নবীজির শহরে নবীজি

সেদিন ছিলো শুক্রবার। নবীজি মদিনার অদূরে বনু সালেমের পাশে জুমা আদায় করলেন।তারপর তিনি প্রবেশকরতে থাকলেন ইয়াসরিবে, যে শহর তাঁকে বরণ করে নি‍য়ে মদিনাতুন্নবি হয়ে উঠবে; নবীর শহর হয়ে ওঠার বিরল ভাগ্য নিয়ে আসা সেই দিনের মতো অভাবিত দিন মদিনা ও মদিনাবাসীর জীবনে আর আসেনি।

রবিউল আউয়াল মাসের জুমআর দিন কুবা হতে বিদায় নিয়েনবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্র মদিনার দিকে রওনা হলেন। আনসারগণ নবীজিকে কাছে পাওয়ার অপার্থিব পুলক বুকে নিয়ে আনন্দে উদ্ধেলিত হয়ে নবীজির সওয়ারির চারপাশ ঘিরে অগ্রসর হচ্ছিলেন। কেউ পায়ে হেঁটে, আবার কেউবা বাহনে সওয়ার হয়ে। নবীজির উষ্ট্রীর লাগাম ধরার জন্য প্রত্যেকেই সম্মুখে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। মদিনাবাসী খুব ধনী ছিলো না, কিন্তু এই মহান মানব, এই প্রিয় নবীজি যেন তাঁর ঘরেই অবস্থান করেন, এ-ই ছিল প্রতিটি আনসারির মনের বাসনা। নারী ও শিশুরা আনন্দে তারানা গাইছিলো।

যে আনসারির বাড়িই সামনে পড়তো, তিনি নবীজিকে অনুরোধ করে বলতেন, ‘আমার গরিবখানায় অবস্থান করুন, হে রাসূলুল্লাহ।’ কিন্তু নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমরা উষ্ট্রীকে নিজের মতো চলতে দাও; সে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আদেশপ্রাপ্ত। যে জায়গায় অবস্থানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেখানে গিয়ে নিজেই সে থেমে যাবে।’ উষ্ট্রীটি সেভাবেই চলতে থাকলো। অবশেষে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাতুল বংশ বনু নাজ্জারের এলাকায় হযরত আবু আইউব আনসারি রাযিয়াল্লাহু আনহুর বাড়ির সামনে গিয়ে উষ্ট্রী বসে পড়্লো। নবীজিতাঁর ঘরেই মেহমান হলেন এবং বেশ কিছুদিন তাঁর ঘরেই অবস্থান করলেন।

তথ্যসূত্র :সিরাতে খাতামুল আম্বিয়া, মুফতি শফি;আর-রাহিকুল মাখতুম, সফিউর রহমান মোবারকপুরি।