৬৬তম পর্ব – একটি সুন্নাহকে বাঁচাবো বলে – চাঁদমামার দু‘আ – শায়খ আতিক উল্লাহ


চাঁদমামার দু‘আ

পৃথিবীর যাবতীয় বস্তুই আল্লাহর ইবাদত করে। যে যার মতো করে। এটা আল্লাহ তা‘আলাই বলেছেন:
وَإِنْ مِنْ شَيْءٍ إِلاَّ يُسَبِّحُ بِحَمْدِهِ وَلَكِنْ لاَ تَفْقَهُونَ تَسْبِيحَهُمْ
সবকিছুই তাঁর প্রশংসায় তাসবীহ পাঠ করে। কিন্তু তোমরা তাদের তাসবীহ বুঝতে পারো না (ইসরা ৪৪)।

নবীজি বিষয়টা ভালোভাবেই জানতেন। এজন্য দেখা গেছে, তিনি অনেক জড়পদার্থের সাথেও ‘জীবের’ মতো আচরণ করেছেন। ওহুদ পাহাড় সম্পর্কে বলেছেন:
-ওহুদ আমাদেরকে ভালোবাসে আমরাও তাকে ভালোবাসি!

নতুন চাঁদকেও নবীজি বেশ গুরুত্ব দিতেন। চাঁদ দেখে চমৎকার একটা দু‘আ পড়তেন:
اللَّهُمَّ أَهْلِلْهُ عَلَيْنَا بِاليُمْنِ وَالإِيمَانِ وَالسَّلاَمَةِ وَالإِسْلاَمِ، رَبِّي وَرَبُّكَ اللَّهُ
ইয়া আল্লাহ! আপনি চাঁদটাকে আমাদের জন্যে সৌভাগ্য ও বিশ্বাস, নিরাপত্তা ও আত্মসমর্পণের ‘সুযোগ’ করে উদিত করুন! আমার ও তোমার প্রতিপালক ‘আল্লাহ’! (তিরমিযী)

এই দু‘আটা পেয়ারা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সারা বছরে সর্বমোট বারোবার পড়তেন। তিনি প্রতিটি মাসকে শুরু করতেন সৌভাগ্য বরকত কামনার মধ্য দিয়ে। দ্বীনের ওপর অটল থাকার তাওফীক কামনার মধ্য দিয়ে।
নবীজি এই দু‘আ পাঠের মাধ্যমে বোঝা যায়, তিনি প্রতি মাসে নতুন চাঁদকে বেশ গুরুত্বে সাথে দেখতেন। চাঁদ দেখা সুন্নাত। প্রতি আরবী মাসে চাঁদ দেখা একটা ইবাদত!
চাঁদ দেখা একটা স্বতন্ত্র ইবাদত হওয়ার পাশাপাশি, ইসলামের অনেক ইবাদতও চাঁদের উদয়ের সাথে সম্পৃক্ত। আশুরার রোজা। রামাদানের রোজা! জিলহজের রোজা। এমনকি প্রতি মাসের আইয়ামে বীয মানে ১৩-১৪-১৫ তারিখের রোজা রাখার জন্যে আরবী তারিখ জানা প্রয়োজন।

সর্বোপরি দু‘আটার অর্থটাও বেশ সুখকর! দুনিয়া-আখেরাত উভয়টাই বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। সুখ-শান্তি কামনা করা হয়েছে। আর দু‘আপাঠের মাধ্যমে নবীজির ‘সুন্নাতের ওপর আমল করার বিষয়টা তো আছেই!

আল্লাহুম্মা! আহিল্লাহু আলাইনা বিল-ইউমনি ওয়াল ঈমা-ন, ওয়াস-সালা-মাতি ওয়াল-ইসলাম। রাব্বী ওয়া রাব্বুকা ‘আল্লাহ’!