আল হিন্দ (ভারতবর্ষ) যেভাবে ব্রিটিশদের মাধ্যমে লুন্ঠিত হল, রাজা হল ফকির- ফকির হল রাজা

800px-Fort_St._George,_Chennaiশিল্প বিপ্লব পূর্ব পৃথিবীতে আল হিন্দ বা ভারতবর্ষ ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী একটি ভূমি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই ভূমির কথা উল্লেখ করেছেন আল হিন্দ বলে। ৭১২ সালে মুহাম্মদ বিন কাসিমের আগমনের মাধ্যমে এই ভারতবর্ষের সিন্ধু প্রদেশ ইসলামী খিলাফতের অন্তর্ভুক্ত হয়। বাংলা থেকে বেলুচিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত এই ভূমিকে একত্রিত অবস্থায় রেখে কেন্দ্রীয়ভাবে শাসন করেছে একমাত্র মুসলিম শাসকরাই।

আসুন জেনে নিই, মুসলিম শাসনাধীন অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী ভূমি আল হিন্দ কিভাবে পরিণত হল
পৃথিবীর দরিদ্রতম তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশে।

 

মুঘল আমল

ইউরোপীয়ানদের আগমনের পূর্বে, পাক ভারত উপমহাদেশ প্রায় সাড়ে তিনশ (১৫২৬-১৮৫৮) বছর ধরে মুঘলরা শাসন করেছেন, তারা ছিলেন ক্ষমতাধর শাসক এবং যাদের ব্যবসা বাণিজ্য সম্পর্কে ভালো জ্ঞান ছিল। এই সময়ে ভারত অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ছিল এবং নিজেদের স্বর্ণযুগ পার করেছে। ১৭শ শতাব্দী পর্যন্ত ভারতকে পুরোপুরি ব্রিটিশরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি, সাম্রাজ্যবাদীদের কব্জামুক্ত ছিল আল হিন্দ। এরপর তাদের লুন্ঠনের কারণে অর্থনীতিতে পতন শুরু হতে থাকে, গবেষণায় প্রমাণিত gross domestic surplus goods এর হিসাবে সারা বিশ্বের অর্থনীতির ২৫% (অর্থাৎ চার ভাগের এক ভাগ) অংশ ছিল ভারতে, যা ছিল সেই সময়েও বিশ্বের ২য় সর্বোচ্চ, গ্রেট ব্রিটেনের কোষাগার থেকেও বেশি।

তিন শতাব্দীতে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির চিত্রঃ

  • ১৫০০ – বিশ্বের অর্থনীতিতে ভারতের ২৪.৫% শেয়ার ছিলো, যা ছিলো চায়নার পর (২৫%) দ্বিতীয় (• ^ Angus Maddison (2003). The World Economy: Historical Statistics, OECD, Paris)
  • ১৬০০– ভারতের আয় ছিলো ১৭.৫ মিলিয়ন পাউন্ড যা গ্রেট ব্রিটেনের সমগ্র রাজকোষের থেকেও বেশি ছিলো (১৬ মিলিয়ন পাউন্ড) (• ^ Bowen, H. V. Business of Empire: The East India Company and Imperial Britain, 1756-1833 (2006), 304pp)
  • ১৭০০- ভারতের অর্থনীতি ছিলো বিশ্ব অর্থনীতির ২৪.৪%, যা বিশ্বের বৃহত্তম  (• ^ Kumar, Dharma and Meghnad Desai, eds. The Cambridge Economic History of India: Volume 2, c.1751-c.1970 (1983).)

ইউরোপিয়ানদের আগমন ও অর্থনীতির পতন

ইউরোপীয়ানদের উন্নতির সাথে সাথে বিশ্বের পরিবর্তন ঘটতে লাগল, যার মধ্যে একটি হল ভারতের অর্থনীতির তীব্র পতন। তাদের নানাবিধ সংস্কারের মাধ্যমে এই পতনের জন্য তারাই দায়ী। দুইভাবে এই পতন ঘটানো হয়েছে, পতনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কারণ, ব্রিটিশদের বৈষ্যম্যমূলক নীতির মাধ্যমে ২০০ বছরের শাসন, তারা ভারত থেকে কম দামে কাঁচামাল কিনত এবং ভারতীয় বাজারের তুলনায় চড়া দামে বিক্রি করত। যার ফলে, changed the whole scenario of the most powerful economy of the world to decline from its position from 22.3 % in 1700 AC to a drastic dip of 3.8% in 1952. সমগ্র দৃশ্যপটের আমূল পরিবর্তন ঘটে, এবং বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির দেশটি ২২.৩% থেকে পতন ঘটে ১৯৫২ সালে চলে আসে, ৩.৮% এ।

২০০ বছরের সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে, একটি শীর্ষ অবস্থান থেকে দেশটির অর্থনীতি সাম্রাজ্যবাদের কবলে আক্রান্ত হয়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কলোনিয়াল যুগের প্রভাবে খাজনা, কর, সম্পত্তি কর ইত্যাদির প্রভাবে অর্থনীতিতে ধ্বস নামে, ভারতীয় শিল্প বন্ধ হয়ে যায়, এবং বাধ্য হয়ে লোকজন ইংরেজদের পণ্য কিনতে শুরু করে, ফলে উৎপাদন কমে আসে এবং লোকজনের অর্থ হ্রাস পায়।

বাংলার নবাবদের অপসারণের পর ইংরেজরা শুরু করল সম্পদ পাচার, লুটপাট আর অব্যবস্থাপনা। ফলাফলস্বরুপ- ভারতবর্ষের সবচেয়ে সমৃদ্ধ প্রদেশ বাংলাকে উপহার দিয়েছে একটি ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ, যে দুর্ভিক্ষে বাংলার প্রতি তিন জনে একজন ব্যক্তি মারা যায় বা এক তৃতীয়াংশ ব্যক্তি মারা যায়, বাংলা ১১৭৬ সালে সংগঠিত এই দুর্ভিক্ষ পরিচিত ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে।

একইভাবে, ১৯৪৭ এ ভারতবর্ষকে বিভক্ত করে চলে যাওয়ার পূর্বে আবার এল দুর্ভিক্ষ, সেটা এই বাংলাতেই, যা পরিচিত তেতাল্লিশ(১৯৪৩ সালে সংগঠিত) এর মন্বন্তর নামে। এ দুর্ভিক্ষে প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ মারা যায়।

রসচাইল্ড পরিবারের নেতৃত্বে ভারতবর্ষ যেভাবে শোষিত হলঃ

ভারতবর্ষ এবং সিন্ধু সভ্যতা আগে থেকেই অবকাঠামোগত এবং অর্থনৈতিকভাবে উন্নত এবং আধুনিক একটি সভ্যতা ছিল প্রায় ৪০০০ বছর ধরে, যখন ব্রিটিশরা ভারতবর্ষের সমুদ্র উপকূলে জাহাজ ভিড়ালো, তখনো এবং এরপর থেকেই এই ব্রিটিশদের নেতৃত্বে ইউরোপিয়ান কলোনিয়দের কারণে আমরা হয়ে গেলাম দরিদ্র, অনগ্রসর এবং অনুন্নত এক দেশ।

কিভাবে তারা এটা করেছিল?
সহজ, তারা আমাদের সম্পদ চুরি করেছে প্রকাশ্যে, নির্লজ্জভাবে, যা আজ পর্যন্ত চলছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাধ্যমে নানাবিধ উপায়ে। এখানে, আমরা সেটাই দেখাব কিভাবে ভারতবর্ষ এবং এই জনপদের জনগণের কাছ থেকে ইস্ট ইন্ডীয়া কোম্পানির নেতৃত্বে সম্পদ লুট শুরু হয়েছিল যা আজ পর্যন্ত চলে আসছে, কিন্তু এমনভাবে বর্তমানে চলছে যা আমরা দেখতে পাই না কিংবা দেখলেও আমরা বুঝতে পারি নাঃ

১৬০০ সালে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ভারতের সাথে বাণিজ্যের চার্টার (অনুমোদনপত্র) প্রদান করা হল

New+Picture
ইস্ট ইন্ডীয়া কোম্পানি

কোম্পানিটি একদল সমুদ্রের দস্যুদের জাহাজে করে পাঠানো শুরু করল ‘ব্যবসায়ী’ নাম প্রদান করে।
New+Picture+%283%29
এই সামুদ্রিক দস্যুরা ভারতবর্ষের সমুদ্র তীরে অবতরণ করতে লাগল এবং সুকৌশলে দুর্গ গড়ে তুলতে শুরু করল বিভিন্ন স্থানে, যেমন একটি স্থান হচ্ছে চেন্নাই।
New+Picture+%282%29
New+Picture+%284%29
রসচাইল্ড পরিবার ছিল বাণিজ্য কোম্পানি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মালিক। ১৮৫৭ সালে, তারা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সাথে একত্রীত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

ভারতবর্ষে বাংলা প্রদেশ দখল করার পর, রসচাইল্ডেরা একটি নৈরাজ্যমূলক দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসন চালু করল, যাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল নির্লজ্জভাবে বাংলার অগণিত ধন সম্পদ লুন্ঠন করা, যা ছিল তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ প্রদেশ।

New+Picture+%285%29
নবাব সিরাজউদ্দৌলার পদাতিক বাহিনী, বহনযোগ্য পাটাতনের উপর ১৭৫৭ সাল

১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে, ক্লাইভ এবং ব্রিটিশ বাহিনীর বাংলা দখল করে ইস্ট ইন্ডীয়া কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে, এবং পরবর্তীতে ব্রিটিশ শাসন। ছবি-( A print from “The Illustrated London News”, (23 September 1893). Heritage-Images 2008 – All Rights Reserved )

নবাব, রাজা এবং জমিদারদের বহু মূল্যবান সম্পদ ডাকাতি লুট করা হল। নিচের ছবিটি তেমনি একটি মূল্যবান সম্পদ যা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি লুট করেছিল।

New+Picture+%286%29

রসচাইল্ড পরিবার বাংলা থেকে লুট করা এই বিশাল স্বর্ণ লণ্ডনে পাচার করে দেয়। এটা ছিল বাংলা থেকে লুট করা সম্পদ স্বর্ণ যার মাধ্যমে রসচাইল্ড পরিবার ইংল্যাণ্ডে ব্যক্তি মালিকানাধীণ ব্যাংক ‘ব্যাংক অফ ইংল্যাণ্ড’ প্রতিষ্ঠা করেছিল।

New+Picture+%287%29
ব্যাংক অব ইংল্যাণ্ডের ভূ-গর্ভস্থ ভল্টের চিত্র। সোনার বার ছবিতে দেখা যাচ্ছে।

পরবর্তী দশকে, রসচাইল্ড পরিবার আমেরিকাতে ফেডারেল রিসার্ভ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে, যা আজ পর্যন্ত আমেরিকান জনগণের সম্পদ লুট করে টিকে আছে। রসচাইল্ড পরিবার এরপর বিশ্ব ব্যাংক, আই এম এফ এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে।

New+Picture+%288%29

রসচাইল্ড পরিবার বিশ্ব ব্যাংক, আই এম এফ, দ্য ব্যাংক ফর ইন্টারনেশনাল সেটেলমেন্টকে ব্যবহার করেছে তাদের তৃতীয় বিশ্ব থেকে লুট করা সম্পদকে একটি বৈধ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ প্রদানের জন্য। সিটি ব্যাংক, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ইত্যাদি ব্যাংকগুলো রসচাইলন্ড পরিবারের গোপন সমর্থন এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং তারা একযোগে তৃতীয় বিশ্ব এবং ভারতে সম্পদ লুট করতে থাকে।

১৮৫৭ সালের আজাদী আন্দোলনঃ

যখন ভারতীয়রা ১৮৫৭ সালে বিদ্রোহ করে, তাদেরকে জানানো হল ইস্ট ইন্ডীয়া কোম্পানি বিলুপ্ত হয়েছে, এবং ভারতকে সরাসরি ক্রাঊন’ শাসন করবে।
New+Picture+%2810%29

New+Picture+%289%29

পরিহাসের বিষয়, অনেক ভারতীয় আজকে পর্যন্ত জানে না, ব্রিটিশরা ক্রাঊন’ বলে যা রাজা বা রাণীকে বুঝায় নি, বরং লন্ডনের একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন কর্পোরেশনকে বুঝিয়েছিল যাদেরকে সেই একই রসচাইল্ড পরিবার নিয়ন্ত্রন করছে, যারা এর আগে ইস্ট ইন্ডীয়া কোম্পানির মালিকানা করত।

ভারতীয়দেরকে অতি সহজে নাম নকশা বদলের খেলায় ধোঁকা দেয়া হল !

ভারতে বৈষ্যম্য এবং শোষণ, সম্পদের অপব্যবহার ইত্যাদি এই ক্রাঊনের অধীনে একটানা চলল ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত। ১৯৪৭ এ ভারতের জনগণ আরও একবার প্রতারিত হল এই ভেবে যে, তারা স্বাধীনতা অর্জন করেছে পন্ডিত নেহরু জিন্নাহ, গান্ধী প্রমুখের আন্দোলনের মাধ্যমে।

লুটেরা শাসক চলে গেল, রয়ে গেল তাদের দালাল শ্রেনীঃ

আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, বর্তমান দেশটিতে সবচেয়ে ধনী লোকেরা হল রাজনীতিবিদেরা, যারা এখনো চুরি ডাকাতি লুন্ঠন চালিয়ে যাচ্ছে ইস্ট ইন্ডীয়া কোম্পানি রসচাইল্ড পরিবারের অলিখিত কর্মী হিসেবে।

প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ভারতীয় বর্তমানে দৈনিক ৫০ রুপির নিচে আয় করে অথচ দেশটির পার্লামেন্টারিয়ানরা কোটিপতি।

রসচাইল্ড পরিবার আত্মীয়তার মাধ্যমে ব্রিটিশ রাজ পরিবারে মিশে আছে এবং ইউরোপের বিভিন্ন অভিজাত পরিবারেও আছে।

কোহিনূর হীরাঃ সম্পদ চুরির নির্লজ্জ উদাহরণ-ভারত থেকে যে কোহিনূর হিরাটি রবার্ট ক্লাইভের মাধ্যমে চুরি করা হয়েছিল সেটা উপহার দেয়া হল ব্রিটিশ রানীকে।


ছবিতে রাণী এলিজাবেথের মুকুটে পায়রার ডিমের আকৃতির কোহিনূর হীরাটি দেখা যাচ্ছে।

ইংরেজদের লুটপাট সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মন্তব্যঃ
“সিরাজউদ্দৌলাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য উমিচাঁদ-মীর জাফরের সাথে কোম্পানীর যে ষড়যন্ত্রমূলক চুক্তি সম্পাদিত হয়, তার অর্থনৈতিক দাবী পূরণ করতে গিয়ে বাংলার রাজকোষ শূণ্য হয়ে পড়ে। পূর্বে বলা হয়েছে যে, এ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী কোম্পানীকে ভুয়া ক্ষতিপূরণ বাবদ দিতে হয় একশ লক্ষ টাকা। ইউরোপীয়দেরকে পঞ্চাশ লক্ষ, হিন্দু প্রধানকে বিশ লক্ষ এবং আরমেনীয়দেরকে সাত লক্ষ টাকা। বিপ্লব ত্বরান্বিত করার জন্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার পূর্বেই ক্লাইভকে দিতে হয় বায়ান্ন লক্ষ টাকা” (Fall of Sirajuddowla- Dr. Mohar Ali)

“১৭৭৬ সালের দুর্ভিক্ষে বাংলার এক তৃতীয়াংশ লোক প্রাণত্যাগ করে। কিন্তু রাজস্ব আদায়ের বেলায় কোন প্রকার অনুকম্পা প্রদর্শিত হয়নি। দুর্ভিক্ষ যখন চরম আকার ধারণ করে, তখন পূর্বের বৎসরের তুলনায় ছয় লক্ষ টাকা অধিক রাজস্ব আদায় করা হয়, বাংলা ও বিহার থেকে পরবর্তী বছর অতিরিক্ত চৌদ্দ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়।
মানব সন্তানেরা যখন ক্ষুধা তৃষ্ণা ও মৃত্যু যন্ত্রণায় আর্তনাদ করছিল, তখন তাদের রক্ত শোষণ করে পৈশাচিক উল্লাসে নৃত্য করছিল ইংরেজ ও তাদের রাজস্ব আদায়কারীগণ। এসব রাজস্ব আদায়কারী ছিল কোলকাতার হিন্দু বেনিয়াগণ, সুদী মহাজন ও ব্যবসায়ীগণ। মানবতার প্রতি এর চেয়ে অধিক নির্মমতা ও পৈশাচিকতা আর কি হতে পারে ?” (Badel powel-Land system etc._British policy & the Muslims in Bengal-A.R Mallick)

“ব্রিটিশ আমলে বাংলার অর্থনীতি মানেই হলো-সুপরিকল্পিত শোষণের মর্মভেদী ইতিহাস। ঐতিহাসিকরা মোটামুটি হিসাব করে বলেছেন, ১৭৫৭ থেকে ১৭৮০ পর্যন্ত মাত্র তেইশ বছরে বাংলা থেকে ইংল্যান্ডে চালান গেছে প্রায় তিন কোটি আশি লক্ষ পাউন্ড অর্থাৎ সমকালীন মূল্যের ষাট কোটি টাকা। কিন্তু ১৯০০ সালের মূল্যমানের তিনশো কোটি টাকা”। (I.O. Miller, quoted by Misra, p 15)

এডমান্ড বার্ক এর উক্তিঃ “আমাদের আজ যদি ভারত ছাড়তে হয়, তাহলে ওরাং ওটাং বা বাঘের চেয়ে কোন ভালো জানোয়ারের অধিকারে যে এদেশ ছিল তার প্রমাণ করবার কিছুই থাকবে না” (আবদুল মওদুদ-মধ্যবিত্ত সমাজের বিকাশ, পৃ ৬৪)

কোম্পানীর শাসন আমল সমাপ্তির পূর্বক্ষণে জন ব্রাইট বলেছিলেন, “ ভারতের নিরীহ জনগণের উপর একশ বছরের ইতিহাস হল অকথ্য অপরাধসমূহের ইতিহাস” (Oxford History of India: p 680)

সংকলন-সরল পথ