জিহাদের হাকীকত, হিকমত এবং কিছু ভ্রান্তির নিরসন – মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মালেক [পর্ব -১]

[মাকতাবাতুল আশরাফের স্বত্বাধিকারী শ্রদ্ধেয় জনাব মাওলানা মোঃ হাবিবুর রহমান খান সাহেব, আল ইমামুল মুজাহিদ আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রহঃ) এর মুবারক সংকলন ‘কিতাবুল জিহাদ’-এর অনুবাদ প্রকাশ করার সংকল্প করলে আমাকে এর একটি ভূমিকা লিখতে বলেন। কিন্তু আমার মনে হয়েছে যে এর বিশেষ কোনো প্রয়োজন নেই, কেননা তিনি ইতিপূর্বে আয়াতুল জিহাদ নামে একটি কিতাব প্রকাশ করেছেন যাতে জিহাদ সংক্রান্ত অধিকাংশ আয়াত তরজমা ও সংক্ষিপ্ত তাফসীরসহ সন্নিবেশিত হয়েছে। জিহাদের উদ্দেশ্য ও উপকারিতা এবং এর ফলাফল ও যথার্থতার ব্যাপারে যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর উক্ত কিতাবেই পাওয়া যেতে পারে। থাকলো জিহাদের ফজিলত সম্পর্কীয় দিক তো এর সিংহভাগ বিষয়ে বক্ষ্যমাণ কিতাবের বিদ্যমান রয়েছে জিহাদের জন্য ফিকহের কিতাব সমূহ বিদ্যমান রয়েছে ‘কুরআন’ ও ‘সুন্নাহ’-য় স্পষ্টভাবে উল্লেখিত মাসাইল বলুন বা কুরআন সুন্নাহ থেকে আহরিত মাসাইলই বলুন, অত্যন্ত সুবিন্যস্ত ও স্পষ্টভাবে ফিকহের কিতাব সমূহে বিদ্যমান রয়েছে। মুজাহিদগণের পবিত্র সিরাতের একটি উল্লেখযোগ্য আলোচনা বক্ষমান কেতাবের দ্বিতীয় অংশে পাওয়া যাবে।

মোটকথা ভূমিকা লেখার তেমন কোনো প্রয়োজন আমার কাছে অনুভূত হচ্ছিল না তারপরও তাঁর বারবার বলায় পাঠকবৃন্দের সামনে কিছু কথা পেশ করছি। আল্লাহ তা’আলা একে কবুল করুন, আমীন।]

জিহাদের পরিচয় উদ্দেশ্য ও ফলাফল

‘জিহাদ’ শব্দটির একটি সাধারণ অর্থ এবং একটি পারিভাষিক অর্থ রয়েছে। জিহাদের সাধারণ অর্থ হলো, আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে, শরীয়তের শিক্ষা ও নির্দেশনা অনুযায়ী ইসলামের কালিমা বুলন্দ করার জন্য যে ত্যাগ-তিতিক্ষা, কষ্ট ও মুশাককাত সহ্য করা হয়, তাই জিহাদ, তা যে কোন পথেই হোক বা যে কোন পন্থায়ই হোক না কেন।

কিন্তু ‘জিহাদ’ যা শরীয়তের একটি বিশেষ পরিভাষা, তার অর্থ হল, আল্লাহর কালিমা বুলন্দ করা, ইসলাম ও মুসলমানদেরকে রক্ষা করা, মুসলমানদের শক্তি বৃদ্ধি করা ও কাফের মুশরিকদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্বকে চূর্ণ করার জন্য আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কাফের মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ করা।

‘জিহাদে শরয়ী’র আসল অর্থ তাই। যা সাধারণ অবস্থায় ফরযে কিফায়া এবং বিশেষ অবস্থায় ফরযে ‘আইন’ হয়ে যায়।

জিহাদ বিধিবদ্ধ হওয়ার উদ্দেশ্যাবলী নিম্নরূপ:
১. যুল্ম ও অত্যাচারের প্রতিউত্তর দেওয়া।
২. অত্যাচারিত মুসলমানদের সাহায্য করা।
৩. অঙ্গিকার ভঙ্গের শাস্তি প্রদান করা।
৪. ফিত্না ফাসাদ নির্মূল করক এবং ন্যায় নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করা।
৫. কুফরের কর্তৃত্ব নির্মূল করা ও আল্লাহর কালিমাকে বুলন্দ করা।

এ প্রসঙ্গে নিম্নোক্ত আয়াতসমূহ মনোযোগ সহকারে অধ্যয়ন করুন—
আল্লাহ তা’আলা মুমিনদের উপর থেকে (কাফিরদের কর্তৃত্ব ও কষ্টদেওয়ার ক্ষমতা) হটিয়ে দিবেন। আল্লাহ কোনো বিশ্বাসঘাতক অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না।

তাদেরকে কাফেরদের সাথে লড়াই করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যারা আক্রান্ত হয়েছে; কেননা তারা নির্যাতিত হয়েছে। এবং নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে বিজয়ী করার ব্যপারে সামর্থবান। তাদের অন্যায়ভাবে নিজ নিজ গৃহ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, শুধু এই অপরাধে যে, তারা বলে, “আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ।”

যদি আল্লাহ একের মাধ্যমে অপরের শক্তি খর্ব না করতেন, তবে স্ব স্ব যুগে (খ্রিস্টানদের) গির্জা, (ইহুদীদের) উপাসনালয় এবং (মুসলমানদের) মসজিদসমূহ—যাতে অধিক পরিমাণে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়, সব গুড়িয়ে দেওয়া হত। (জিহাদ বিধিবদ্ধ হওয়ার উপকারিতা ও প্রতি যুগে এর বিদ্যমানতার  ইতিহাস উল্লিখিত হলো)

অবশ্যই আল্লাহ তার সাহায্য করবেন যে আল্লাহর (দ্বীনের) সাহায্য করবে (অর্থাৎ আল্লাহর কালিমা বুলন্দ করার বিশুদ্ধ নিয়তে জিহাদ করবে) নিঃসন্দেহে আল্লাহ শক্তিমান, পরাক্রমশালী। এরা এমন যে, যদি আমি তাদেরকে পৃথিবীতে কর্তৃত্ব দান করি তবে তারা নিজেরাও নামাযের পাবন্দী করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং (অন্যকে) সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করবে। এবং সকল কাজের পরিণতি আল্লাহরই আয়ত্বাধীন।
[সূরা হাজ্জ্ব : আয়াত ৩৮-৪১]

সুতরাং যারা আল্লাহর কাছে আখিরাতের বিনিময়ে দুনিয়ার জীবন বিক্রয় করে দেয় তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করুক এবং যে কেউ আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে অতঃপর নিহত হোক বা বিজয়ী হোক, আমি তাকে মহাপূণ্য দান করব। তোমাদের কী হল যে, তোমরা যুদ্ধ করছো না আল্লাহর পথে এবং অসহায় নরনারী ও শিশুদের জন্য, যারা বলে, “হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদিগকে এও জনপদ থেকে অন্যত্র নিয়ে যাও, এখানকার অধিবাসীরা যে অত্যাচারী! এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য কোনো সাহায্যকারী করে দাও। যারা মুমিন তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর পথে এবং যারা কাফের তারা যুদ্ধ করে তাগুতের পথে, অতএব তোমরা শয়তানের পক্ষাবলম্বনকারীদের সাথে যুদ্ধ করো, শয়তানের কৌশল অবশ্যই দুর্বল।
[সূরা নিসা : আয়াত ৭৪-৭৬]

শাইখুল ইসলাম হযরত মাওলানা শাব্বীর আহমদ উসমানী (রহঃ) বলেন, “অর্থাৎ দুই কারণে কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করা তোমাদের কর্তব্য—
১। আল্লাহর দ্বীনকে বুলন্দ করা।
২। কাফিরদের হাতে নির্যাতিত মুসলমানদেরকে মুক্ত করা।

মক্কাতে এমন লোক অনেক ছিল যারা রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে হিজরত করতে পারেন নাই। তাদের আত্মীয় স্বজন তাদের উপর নির্যাতন করতো, যাতে তারা পুনরায় কাফের হয়ে যান। তখন আল্লাহ তা’আলা মুসলমানদেরকে বললেন, “তোমাদের দুই কারণে যুদ্ধ করা উচিত। আল্লাহর দ্বীন বুলন্দ করার জন্য এবং মক্কার কাফেরদের হাতে নির্যাতিত মুসলমানদেরকে মুক্ত করার জন্য।”

৩। তোমরা কি সেইসব লোকদের সাথে যুদ্ধ করবেনা যারা নিজেদের শপথ ভঙ্গ করেছে এবং রাসূলকে ﷺ বহিষ্কার করার সংকল্প করেছে? এবং এরাই তোমাদের সাথে বিবাদের সূত্রপাত করেছে। তোমরা কি তাদের ভয় করো? আল্লাহ হলেন তোমাদের ভয়ের অধিকতর যোগ্য, যদি তোমরা মুমিন হও। যুদ্ধ করো ওদের সাথে, আল্লাহ তোমাদের সাথে তাদের শাস্তি দিবেন, তাদের লাঞ্ছিত করবেন, তাদের উপর তোমাদের বিজয়ী করবেন ও মুমিনদের চিত্ত প্রশান্ত করবেন। এবং তাদের মনের জ্বালা দূর করবেন৷ এবং আল্লাহ যাকে চান তাকে তাওবা নসীব করবেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। তোমরা কি মনে করো যে, তোমাদিগকে এমনি ছেড়ে দেওয়া হবে যাবৎ না আল্লাহ জানবেন তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে এবং আল্লাহ, তাঁর রাসূল ﷺ এবং মুমিনগণ ছাড়া অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করে নাই। তোমরা যা করো সে ব্যপারে আল্লাহ সবিশেষ অবগত। [সূরা তাওবাহ : আয়াত ১৩-১৬]

হযরত উসমানী (রহঃ) বলেন, “জিহাদ বিধিবদ্ধ হওয়ার মূল হিকমত এই যে পূর্ববর্তী উম্মতের কাফের ব্যক্তিদের ঔদ্ধত্য যখন সীমা অতিক্রম করতো তখন আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে ব্যাপক আযাব দিয়ে সমূলে ধ্বংস করে দিতেন। কিন্তু এই উম্মতের কাফেরদের জন্য জিহাদ বিধিবদ্ধ হয়েছে। এর মাধ্যমে খোদাদ্রহী ব্যক্তিদেরকে আল্লাহ তা’আলা তার অনুগত বান্দাদের হায়ে শাস্তি প্রদান করেন। এতে একদিকে যেমন কাফিরদের লাঞ্ছনা হয়, অপরদিকে আল্লাহর অনুগত বান্দাদের মর্যাদা বৃদ্ধি ঘটে এবং তাদের বিজয় ও কর্তৃত্ব প্রকাশিত হয়। এবং মুমিনদের অন্তর এই ভেবে প্রশান্ত হয় যে, গতকাল পর্যন্ত যেসব কাফের তাদের উপর নির্যাতন করতো, আজ আল্লাহ তা’আলার অনুগ্রহে তারাই তাদের অনুকম্পা বা ইনসাফের মুখাপেক্ষী হয়েছে। অপরদিকে কাফিরদের জন্যেও এই শাস্তি বিধানের মধ্যে একটি উপকারী দিক এই রয়েছে যে, এতে করে শাস্তিলাভের পর ও তাদের জন্য তাওবার দরজা খোলা থাকে এবং এ থেকে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থাকে। এসব আয়াতে জিহাদ বিধিবদ্ধ হওয়ার আরো একটি হিকমত এই উল্লেখিত হয়েছে যে, আল্লাহ তা’আলা জিহাদের মাধ্যমে পরীক্ষা করতে চান কারা শুধু মৌখিক বন্দেগীর দাবিদার এবং কারা প্রকৃতপক্ষেই আল্লাহর জন্য জান মাল বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত এবং সাথে সাথে কারা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই নেক আমল করে আল্লাহ পাক তাও জানেন। [তাফসীরে উসমানী, পৃ. ২৪৪-২৪৫]

৪। যারা কুফরী করে এবং অপরকে আল্লাহর পথ হতে নিবৃত্ত করে, আল্লাহ তাদের কর্ম ব্যর্থ করে দেন।— অতএব যখন তোমরা কাফিরদের সাথে যুদ্ধে মোকাবিলা করো তখন তাদের গর্দানে আঘাত করো, পরিশেষে যখন তোমরা তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পরাভূত করবে তখন তাদেরকে কষে বেঁধে ফেলো; অতঃপর হয় অনুগ্রহ, নয় মুক্তিপণ। তোমরা জিহাদ অব্যাহত রাখবে যাবৎ না যুদ্ধ তার অস্ত্র নামিয়ে ফেলে। এই বিধান। এবং আল্লাহ ইচ্ছা করলে প্রতিশোধ নিতে পারতেন কোনো আযাব প্রেরণ করে কিন্তু তিনি চান তোমাদের একজনকে অপরজন দ্বারা পরীক্ষা করতে। (মুমিনদের মধ্যে কারা খাঁটি এবং কাফেরদের মধ্যে কারা শিক্ষা গ্রহণ করে) যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তিনি কখনো তাদের কর্ম বিনষ্ট হতে দেন না। তিনি তাদেরকে (জান্নাতের পানে) পথ দিবেন এবং (আখিরাতের সকল মঞ্জিলে) তাদের অবস্থা ভালো করে দিবেন এবং তাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে যার কথা তিনি তাদেরকে জানিয়েছিলেন।

হে মু’মিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য করো; আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করবেন এবং তোমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখবেন।

যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য রয়েছে দুর্ভোগ এবং তিনি তাদের কর্ম ব্যর্থ করে দিবেন।
[সূরা মুহাম্মাদ : আয়াত ১, ৪-৮]

৫। এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকো যাবৎ না ফিতনা দূরীভূত হয় এবং দ্বীন একমাত্র আল্লাহর জন্য হয় এবং যদি তারা বিরত হয় তবে তারা যা করে আল্লাহ তা সম্যক দ্রষ্টা।

যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে জেনে রাখো, আল্লাহই তোমাদের অভিভাবক। কত উত্তম অভিভাবক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী।
[সূরা আনফাল : আয়াত ৩৯-৪০]

হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ শফী (রহঃ) বলেন, “দ্বীন অর্থ বিজয় ও কর্তৃত্ব। এই অর্থে আয়াতের তাফসীর এই হবে যে, মুসলমানদের জন্য কাফেরদের সাথে ঐ সময় পর্যন্ত লড়াই জারি রাখা উচিত যতক্ষণ না মুসলমানরা তাদের অত্যাচার থেকে নিরাপদ হয়ে যায় এবং দ্বীন ইসলামের বিজয় অর্জিত হয় যাতে সে অন্যদের অত্যাচার থেকে মুসলমানদেরকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়।”

কিছুদূর গিয়ে লিখেন,
“এই তাফসীরের সারকথা হল, মুসলমানদের উপরে ততক্ষণ পর্যন্ত ইসিলামের দুশমনদের সাথে জিহাদ ও ক্বিতাল জারী রাখা ওয়াজিব যতক্ষণ না মুসলমানদের উপর তাদের অত্যাচারের ফিতনা বন্ধ হয় এবং ইসলাম সকল ধর্মের উপর বিজয়ী হয়। এই অবস্থা ক্বিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে সৃষ্টি হবে তাই জিহাদের বিধানও ক্বিয়ামত পর্যন্ত চলমান থাকবে।” [মা’আরিফুল কুরআন খ. ৪ পৃ. ২৩৩]

৬। যাদের প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করা হয়েছে তাদের মধ্যে যারা আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান আনে না এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ যা হারাম করেছেন তা হারাম গণ্য করে না এবং সত্য দ্বীন অনুসরণ করে না; তাদের সাথে যুদ্ধ করবে যাবৎ না তারা নত হয়ে স্বহস্তে জিযইয়া দেয়। [সূরা তাওবা : আয়াত ২৯]

হযরত উসমানী (রাহঃ) বলেন,
“মুশরিকদের বিষয়ে খতম এবং দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি কিছুটা শৃঙ্খল হয়ে যাওয়ার নির্দেশ আসল, আহলে কিতাবের শক্তি ও দর্প চূর্ণ কর। মুশরিকদের তো অস্তিত্ব হতেই আরবকে পবিত্র করা উদ্দেশ্য ছিল, কিন্তু ইয়াহুদী নাসারার ক্ষেত্রে তখন পর্যন্ত কেবল এতটুকুই লক্ষ্য ছিল, তারা যাতে ইসলামের বিরুদ্ধে শক্তি নিয়ে দাঁড়াতে না পারে এবং তার প্রচার-প্রসার ও উন্নতির পথে অন্তরায় হয়ে না থাকে৷ তাই অনুমতি দেওয়া হয় যে, তারা যদি অধীনস্ত প্রজা হয়ে জিযইয়া দিতে রাজি থাকে, তবে কোনো অসুবিধা নেই প্রজা করে নাও। তারপর ইসলামী সরকারের দায়িত্ব তাদের জান-মালের নিরাপত্তা বিধান করা। পক্ষান্তরে তারা যদি জিযইয়া দিতে সম্মত না হয়, তবে মুশরিকদের অনুরূপ ব্যবস্থা তাদের বিরুদ্ধেও নেওয়া হবে (অর্থাৎ, জিহাদ ও লড়াই)। [তাফসীরে উসমানী (অনূদিত) খন্ড ২ পৃ. ১৯১]


অন্যান্য পর্বঃ
পর্ব ২
পর্ব ৩