Opens in new window)
- Click to share on Telegram (Opens in new window)
- Click to share on Pinterest (Opens in new window)
- Click to share on Pocket (Opens in new window)
- Click to share on Reddit (Opens in new window)
- Click to share on Tumblr (Opens in new window)
- Click to print (Opens in new window)