৫১তম পর্ব – একটি সুন্নাহকে বাঁচাবো বলে – প্রারম্ভিকী – শায়খ আতিক উল্লাহ


প্রারম্ভিকী

সালাত কী? সালাত হলো রব ও বান্দার মাঝে সেতুবন্ধন। সালাতে দাঁড়িয়ে আমরা মূলত আল্লাহর কাছেই হাজিরা দেই। সব সময় হয়তো মনের ভাব ও অনুভূতি এক থাকে না, কিন্তু একটু তলিয়ে দেখলে অবশ্যই ভিন্ন এক ভাললাগা জন্ম নেয়:
-আমি আমার রবের সামনে দাঁড়িয়েছি!

আল্লাহ তা‘আলার সামনে দাঁড়ানোর কিছু প্রাকপ্রস্তুতি থাকে। মানসিক সচেতনতা দরকার হয়। যাচ্ছেতাইভাবে ওজু করে হুটহাট সালাতে দাঁড়িয়ে যাওয়া কোনও কাজের কথা নয়। নবীজি সা. শিক্ষা দিয়ে গেছেন, আমরা যেন আল্লাহর মুখোমুখি দাঁড়ানোর আগে নিজেকে একটুখানি হলেও ভব্যসভ্য করে নেই। নিজের ভেতরটাকে সামান্য হলেও পরিচ্ছন্ন করে নেই।

আবু হুরাইরা রা. বলেছেন: নবীজি সা. সালাতের প্রথম তাকবীর বলার পর কেরাত শুরু করার আগে কিছুক্ষণ চুপ থাকতেন, আমি বললাম:
-ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি চুপ থাকেন কেন?
-আমি তখন একটা দু‘আ পড়ি:
اللَّهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ المَشْرِقِ وَالمَغْرِبِ، اللَّهُمَّ نَقِّنِي مِنَ الخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ، اللَّهُمَّ اغْسِلْ خَطَايَايَ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالبَرَدِ
হে আল্লাহ! আমার মাঝে ও পাপের মাঝে পূবপশ্চিমের সমান দূরত্ব সৃষ্টি করে দিন!
ইয়া আল্লাহ! শাদা কাপড়কে ময়লামুক্ত করার মতো আমাকেও পাপমুক্ত করে দিন!
ইয়া আল্লাহ! আমার পাপরাশিকে পানি-বরফ-শিশির দিয়ে ধুয়েমুছে দিন! (বুখারী-মুসলিম)।

মহান রবের সামনে স্বচ্ছ হয়ে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি হিশেবে দু‘আটা সত্যিই অসাধারন। সালাতের পর আবার গুনাহ করবো কি করবো না, সেটা ভিন্ন ব্যাপার! কিন্তু এই মুহূর্তে নিজেকে পাপমুক্ত করে রবের সামনে দাঁড়ানোটাই মুখ্য। উক্ত দু‘আ পড়াটা তারই চমৎকার একটা প্রয়াস! তদুপরি দু‘আটা পড়লে নবীজির একটা সুন্নাতও আদায় হবে! কম কথা! আর দু‘আটার ভাষ্যগুলো সত্যি সত্যি ফলে গেলে বা কবুল হয়ে গেলে, কেমন দাঁড়াবে ব্যাপারটা? উফ! আমি পুরোপুরি পাপমুক্ত-নিষ্কলুষ হয়ে সালাত থেকে বের হলাম! আহ! মুক্তি!

আল্লাহুম্মা! বা‘-ইদ বাইনী ওয়া বাইন খাতা-য়া-য়া কামা বা-‘আদতা বাইনাল মাশরিকি ওয়াল মাগরিব। আল্লাহুম্মা! নাক্কিনী মিনাল খাতা-য়া-য়া কামা ইউনাক্কাস-সাওবুল আবইয়াদু মিনাদ্দানাস। আল্লাহুম্মা! ইগসিল খাতা-য়া-য়া বিলমা-য়ি ওয়াস-সালজি ওয়াল-বারাদ!

সালাতের শুরুতেই এমন একটা ব্রেকথ্রু দু‘আ হলে, বাকী সফরটা কেমন হবে!

বলাবাহুল্য এই দু‘আ পড়া আবশ্যক কিছু নয়, না পড়লেও সালাত হয়ে যাবে। বিভ্রান্তির অবকাশ নেই।