৬৫তম পর্ব – একটি সুন্নাহকে বাঁচাবো বলে – মধু চিকিৎসা – শায়খ আতিক উল্লাহ


নিশ্চিত সুরক্ষা

রাতের আঁধারে নানা বিপদাপদ লুকিয়ে থাকে। ওঁৎ পেতে থাকে অজানিত ভয়। দুষ্টলোকের ভয়, দুষ্ট জ্বিনের ভয়, ক্ষতিকর সরিসৃপের ভয়, হিংস্র জন্তু-জানোয়ারের ভয়। এসব আচানক বিপদ থেকে রক্ষার উপায়?

পেয়ারা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে এর চমৎকার সমাধান দিয়ে গেছেন। উম্মতকে এসব আচম্বিত আপদ থেকে বাঁচাতে ফর্মুলা বাতলে দিয়েছেন।

আল্লাহর কাছে আশ্রয় গ্রহণই হলো অব্যর্থ ‘পথ্য’। তিনি সবকিছুর স্রষ্টা, একমাত্র তিনিই পারেন তার সৃষ্টিকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে। এক লোক এসে নবীজিকে বললো:
-গতরাতে আমাকে বিচ্ছু দংশন করেছে!
-তুমি যদি সন্ধ্যায় দু‘আটা পড়ে নিতে, তাহলে বিচ্ছুর দংশন তোমার কোনও ক্ষতি করতে পারতো না!
-কোন দু‘আ?
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ ‘কালিমাসমূহ (বাক্য)-এর মাধ্যমে সৃষ্টিজীবের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি (মুসলিম)।

যে ব্যক্তি প্রতি সন্ধ্যায় দু‘আটা তিনবার পড়ে নিবে, রাতের বেলা বিচ্ছুর বিষ তার শরীরে কোনও ক্রিয়া করতে পারবে না (তিরমিযী)।
আবু হুরায়রা রা. নিয়মিত দু‘আখানা পড়তেন। আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমা কী?
কুরআন কারীম।

দু‘আটা সন্ধ্যাবেলাতেই পড়তে হয়। তবে অপরিচিত কোথাও গেলে, নতুন ঘরে উঠলে, উন্মুক্ত-অরক্ষিত স্থানে অবস্থানকালে, বনে-বাদাড়ে যেতে হলে, দু‘আখানা পড়ে নেয়া ভাল:
-তোমরা কোনও ঘরে গেলে, দু‘আখানা পড়ে নিবে। তাহলে উক্ত স্থান ত্যাগ করা পর্যন্ত কোনও অনিষ্টকর কিছু তার ক্ষতি করতে পারবে না (মুসলিম)।

সুহাইল বিন আবি সালেহ রহ, বলেন:
আমাদের পরিবারের লোকেরা প্রতি রাতে দু‘আটা পড়ে নিত। একরাতে হলো কি, আমাদের এক মেয়েকে বিচ্ছু দংশন করলো, কিন্তু সে কোনও ব্যথা অনুভব করলো না (তিরমিযী)।

যাদের কর্মস্থল থেকে ফিরতে রাত হয়ে যায়, অন্ধকার পথ দিয়ে নীড়ে ফিরতে হয়, তাদের জন্যে এই দু‘আ। যারা দূরপাল্লার যাত্রী, গন্তব্যে নামতে নামতে রাত গভীর হয়ে গেছে, এখন গ্রামের গা-ছমছমে পথ দিয়ে একাকী ঘরে ফিরতে হবে, পথে আছে কবরস্থান, বটগাছ, শ্মশান ইত্যাদি! তাদের করণীয় কি? সেটা বলার অপেক্ষা রাখে?
হাম্মাম (বাথরুম) অনেক দূরে, নির্জন রাতে ওখানে যাওয়ার প্রয়োজন হলে, সাহরী খেতে উঠে একাকী রান্নাঘরে যেতে হলেও কিন্তুক……! অতশত না ভেবে, প্রতি স্বর্ণালি সন্ধ্যায়, দু‘আখানা পড়ার অভ্যেস করে নিলেই হলো! নিয়মিত কিছুদিন পড়লে, ভেতরে ‘অটো-পাইলট মুড’ তৈরী হয়ে যাবে। অর্থাত অজান্তেই প্রতি গোধূলিলগ্নে দু‘আ স্বতোৎসারিত হবে!
তবে দৈনন্দিন জীবেনর দু‘আগুলোকে ‘অটো-পাইলট মুডে না পড়ে, অর্থের দিকে খেয়াল করে পড়লে, প্রভাবটা বেশি ক্রীয়াশীল হওয়ার সম্ভাবনা! কারণ আমি কী দু‘আ করছি, সেটা যদি আমার জানা থাকে, আত্মবিশ্বাসের ‘পারদ’টা বেড়ে যাবে না!

(হাদীসগুলোর ভাবটা নেয়া হয়েছে, তরজমা নয়)

আউযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তা-ম্মা-তি মিন শাররি মা- খলাকা!