মহিলাদের কিছু বর্জনীয় অভ্যাস – মুফতী মনসূরুল হক (দা.বা)

১. জরুরী আকায়িদ, ইবাদত, সহীহ কুরআন তিলাওয়াত, পিতা-মাতা, স্বামীর হক ও সন্তানের হক সম্পর্কে ইলম হাসিল করে না অথচ জরুরত পরিমাণ ইলম অর্জন করা ফরয। অনেক পিতা-মাতাও এ ব্যাপারে উদাসীন। কিছু দুনিয়াবী ইলম শিক্ষা দেওয়াকে যথেষ্ট মনে করে। (সুনানে ইবনে মাজাহ ,হাদীস নং ২২৪)

২. সময়ের পাবন্দি করে না। নামায-ইবাদত, খানা, গোসল ইত্যাদি সকল কাজে তারা দেরি করে; এতে সংশ্লিষ্ট লোকেরা পেরেশান হয়ে যায় এবং অনেক জরুরী কাজ নষ্ট হয়ে যায়। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৪১২)

৩. দুই তিন জন একত্রিত হলে অন্যের দোষ চর্চায় লিপ্ত হয়। অথচ অন্যের দোষ চর্চা করা কবীরা গুনাহ। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, “(হে মুমিনগণ!) তোমরা কারো দোষ অনুসন্ধান, করো না। আর একে অন্যের গীবত (অগোচরে দুর্নাম) করো না; তোমাদের কেউ কী স্বীয় মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? এটা তো তোমরা অবশ্যই ঘৃণা করে থাকো! আর আল্লাহ কে ভয় করো, নিঃসন্দেহে আল্লাহ বড় তাওবা কবূলকারী, দয়ালু”। (সূরায়ে হুজুরাতঃ ১২)

৪. আপোষে সালাম দেয়ার অভ্যাস খুবই কম। নিজ বাবা-মা, ভাই-বোন, স্বামী-সন্তানকেও তারা সালাম করতে অভ্যস্ত নয়, এমনকি কেউ তাদেরকে সালাম দিলে উত্তর দেয় না বা শুনিয়ে দেয় না। অথচ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরস্পরে সালাম আদান প্রদান করতে বলেছেন। (সহীহ বুখারী, হা. নং ২৮)

৫. চোগলখুরি তথা একের কথা অন্যের কাছে লাগানো অনেক মেয়েদের একটা বদ অভ্যাস। এ ধরণের অন্যায় কাজ থেকে বেঁচে থাকা খুবই জরুরী । হাদীসে এসেছে যে, এ গুনাহ কবরে আযাব বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। (সহীহ বুখারী হাদীস, নং ১৩৭৮)

৬. সাধারণত মেয়েদের মধ্যে নিজেকে প্রদর্শনের মানসিকতা অধিক লক্ষ্য করা যায়। যদি তারা সাজ-সজ্জা করে তাহলে তা একান্তই পরপুরুষ বা অন্য কোন নারীকে দেখানোর জন্য করে যা একেবারেই অনুচিত। মেয়েদের উচিত হলো যথাসম্ভব ঘরে বসে স্বামীকে খুশি করার জন্য বেশি বেশি সাজ-সজ্জা করা , স্বামীর মনকে খুশী করা, এবং তার দৃষ্টি হিফাযতের ব্যাপারে সহায়তা করা , এর জন্য মহিলারা আল্লাহর দরবারে অনেক সাওয়াব পাবে। (জামে তিরমিযী, হাদীস নং ১১৬১)

৭. বর্তমান মেয়েরা সাজ-সজ্জার নামে অনেক নাজায়িয ও হারাম কাজ করে থাকে। যেমন, বিধর্মী ও অসভ্য মেয়েদের মত স্টাইল করে চুল কাটা , ভ্রূ’প্লাক করা, বিউটি পার্লারে গিয়ে গোপন স্থানের লোম পরিষ্কার করানো ইত্যাদি। (সুনানে আবু দাউদ হা. নং ৪০৩১)

৮. মেয়েদের জন্য সমস্ত শরীর আবৃতকারী মোটা কাপড়ের এমন ঢিলেঢালা পোশাক পরা জরুরী যাতে করে শরীরের রং, ভাজ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আকার আকৃতি বোঝা না যায় । কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে আজকের মেয়েরা অনেকে বোরকা তো চেনেই না আর ঢিলেঢালা পোশাক পরতেও ভুলে গেছে, যার কারণে সমাজে নারী নির্যাতনের মত জঘন্য অপরাধ অপ্রতিরোধ্য গতিতে বেড়ে চলছে। (সূরা নূর: ৩১)

৯. অনেক মেয়েরা বাইরে পর্দা করে বের হলেও পারিবারিক জীবনে পর্দার ধার ধারে না। দেবর, ভাশুরদের সাথে পর্দার কথা চিন্তাও করে না। অথচ এদের সাথে পর্দা করার কথা হাদীসে খুবই গুরুত্বের সাথে এসেছে। দেবরকে মৃত্যু সমতুল্য বলা হয়েছে। (জামে তিরমিযী হা. নং ১১৭১)

১০. অনেকে বোরকা পরিধান করে কিন্তু চেহারা খোলা রাখে অথচ চেহারা সকল সৌন্দর্যের সমষ্টি; চেহারা আবৃত করা জরুরী। চেহারা, মাথা, চুল বা উভয় চোখ খোলা থাকলে বোরকা অর্থহীন হয়ে পড়ে, এমন পর্দা শরীআতে গ্রহণযোগ্য নয় । এতে তারা ফরয তরক করার গুনাহে লিপ্ত হচ্ছে। আর অনেকে এমন নকশী বোরকা পরে যে তাতে পুরুষদের আকর্ষণ আরো বেড়ে যায় এবং বোরকার মূল উদ্দেশ্য ভূলুন্ঠিত হয়। বোরকা মূল উদ্দেশ্য হলো, যাতে তার দিকে কারো আকর্ষণ সৃষ্টি না হয়। (সূরায়ে নূর: ৩১)

১১. কোথাও কোন প্রয়োজনে যেতে হলে, অযথা ঘোরাঘুরি করে যাত্রা বিলম্ব করে । শেষে গন্তব্যস্থানে অসময়ে এবং দুর্যোগ পোহায়ে পৌঁছতে হয়। অথচ অযথা বিলম্ব না করে একটু আগে বের হলেই পথের অনেক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। (জামে তিরমিযী হাদীস নং ২৩২৩)

১২. কোন স্থানে সফরে যাওয়ার সময় প্রয়োজনের অতিরিক্ত সামানপত্র নিয়ে বিরাট বোঝার সৃষ্টি করে, যা বহন করতে সঙ্গী পুরুষদের অনেক কষ্ট স্বীকার করতে হয়। বোঝা বহনের দায়-দায়িত্ব পুরুষদের মাথায় চাপিয়ে নিজেরা দিব্যি আরামে সফর করে থাকে। এমনটা করা একেবারেই অনুচিত। (সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৪৯৯৬)

১৩. হাতে টাকা থাকুক বা না থাকুক, কোন কিছু পছন্দ হলে তা অপ্রয়োজনীয় হলেও কিনতে হবে। এর জন্য ঋণ করতেও কোন দ্বিধা করে না। যদি ঋণ নাও করতে হয় তবু নিজ টাকা অপ্রয়োজনে খরচ করা বোকামি ও গুনাহের কাজ। যথা সম্ভব ঋণ করা থেকে বেঁচে থাকা উচিত । এতে যদি কষ্ট হয় হোক। হ্যাঁ, নিজের পছন্দের কোন জিনিস যদি স্বামীর নিকটও পছন্দনীয় হয় তাহলে ভবিষ্যতে যখন ঐ জিনিষের প্রয়োজন পড়বে তখন কিনবে। (সূরা আনআম আয়াত: ১৪১, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৪০৮)

১৪. কেউ কোন উপকার করলে তার শুকরিয়া আদায় করে না। বিশেষত: ঘরের বউ-ঝিরা প্রশংসার যোগ্য কোন কাজ করলেও শাশুড়ি কিংবা ননদরা তার শুকরিয়া আদায় করে না। এটা বড়ই সংকীর্ণমনা হওয়ার পরিচায়ক । হাদীসে এসেছে, যে ব্যাক্তি মানুষের শুকরিয়া আদায় করে না সে আল্লাহর শুকরিয়াও আদায় করে না অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তার শুকরিয়া কবুল করেন না। তাই কেউ কোন প্রশংসাযোগ্য কাজ করলে তার শুকরিয়া আদায় করা উচিত। আর এর জন্য জাযাকাল্লাহ খাইরান বলবে। এতে যার প্রশংসা করা হয় তার মধ্যে কাজের উৎসাহ উদ্দীপনা বহুগুণে বেড়ে যায় এবং আল্লাহ তা‘আলাও খুশি হন। (সহীহ বুখারী ,হাদীস নং ২৯,জামে তিরমিযী ,হাদীস নং ১৯৫৫)

১৫. শাশুড়িরা অনেক সময় পুত্রবধূদের কাজের মেয়ের মত মনে করে, কখনোই নিজের মেয়ের মত মনে করতে পারে না। যার কারণে অধিকাংশ যৌথ পরিবারে পুত্রবধূরা শাশুড়ি কর্তৃক নির্যাতিতা হয় এবং সংসারে কলহের আগুন লেগেই থাকে। সুতরাং পুত্রবধূকে নিজের মেয়ের সমান মর্যাদা দিতে না পারলে যত দ্রুত সম্ভব তাদেরকে পৃথক করে স্বাধীনভাবে চলার সুযোগ করে দেয়া জরুরী। (সহীহ বুখারী ,হাদীস নং ২৪৪৭, ফাতাওয়ায়ে শামী ৫/৩৬০)

১৬. পুত্রবধূরাও শাশুড়িদেরকে নিজ মায়ের মত ভাবতে পারে না। শাশুড়িকে তার প্রাপ্য অধিকার ও সম্মান থেকে বঞ্চিত করে। স্বামীকে নিজের একক সম্পদ মনে করতে চায় । যার কারণে সংসারে অনেক কলহের সৃষ্টি হয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬৮)

১৭. স্ত্রীরা স্বামীর ইহসান তথা দয়া ও অনুগ্রহ স্বীকার করতে চায় না। কেউ জীবনভর স্ত্রীর সব চাহিদা পূরণ করে এসেছে হঠাৎ একদিন তার কোন চাহিদা পূরণ করা হলো না তখন সে বলে ফেলে তোমার সংসারে এসে জীবনে সুখের মুখ দেখলাম না। এমনটা করা বড়ই অন্যায় ও না শোকরী এতে স্বামীর মন ভেঙ্গে যায়।  এটা মহিলাদের দোযখে যাওয়ার অন্যতম কারণ। আরেকটি বড় কারণ হলো, কথায় কথায় লানত ও বদ দু‘আ করা। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৯)

১৮. স্বামী স্ত্রীর জন্য পছন্দ করে কোন জিনিস আনলো, কিন্তু  ঘটনাক্রমে স্ত্রীর তা পছন্দ হলো না, তখন স্ত্রী স্বামীর মুখের উপর বলে দেয় আমার এটা পছন্দ হয়নি; আমি এটা পরবও না ছুইবও না। এটা অমানবিক। স্বামী কিছু আনলে পছন্দ না হলেও খুশি মনে গ্রহণ করা উচিত কারণ স্বামীকে খুশি করাই স্ত্রীর জন্য ইবাদত। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ২৯)

১৯. অনেক সময় টাকা, গহনা ইত্যাদি মূল্যবান জিনিস বালিশের নিচে বা খোলা যায়গায় রেখে দেয়, পরে হারিয়ে গেলে পরিবারের নিরপরাধ লোকদের দোষারোপ করতে থাকে। যা মারাত্মক গুনাহ। এগুলো সব সময় হেফাজতের সাথে নিরাপদ স্থানে রাখবে। (সূরায়ে হুজুরাত ১২, সহীহ বুখারী হাদীস  নং ২৪০৮)

২০. মহিলাদের মধ্যে কর্মতৎপরতা ও দূরদর্শিতার বেশ অভাব রয়েছে ; ব্যস্ততার সময়ে কোন কাজ তারা ঝটপট করতে পারে না; গতিমন্থরতা যেন তাদের একটা অংশ। এতে অনেক সময় সুযোগ নষ্ট হওয়ার কারণে আসল কাজ পণ্ড হয়ে যায়। অথচ একটু খেয়াল করলেই সমস্যার সমাধান হতে পারে। সুতরাং অতি দ্রুত বা অতি ধীরে কাজ করবে না বরং মধ্যম পন্থা অবলম্বন করবে। (জামে তিরমিযী,হাদীস নং ২০১২)

২১. দুই ব্যক্তি কোন বিষয়ে আলাপ করতে থাকলে অনেক মহিলা অযাচিতভাবে সেই কথায় অংশগ্রহণ করে এবং পরামর্শ দিতে থাকে। এটা বড়ই অভদ্রোচিত আচরণ। যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ কোন পরামর্শ না চায় ততক্ষণ পর্যন্ত একেবারে বোবা ও বধির হয়ে থাকা চাই। তেমনি ভাবে কোথাও দু’জন কথা বার্তা বলতে থাকলে আড়াল থেকে তা শ্রবণ করার চেষ্টা করবে না। কারণ এটা নাজায়িয। (সূরায়ে হুজরাত:১২,সহীহ বুখারী ,হাদীস নং ৭০৪২,৬৩৩৭)

২২. কোন কোন মহিলা মেয়েমহল থেকে এসে অন্য মহিলাদের অলংকার, শারীরিক গঠন, রূপ, পোশাক ইত্যাদির বর্ণনা নিজ স্বামীর কাছে করে থাকে। এর দ্বারা স্বামীর মন অন্য মহিলার দিকে আকৃষ্ট হলে যে নিজের কত বড় ক্ষতি হবে সে দিকে বিলকুল খেয়াল করে না। অতএব অন্য মেয়েলোকের রূপের প্রশংসা স্বামীর কাছে কক্ষনো করবে না; এটা নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারার ন্যায় অপরাধ। (মুসনাদে আহমদ ,হাদীস নং ৩৬০৮)

২৩. কারো সাথে কথা বলার প্রয়োজন হলে সে যত জরুরী কথা বা কাজেই লিপ্ত থাকুক না কেন সে দিকে খেয়াল না করে সে নিজের কথা বলবেই, ঐ ব্যক্তির কাজ বা কথা শেষ হওয়ার অপেক্ষা করে না। কিংবা অনুমতি নেওয়ার ও প্রয়োজন মনে করে না। এটা নিতান্তই বোকামি। (সহীহ বুখারী ,হাদীস নং ৬৩৩৭)

২৪. কেউ কিছু বললে পূর্ণ মনোযোগ সহকারে কথাগুলো শোনে না; এর মাঝে অন্য কাজ করতে থাকে বা ফাঁকে ফাঁকে কারো কথার উত্তর দিতে থাকে। ফলে বক্তা মনে কষ্ট পায় এবং সে যে জরুরী কথাগুলো বলতে এসেছে তার অনেকটাই শুনাতে ব্যর্থ হয়। এমনকি পরে কৈফিয়ত চাইলে বলে যে, এ কথা তো আপনি আমাকে বলেননি। অথচ বলা হয়েছে সে মনোযোগ দিয়ে শোনেনি। (সুনানে নাসাঈ, হাদীস নং ৪৯৯৬)

২৫. নিজের ভুল-ত্রুটি স্বীকার করতে চায় না। বরং যথাসম্ভব কথার ফুলঝুরি দিয়ে দোষ চাপা দিতে চায়; চাই তার কথার মধ্যে যুক্তি থাক বা না থাক। এটা খুবই গর্হিত কাজ; ভুল হলে তা সাথে সাথে স্বীকার করে নিবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুলের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আশ্বাস দিবে। কারো হক নষ্ট করে কষ্ট দিয়ে থাকলে তার থেকে মাফ চেয়ে নিতে দ্বিধা করবে না, কারণ অহংকার মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৪৫৮)

২৬. কোন কথা বা সংবাদ বলতে গেলে অসম্পূর্ণ বলে থাকে, যদ্দরুন ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয় এবং আসল কাজ ব্যাহত হয়। সুতরাং কথা বলার সময় বুঝিয়ে সম্পূর্ণ কথা বা ঘটনা খুলে বলবে যেন কোন সন্দেহের অবকাশ না থাকে। (সুনানে নাসাঈ হাদীস নং৪৯৯৬)

২৭. এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার বা আসার সময় অনেক মহিলা অবশ্যই একটু কাঁদবে। কান্না না আসলেও কান্নার ভান করবে, অন্যথায় লোকেরা বলতে পারে যে মেয়েটার মনে একটুও মায়া নেই, কত পাষাণ। এই খোটা থেকে বাঁচার জন্য কৃত্রিম কান্না হলেও তাদের কাঁদা চাই। অথচ এটা ভুল প্রথা। (সূরা সদঃ ৮৬)

২৮. অলসতাবশতঃ ফরয গোসল করতে দেরি করা মেয়েদের একটা চিরাচরিত অভ্যাস। আজকে বিকালে কারো মাসিক বন্ধ হলো, তা সত্ত্বেও সে অবশ্যই পরদিন দুপুরে গোসল করবে। আর এদিকে তিন চার ওয়াক্ত নামায স্বেচ্ছায় কাযা করে ফেলবে। অবশ্য অধিকাংশ মেয়েরা একথা জানে না যে, মাসিক যখনই বন্ধ হয়, তখনই গোসল করে নামায পড়া শুরু করতে হয়। চাই মাসিক সন্ধ্যার আগে বন্ধ হোক বা ফজরের আগে বন্ধ হোক। কোন ওয়াক্তের শেষের দিকে মাসিক বন্ধ হলেও ঐ ওয়াক্তের নামায তার জিম্মায় ফরয হয়ে যায়। ওয়াক্তের মধ্যে সময় না পেলে কাযা পড়া জরুরী। (জামে তিরমিযী, হাদীস নং ২৬২৩, ফাতাওয়ায়ে শামী, খ.১ পৃ. ৩৩৪ রশীদিয়্যাহ )

২৯. বর্তমান আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিতা মেয়েরা উযূ গোসল সম্পর্কীয় মাসআলা মাসায়েল ও জানে না। গোসল কখন ফরয হয়, ফরয গোসল কিভাবে করতে হয়, এধরনের অতীব জরুরী কিন্তু সহজ মাসআলা সর্ম্পকেও তারা অজ্ঞ। মুসলমানের সন্তান হয়েও যারা এতটুকু জানে না তাদের জন্য বড় বিস্ময় !! তবে এর জন্য শুধু তারা নয় তাদের বাবা মা ও দায়ী হবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ২২৪)

৩০. অনেক বোকা মহিলা স্বামী কর্মস্থান থেকে ফেরার সাথে সাথে তাকে শান্তি পৌঁছানোর পরিবর্তে, তার কানে সংসারের কলহ বিবাদের কথা পৌঁছায়। যদ্দরুন অল্পতেই স্বামীর মেজাজ বিগড়ে সামান্য বিষয়ে অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটে। তাই তেমন কিছু হয়ে থাকলে স্বামীর শরীর ও মন স্বাভাবিক ও শান্ত হওয়ার পর বলা এবং সঠিক সংবাদ বলা যাতে স্বামী বিষয়টা তদন্ত করলে মিথ্যুক সাব্যস্ত হতে না হয়। (সহীহ বুখারী,হাদীস নং ৩০৪)

৩১. অনেক ননদ ভাই বৌদের সহ্য করতে পারে না, এমনিভাবে অনেক ভাই বৌ ননদদের সহ্য করতে পারে না। এই মনোভাব সংসারকে অশান্তি ছাড়া আর কিছুই দিতে পারে না। সবার সাথে সুসম্পর্ক-সদ্ভাব বজায় রাখা এবং মিল মুহাব্বতের সাথে থাকা শরীআতে কাম্য। (সহীহ বুখারী ,হাদীস নং ৫৯৮৬, মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ২২৯০৬)

৩২. অনেক মেয়েলোক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে উদাসীন থাকে। অথচ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। সুতরাং নিজের শরীর, পোশাক, ঘর-দুয়ার পরিষ্কার ও পরিপাটি রাখবে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৩)

৩৩. কোন সন্তানকে হয়ত বেশী মুহাব্বত করে তার জন্য অনেক কিছু করে, এমনকি তার দোষ স্বীকার করতে চায় না। এটা ঠিক নয়। যোগ্যতার কারণে কারো প্রতি মুহাব্বত বেশী থাকতে পারে কিন্তু দেয়া নেয়ার ব্যাপারে সব সন্তানকে একই নজরে দেখা ইনসাফের দাবী। এর ব্যতিক্রম করলে অন্যদের উপর জুলুম করা হয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৫৮৭)

৩৪. অনেক মহিলা রোগ শোক চাপা দিয়ে রাখে, কাউকে বলে না। অনেক জিজ্ঞাসার পরে বললেও ডাক্তার এর কাছে যেতে চায় না। ঔষধ এনে দিলে তাও ঠিকমত খায় না। এতে অনেক পেরেশানি হয়। রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করে চিকিৎসার অযোগ্য হয়ে যায়। এটা বড়ই বোকামি। শরীর স্বাস্থ্য আল্লাহর তা’আলার অনেক বড় নিয়ামত। এটাকে সুস্থ রাখা জরুরী যাতে করে এ শরীর দিয়ে দ্বীন দুনিয়ার ভালো কাজ আনজাম দেয়া যায়। (সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৩৮৫৫)

৩৫. অনেক শিক্ষিতা মহিলা স্বামীর ঘরে আল্লাহ প্রদত্ত দায়িত্ব পালন করার চেয়ে বাইরে গিয়ে চাকুরী করাকে বেশি পছন্দ করে। অথচ সংসারের ব্যয়ভার বহন করা স্বামীর দায়িত্ব। তার দায়িত্ব হলো সন্তান ও সংসার সামলানো। (সূরা নিসা:৩৪)