৪২তম পর্ব – একটি সুন্নাহকে বাঁচাবো বলে – সিওয়াক – শায়খ আতিক উল্লাহ


সিওয়াক

সিওয়াক মানে মিসওয়াক করা একটি চমৎকার সুন্নাত। এটা এমন এক সুন্নাত, আদায় করলে, দ্বীন ও দুনিয়া উভয় দিকেই লাভবান হওয়া যায়। একজন মুমিনের সব কাজই হবে আল্লাহকে রাজি-খুশি করার উদ্দেশ্যে। ব্যক্তিগত লাভালাভের দিকে তাকিয়ে নয়।
ইসলাম মানুষের সার্বিক কল্যাণের দিকে নযর রাখে। ব্যক্তি ও সমাজ উভয়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই ইসলাম বেশি আগ্রহী। ইসলামের প্রতিটি বিধান পর্যালোচনা করলেই দেখা যায়, কত সূক্ষèভাবে মানুষের সুযোগ-সুবিধের দিকে নযর রাখা হয়েছে!
ইসলাম শুধু নামায-রোযা-জিহাদ-খিলাফাহ নিয়েই ভাবে না, বান্দার ব্যক্তিগত আরাম-সুবিধা নিয়েও ভাবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি ইসলাম অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। পবিত্রতার সম্পর্ক ঈমানের সাথে। ইবাদতের সাথে। পবিত্রতা-পরিচ্ছন্নতা ছাড়া কোনও ইবাদতই গ্রহনযোগ্য হয় না।
আমাদের নবীজি সা.ও পবিত্রতা-পরিচ্ছন্নতার প্রতি সবিশেষ গুরুত্ব দিতেন। মুখের প্রতি ছিল নবীজির বাড়তি নযর। তিনি নিয়মিত দাঁতের যতœ নিতেন। মিসওয়াক করতেন। এমনকি মৃত্যুশয্যায় শায়িত অবস্থায়ও মিসওয়াক করেছেন:
لَوْلَا أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لأَمَرْتُهُمْ بِالسِّوَاكِ عِنْدَ كُلِّ صَلاةٍ
যদি আমার উম্মতের কষ্টের আশংকা না থাকতো, তাহলে আমি প্রতি নামাযের সময় তাদেরকে মিসওয়াক করার নির্দেশ দিয়ে দিতাম (বুখারী-মুসলিম)।

আরেক হাদীসে আছে: প্রতিটি ওজুর সময় মিসওয়াকের নির্দেশ দিয়ে দিতাম।
নবীজি আরো বলেছেন:
السِّوَاكُ مَطْهَرَةٌ لِلْفَمِ مَرْضَاةٌ لِلرَّبِّ
মিসওয়াক হলো মুখের পবিত্রতা ও আল্লাহর সন্তুষ্টির মাধ্যম (বুখারী)।

কী চমৎকার একটা সুন্নাত। নিজের লাভ। অন্যেরও লাভ। অন্যরা আমার মুখের কারনে কষ্ট পাবে না। ফিরিশতারা কষ্ট পাবেন না। মনমেজাযও ফুরফুরে থাকে। ইবাদতে বাড়তি মনোযোগ আছে।

কারো কারো মনে একটা হাস্যোদ্দীপক কৌতূহল জাগে:
-মিসওয়াক বোধ হয় শুধু পুরুষের জন্যে?
-জ্বি না, মিসওয়াক সবার জন্যেই সুন্নাত। নারী-পুরুষে কোনও ভেদাভেদ নেই, এই সুন্নাতের ক্ষেত্রে।