মদিনায় অবাঞ্ছিত বনু নাযির

আমর বিন উমাইয়া রাযিয়াল্লাহু আনহু বিরে মাউনার ঘটনার সংবাদ নিয়ে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে বনু কিলাবের দুই ব্যক্তিকে এই ভেবে হত্যা করে যে, এরা বিরে মাউনার বিশ্বাসঘাতকদের দলছুট সদস্য; কিন্তু আসলে তারা তা ছিলো না। নবীজির সামনে বিরে মাউনার ঘটনার সঙ্গে যখন তিনি এই ঘটনাও বর্ণনা করেন, তখন নবীজি বলেন, এই দুই নিহত ব্যক্তির পণ দেওয়া অপরিহার্য।

এই মর্মে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহুদিদের এলাকায় গিয়ে যখন বনু কিলাবের দুই নিহতের দিয়তের ব্যাপারের সুরাহা করতে যান, তখন ইহুদিরা নবীজিকে হত্যার পরিকল্পনা আঁটে; কিন্তু নবীজিকে সেই সংবাদ ওহি মারফত জানিয়ে দেওয়া হলে তিনি দ্রুত সেই স্থান ত্যাগ করেন এবং মদিনয় ফিরে বনু নাযিরকে এই বিশ্বাসঘাতকতার অপরাধে অবিলম্বে মদিনা ছাড়ার নির্দেশ দেন।

বনু নাযির এই নির্দেশ মান্যের প্রস্তুতি গ্রহণ করছিলো, কিন্তু মধ্য দিয়ে মোনাফেক-নেতা আবদুল্লাহ ইবনে উবাই ইহুদি-সর্দার হুয়াইকে এই নির্দেশ অমান্য করতে বলে এবং এর প্রতিক্রিয়ার যে কোনো ফলাফলের সমান ভাগিদার, তারাই শুধু না, বনু কুরাইযাও হবে, এই আশ্বাস জানায়; এমনকি এও বলে,‘তোমাদের চলে যেতে হলে আমরাও মদিনা ছাড়বো।’

হুয়াই মোনাফেক-নেতা ইবনে উবাইয়ের কথায় মজে নবীজির নির্দেশ-পালনে অস্বীকৃতি জানালো। শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনু নাযিরের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য কাফেলা নিয়ে বের হলেন এবং বনু নাযিরের দুর্গ অবরোধ করলেন। এদিকে নবীজির এই অপ্রতিরোধ্য রূপ দেখে মোনাফেক-নেতা আবদুল্লাহ এবং বনু কুরাইযা দুইই সটকে পড়লো। পনেরো দিন অবরুদ্ধ থাকার পর বনু নাযির অস্ত্র সমর্পণ করে নতি স্বীকার করলে নবীজি অস্ত্রহীনভাবে মদিনা ছাড়ার নির্দেশ দেন; শুধু উট বোঝাই করে যে মালপত্র নেওয়া সম্ভব, তা নেওয়ার অনুমতি ছিলো। বিপুল পরিমাণ জায়গা-জিরেত ও অস্ত্রশস্ত্র রাসূলের কর্তৃত্বাধীন হয়।

তথ্যসূত্র :আর-রাহিকুল মাখতুম, সফিউর রহমান মোবারকপুরি;সিরাতে খাতামুল আম্বিয়া, মুফতি শফি।