হারবে ফুজ্জারে অংশগ্রহণ

ফুজ্জার যুদ্ধে মুহাম্মদ

আরব ছিলো যুদ্ধের দেশ। কথায় কথায় সেখানে যুদ্ধ লেগে যেতো। এই যুদ্ধঘেরা রক্তাক্ত প্রেক্ষাপটেই নবি মুহাম্মদের জন্ম হয়েছিলো। শিশু-বালক-কিশোর মুহাম্মদের জীবনে যুদ্ধের কোনো অভিজ্ঞতা ছিলো না। ব্যক্তিগত জীবনের যুদ্ধ সামলেই তিনি পদার্পণ করেছিলেন যৌবনে। সেখানে তখনো পর্যন্ত নতুন কোনো দুঃখের খরতাপ ছিলো না ঠিক, কিন্তু অস্ত্রের ঝনঝনা শোনা যেতে লাগলো…

মুহাম্মাদের বয়স যখন বিশ বছর, তখন ওকায বাজারে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ যুদ্ধের এক পক্ষে ছিলো কুরাইশ ও তাদের মিত্র বনু কিনানা। বিপক্ষে ছিলো কায়েস আয়লান। এ যুদ্ধ ‘ফিজার বা ফুজ্জার’ হিসেবে খ্যাত।

বনু কিনানাহ বাররায নামে এক ব্যক্তি কায়েস আয়লানের তিন লোককে হত্যা করে। এ খবর ওকাযে পৌছুলে উভয় দলের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে যুদ্ধ বেধে যায়। কুরাইশ-কিনানা মিত্রপক্ষের সেনাপতি ছিলেন হারব বিন উমাইয়া। কারণ, প্রতিভা এবং প্রভাব-প্রতিপত্তির ফলে তিনি কুরাইশ ও কিনানা গোত্রের মধ্যে নিজেকে মান-মর্যাদার উচ্চাসনে প্রতিষ্ঠিত করে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন। প্রথম দিকে কিনানাদের থেকে কায়েসদের পাল্লা ছিল ভারী, কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে কিনানাদের পাল্লা ভারী হয়ে ওঠে।

অতঃপর কুরাইশের কতক ব্যক্তি উভয় পক্ষের নিহতদের বিষয়ে সমঝোতার লক্ষ্যে সন্ধির প্রস্তাব দেন এবং বলেন, কোনো পক্ষে বেশি নিহত থাকলে অতিরিক্ত নিহতের দিয়াত গৃহীত হবে। এতে উভয়পক্ষ সম্মত হয়ে সন্ধি করে এবং যুদ্ধ পরিত্যাগ করে পরস্পরে শত্রুতা-বিদ্বেষ ভুলে যায়। একে ফিজার বা ফুজ্জার যুদ্ধ এজন্যই বলা হয় যে, এতে নিষিদ্ধ বস্তুসমূহ এবং পবিত্র মাসের পবিত্রতা উভয়ই বিনষ্ট করা হয়।

নবি মুহাম্মদ কিশোরোত্তীর্ণ অবস্থায় এ যুদ্ধে গমন করেছিলেন। এ যুদ্ধে তিনি তিরের আঘাত থেকে তাঁর চাচাদের রক্ষার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। নবি-জীবনে প্রবেশের আগে এ-ই ছিলো তাঁর প্রথম ও শেষ যুদ্ধ।



নবীজি