মরুসিংহ: ওমর মুখতার

সময়টা ছিল ১৯৩১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর। আজ থেকে প্রায় ৮৭ বছর আগে এই দিনে ইতালিয়ান ঔপনিবেশিক সেনাবাহিনী ওমর মুখতার (রহিঃ)-এর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে। তিনি শাহাদাত বরণ করেন। সেই সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

ওমর মুখতার, ১৮৫৮ সালে অটোম্যান সম্রাজ্য নিয়ন্ত্রিত সিরেনাইকা অঞ্চলের এক হতদরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তরুণ বয়সে তিনি বাবাকে হারান। তার যৌবনের অধিক সময় পার করেন অভাব অনটনের মধ্যে দিয়ে। শহরের একজন মাশায়েখের যত্নআত্তিতে বেড়ে ওঠেন এবং তার কাছেই দ্বীনি জ্ঞানের পথ নির্দেশনা পান।

উন্নত জীবন ধারার জন্য ওমর সুপরিচিত ছিলেন। তিনি রাতে তিন ঘন্টার বেশী ঘুমাতেন না। রাতের শেষ তৃতীয় ভাগে আল্লাহ সুবহানাহু তাআলার ইবাদতের উদ্দেশ্যে উঠতেন। তখন থেকে ফজরের আগ পর্যন্ত কুরআন তিলাওয়াত করতেন। তিনি সম্পূর্ণ কুরআন হিফজ করেছিলেন। ভদ্র এবং অত্যন্ত ধার্মিক ব্যাক্তি হিসেবে সুবিদিত ছিলেন। কথিত আছে, তিনি প্রতি সপ্তাহে একবার সম্পূর্ণ কুরআন কারীম খতম করতেন। ওমর একজন শিক্ষক হিসেবে অতি সাধারণ জীবনযাপন করতেন। তিনি শিক্ষাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন সানুসির প্রবল সুফী অনুশাসন চালিত স্কুলে।[২] তিনি জীবনে নির্বিশেষ দুঃখ ও দুর্দশার মুখোমুখি হয়েছিলেন। তাঁর ছিল গভীর প্রজ্ঞা ও সাহস, যা তাঁর জীবদ্দশাতেই সুস্পষ্ট প্রতীয়মান ছিল। দক্ষতা অর্জন এবং অনুসরণ করার জন্য তিনি ছিলেন তরুণদের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ।

মরুসিংহ নামকরণের পেছনের ইতিহাস

ওমর মুখতার অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে বর্বর ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে জিহাদে লিপ্ত হয়ে জনগণ, তাদের সম্পদ এবং সম্মান রক্ষা করার মাধ্যমে ইতিহাসের পাতায় তাঁর নাম অঙ্কিত করেন। বর্ণিত আছে, আমাদের বীর ওমর ‘আসাদ আল-সাহারা- ‘মরু সিংহ’ উপাধি পেয়েছিলেন একজন তরুণ হিসেবে সুদানের পথে তার ক্কাফেলা নিয়ে ভ্রমণ করার সময়। এই যাত্রা ছিল বিপদের আশঙ্কায় পরিপূর্ণ। কারণ এটি ছিল একটি ভয়ঙ্কর সিংহের গমনপথ। ওমর এই সফরে বিপদজ্জনক সিংহের মুখোমুখি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি হাতে শটগান নিয়ে ঘোড়ার পিঠে আরোহন করে সিংহের পিছু নিলেন এবং এটিকে হত্যা করলেন।[১]

স্বৈরাচারীদের জমি দখল

১৯১১ সালের ঘটনা। ইতালীয়ান দখলদার শক্তি যখন বিচ্ছিন্ন অটোম্যান খলিফাদের কাছ থেকে লিবিয়া দখল করার সিদ্ধান্ত নেয় তখন তার বয়স ছিল প্রায় ৫৩ বছর। ইতালিয়ান ফ্যসিস্ট সরকার বেনিতো মুসোলিনির পরিচালনায় লিবিয়া আক্রমণকে ‘রোমান রিকনকুইস্তা’ নামে অভিহিত করে। যার অর্থ ‘পুনরূদ্ধার করা’। সেসব ভূমির পুনরুদ্ধার করা যা একসময় রোমান শাসনের অধীনে ছিল। ‘রিকনকুইস্তা’ শব্দটির ব্যবহার স্বাভাবিকভাবেই আকর্ষণীয় ছিল। এটা ইতিহাসে নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত ব্যাপকভাবে বিস্‌তৃতি লাভ করে। যার রেশ ধরে ক্রুসেডের বিশাল অংশ জয় করার উদ্দেশ্যে খিষ্টানরা মুসলিমদের স্পেন আক্রমণ করে, অবশেষে তারা সফল হয়।

ওমর তাদের জমি ভোগ দখলের কারণে ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন ছিলেন। যা তাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক এবং সম্পূর্ণ অমানবিকভাবে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তিনি ঘোষণা করেন, এমন অবিচারকে প্রতিরোধ করা তাদের আল্লাহ্‌ প্রদত্ত অধিকার যেহেতু তিনি তাদের বিজয়কে প্রত্যাখান করেছিলেন। এই ঘটনা ইতালীয় ঔপনিবেশিক সেনাবাহিনী এবং ওমর মুখতারের নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনীর মধ্যে সিরিজ যুদ্ধের সূচনা করে।

সিংহের প্রতিরোধ

তাঁর গেরিলা যুদ্ধের দক্ষতা, শক্তিমত্তা, সাহস এবং উদ্দীপনার কারণে তার বাহিনী সেই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সৈন্যবাহিনীর একটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। অপরদিকে তার বিপরীতে ইতালিয়ানদের উৎকৃষ্ট এবং অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র এবং তাঁর অর্ধেক বয়সী পুরুষসৈন্য লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ইতালিয়ান ট্যাঙ্ক এবং এরোপ্লেনের বিরুদ্ধে ওমরের সক্রিয় অশ্বারোহী যোদ্ধার সংখ্যা ছিল মাত্র ১০০০ থেকে ৩০০০। এদের মধ্যে অধিকাংশই হালকা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ছিল। যাদের কাজ ছিল প্রায় প্রতিদিনই মুসোলিনের সশস্ত্র বাহিনীকে পরাস্ত করা। তারা এক বছরে ২৫০টিরও বেশী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল। এটিকে প্রতিরোধ করার জন্য নাগরিকদেরকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে ইতালিয়ান ফ্যাসিষ্ট সরকার ‘কনসেন্ট্রেশান ক্যাম্প’ গঠন করে। ১৯৩০ সালে ইতালিয়ান সরকার ১ লাখ বেদুইন পুরুষ, মহিলা এবং ছেলেমেয়েকে মরুভূমির ক্যম্পে একত্রিত করে- যা ছিল সেই সময়ে সেরিনাইকার আদিবাসী জনসংখ্যার অর্ধেক। এটা ছিল অনেকটা বর্তমান সময়ে ফিলিস্তিনিদের সাথে যুদ্ধের জন্য ইসরায়েলদের অভিগমনের মতই। ইতালিয়ানরা যুদ্ধে যতবার ক্ষতিগ্রস্ত হত, জনগণের উপর আরও বেশি কঠোর শাস্তির নিপীড়ন চালাত।[৩]

২০ বছর পর তিনি অনাকাঙ্খিত ইউরোপীয় হানাদার বাহিনীর প্রতিরোধ করতে যেয়ে কঠিন পরাজয় বরণ করেন। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু তাআলা জান্নাতে উমরের মর্যাদা উন্নীত করতে চেয়েছিলেন (ইনশা আল্লাহ্‌) এবং পার্থিব জীবনে তার বীরত্বপূর্ণ পদমর্যাদাকে অমর করে রাখেন। ওমর ১৯৩১ সালে ইতালিয়ান ঔপনিবেশিক বাহিনী দ্বারা গ্রেপ্তার এবং আহত হন। বন্দী অবস্থায় ওমর প্রতিরোধ তুলে নেওয়ার জন্য ইতালীয়ান সরকারের কাছ থেকে লোভনীয় প্রস্তাব পান। কিন্তু তিনি এর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ছিলেন প্রতিরোধ স্থগিত করবেন না।

যতক্ষন পর্যন্ত না আমি দুই সর্বোচ্চ স্তরের মর্যাদার (শহীদ অথবা বিজয়) যে কোন একটি লাভ করব, ততক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাব এবং আমি আল্লাহর নামে শপথ করছি যিনি অন্তর্যামী , এই মূহুর্তে যদি আমার হাত বাঁধা না থাকত তাহলে আমি খালি হাতেই তোমাদের উপর ঝাপিয়ে পড়তাম।[৪]

ফাসিতে ঝুলানোর সময় তাকে বলা হল, সে ইচ্ছা করলে তার সর্বশেষ যে কোন কথাই বলতে পারে। তিনি তার প্রতিক্রিয়ায় উচ্চারণ করলেন কুরাআনের আয়াত:

 নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহরই এবং আল্লাহর কাছেই ফিরে যাবো।

ওমর মুখতারের শেষ পরিণতি স্বচক্ষে দেখার জন্য বিশ হাজার কনসেন্ট্রেশান ক্যাম্পের বন্দী এবং সিরেনাইকা নাগরিকদের জোরপুর্বক বাধ্য করা হয়েছিল।

বিখ্যাত উক্তি

ওমর মুখতার তার বেশ কয়েকটি উক্তির জন্য বিখ্যাত। যা তার চরিত্রের নির্ভীক, দু:সাহসী এবং সাহসিকতাপূর্ণ  দিকটি ফুটিয়ে তোলে। তার অন্যতম স্মরণীয় এবং অনুপ্রেরণামূলক উক্তি হচ্ছে:

আমরা এক আল্লাহ ছাড়া আর কারও কাছে আত্মসমর্পণ করি না। আমরা হয় বিজয় লাভ করি, না হয় শাহাদাত বরণ করি।

ওমর মুখতার ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামের মূলনীতি ধারণ করার জন্যও সুবিদিত ছিলেন। একবার এক ঘটনা ঘটেছিল। ওমর মুখতার দুজন জীবিত ইতালিয়ান বন্দীকে নিরাপত্তা দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, “আমরা বন্দীদেরকে হত্যা করি না”। তার সহযোদ্ধা বলল, “তারা আমাদের সাথে এমন আচরণ করেছে”। যার জবাবে তিনি এই মহান বানী উচ্চারণ করেছিলেন,

তারা আমাদের শিক্ষক নয়।

প্রতিরোধের প্রতীক

প্রকৃতপক্ষে, আজকের দিনের চরম মূহুর্তে ওমর মুখতার মুসলিম বিশ্বে প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে স্বীকৃত। কারণ তিনি জনগণের উপর অবিচার, স্বৈরশাসন, নিপীড়ন চালানো এবং ভূমিতে ছড়িয়ে পড়ার পর শান্তভাবে বসেছিলেন না বরং সাহসিকতার সাথে আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করার জন্য রুখে দাঁড়িয়েছিলেন এবং পবিত্র কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াত উদাহরণ হিসেবে পেশ করেছিলেন:

 ছোট দল বিরাট দলের মোকাবেলায় জয়ী হয়েছে আল্লাহর হুকুমে। আর যারা ধৈর্য্যশীল আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন। [সূরাহ আল-বাক্কারাহ: ২৪৯]

এই আয়াতের বিশ্লেষণ করে বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ সাইয়্যেদ কুতুব বলেন,

“নিশ্চিতভাবে তাদের ইমান ছিল এবং তাদের নেতার প্রতি আস্থা ছিল, কিন্তু এই পরিস্থিতির কঠিন বাস্তবতা হল তাদেরকে বলা হয়েছে তাদের ইমান দুর্বল, এবং তাদের ইমান পরীক্ষা করা হবে। তাদের অদৃশ্য ইমানের শক্তি কি বিজয় লাভ করবে? তাদের রবের প্রতি তাদের ইমান কত শক্তিশালী ছিল এবং তারা কি সক্ষম এই ইমানী শক্তি তাদের কাজে লাগিয়ে বিজয় লাভ করতে পারবে? এই চুড়ান্ত মূহুর্তে প্রকৃত বিশ্বাসীদের একটি ছোট দল তাদের ইমান প্রকাশ করতে দাঁড়িয়ে গেল।”

বিশ্বাসীদের অন্তরে এই দিকগুলো থাকা জরুরী। বিশ্বাসীরা সর্বদাই অবিশ্বাসীদের চেয়ে সংখ্যায় কম হয়ে থাকে। আল্লাহর অনুগ্রহ এবং সন্তুষ্টি লাভের জন্য তাদের শত্রুদের তুলনায় অনেক বেশী আত্মত্যাগ এবং কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। কিন্তু তারা জয়লাভ করে কারণ তারা সর্বশক্তিমানের কাছ থেকে শক্তি অর্জন করে এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার প্রতি তাদের বিশ্বাস থাকে দৃঢ়। বিশ্বাসীরা অবগত থাকে যে, তাদের বিজয় পুরস্কার স্বরূপ যা তাদের রবের কাছ থেকে আসে ধৈর্য এবং অধ্যাবসায়ের বিনিময়ে।”[৫]

এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, তরুণ মুসলিমদের আস্থা অর্জন করার জন্য এইসব মহান ব্যক্তিদের জীবন এবং চিন্তাভাবনা পুনারোলচনা করা উচিৎ। শত্রুদের কবল থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। উম্মাহকে স্থায়ী সাম্রাজ্যবাদ এবং ঔপনিবেশিকতার খপ্পর থেকে মুক্ত করতে ন্যায়বিচারের ধারক হতে হবে এবং অপশক্তির বিরুদ্ধে  সত্য বলার সৎ সাহস থাকতে হবে। যারা কিছু মুসলিমকে শান্তিবাদী এবং কাউকে সহিংস হিসেবে চিত্রিত করে সাধাসিধে মুসলিমদের বিভক্ত করে তাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া প্রয়োজন যে, ওমর মুখতার প্রকৃতপক্ষে একজন সুফি ছিলেন। তিনি সেই গ্রুপের অংশই ছিলেন যারা আজকাল নিজেদেরকে শান্তিবাদী হিসেবে উপস্থাপন করে এবং পশ্চিমা নেতৃত্বের সাথে নিজেদেরকে মানিয়ে নিয়েছে।

সমসাময়িক সময়ে যারা সুফিবাদী বা শান্তির পোশাক পরিধান করে অপকর্ম করে যেমন মিশরের স্বৈরশাসক সিসি বা চেচিনিয়ার রমযান কাদিরভ এবং এদের মত অন্যান্য অপরাধীদেরকে কুকর্মে সহযোগিতা করা বা তাদের দুস্কৃতিকে আড়াল করা আমাদের উচিৎ নয়। এরা আমাদের সামনে সুফিদেরকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে যে, তাদের ঐতিহ্যই হল সর্বদা যুদ্ধ করা। বরং তারা (তাদের কথা এবং কাজ দ্বারা) নিজেদের এবং সম্প্রদায়কে আগ্রাসন এবং নিপীড়ন থেকে রক্ষা করে।

তিনি ছিলেন এমনই একজন ব্যাক্তি যখন অন্যরা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে বা দখলদারদের কাছে আত্মসমর্পন করে তখন তিনি তার বিশ্বাসে অটল ছিলেন। ওমরের হৃদয়ে সর্বশক্তিমানের উপর বিশ্বাস ছিল গভীরভাবে প্রোথিত। তিনি শুধু কুরআন মুখস্থই করেননি এর উপর আমলও করেছেন। তিনি কুরআন ছুঁয়ে আল্লাহর নামে ভূমি দখলদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ না করার দৃঢ় সংকল্প করেন।

আমরা আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলার কাছে দুআ করি, আল্লাহ্‌ ওমর মুখতার (রহিমাহুল্লাহ) এবং যারা অন্যায়ভাবে নিহত হয়েছেন তাদের সবাইকে জান্নাতুল ফিরদাউসে দাখিল করুন। তিনি তার জনসাধারণের জন্য দুনিয়া এবং আখিরাতে অজস্র কল্যাণ বয়ে আনেন।


তথ্যসূত্র ও গ্রন্থাবলি

[১] Politics of Convenience! Upset the Balance of Power, by Go Pal.
[২] The Making of Modern Libya: State Formation, Colonization and Resistance, 1830-1932, by Ali Abdullatif Ahmida.
[৩] Politics of Convenience! Upset the Balance of Power, by Go Pal.
[৪] Omar Al-Mukhtar: Italian Reconquest of Libya (1986), by Enzo Santarelli, Giorgio Rochat, Romain Rainero and Luigi Goglia, as translated by John Gilbert.
[৫] ফি যিলাল আল-কুরআন  (সূরাহ আল বাকারা)


মূলঃ Islam21c
অনুবাদঃ তানজিলা শারমিন, মুসলিম মিডিয়া